আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১২তম আসর। ২৩ জানুয়ারি ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে শেষ হবে বিপিএল।। সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকাÑ এই তিন ভেন্যুতে হবে টুর্নামেন্টের মোট ৩৪টি ম্যাচ। প্রায় মাসব্যাপী হতে যাওয়া এই বিপিএল খেলেই ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেবে বাংলাদেশ। কেননা, বিশ^কাপের আগে আর কোনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নেই টাইগারদের সামনে।
বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে বিপিএলে খেলে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা প্রস্তুতি নিলেও বাড়তি সতর্ক থাকছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কারণ, টানা খেলায় থাকলে ইনজুরির শঙ্কা বাড়ে। তাই বিপিএল চলাকালীন বিশেষ করে তারকা পেসার তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমানদের মতো গুরুত্বপূর্ণ পেসারদের ইনজুরিমুক্ত রাখতে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ারও পরিকল্পনা করছে বিসিবি। পেসার ইনজুরিমুক্ত রাখতে বিসিবি সব সময় ওয়ার্কলোড পলিসি অবলম্বন করে। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে খেলোয়াড়দের প্রতি দলের চাহিদা থাকে। অবশ্য খেলোয়াড়েরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেটের মধ্যে থাকবে বলে বিষয়টি বেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে পেসারদের সুরক্ষার জন্য সতর্ক থাকছে বিসিবি।
আগামী ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় হবে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ। এই বিশ^কাপ সামনে রেখে সম্প্রতি ঘরের বেশ কয়েকটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান, নেদারল্যান্ডস, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও সর্বশেষ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছে টাইগাররা। এর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে হেরেছে তারা। বাকি তিন সিরিজেই জিতেছে বাংলাদেশ। এ বছর ৩০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে তারা। আয়ারল্যান্ড সিরিজ শেষে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক লিটন কুমার দাস বলেছেন, ‘আমি চাইছিলাম দল যেন চাপের পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ জিততে শেখে। প্রথম ম্যাচে আমরা চাপ কাটাতে পারিনি, কিন্তু লড়াই করে সিরিজ জিতেছি। অনেক ইতিবাচক দিক আছে। আমরা ভালো ফিল্ডিং ইউনিট নই, কিন্তু এই সিরিজে কিছু দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছে ফিল্ডাররা। অন্তত ফিল্ডিং বিভাগে উন্নতি দেখিয়েছি। এক বছরে এত টি-টোয়েন্টি খেলার পর আমার মনে হয় খেলোয়াড়রা আরও পরিপক্ব হয়েছে।’
লিটন আরও জানান, চলতি বছর বাংলাদেশ অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের জন্য নিজেদের সেরা কম্বিনেশন খুঁজতে। সেই লক্ষ্যেই সিরিজের শেষ ম্যাচে সব ওপেনারের টপ-ফোরে ব্যবহার করেছে, পাশাপাশি স্পিনার ও পেসারদের মধ্যেও দ্রুত পরিবর্তন এনেছে। লিটনের কণ্ঠে, ‘আমরা প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। ঝুঁকিপূর্ণ কিছু পরিবর্তনও করেছি। যেমনÑ শেষ ওভারটি মোস্তাফিজকে দিয়ে করাইনি, সাইফউদ্দিনকে দিয়েছি। দুই ম্যাচ না খেলে থাকা একজন খেলোয়াড় চাপে কীভাবে বোলিং করে, তা দেখতে চেয়েছি। আমার মনে হয়, দলের প্রায় সব দিকেই আমরা কিছু না কিছু চেষ্টা করেছি। এই দল প্রায় প্রস্তুত পরের বিশ^কাপের জন্য।’ লিটন এখন তাকিয়ে আছেন বিপিএলের দিকে। ব্যাটসম্যানরা যেন বিপিএলেও রানে থাকেন, সেই প্রত্যাশা তার। লিটন বলেন, ‘আমি চাই তারা বিপিএলে রান করুক এবং সেটা বিশ্বকাপেও যেন ধরে রাখতে পারে।’
উল্লেখ, সিলেট পর্ব দিয়ে শুরু হবে এবারের বিপিএল। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে খেলবে সিলেট টাইটানস ও রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। সিলেট পর্ব শেষে বিপিএল যাবে চট্টগ্রামে, এরপর সেখান থেকে ফিরবে ঢাকায়। সূচি অনুযায়ী ১৯ জানুয়ারি হবে এলিমিনেটর, একই দিনে হবে প্রথম কোয়ালিফায়ার। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ২১ জানুয়ারি আর ফাইনাল ২৩ জানুয়ারি। এই ম্যাচগুলো সবই হবে ঢাকার মাঠে। এই পর্বের ম্যাচের জন্য রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে। এবারের বিপিএলে অংশ নিচ্ছে ছয়টি দলÑ ঢাকা ক্যাপিটালস, সিলেট টাইটানস, চট্টগ্রাম রয়্যালস, রংপুর রাইডার্স, রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ও নোয়াখালী এক্সপ্রেস।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন