মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ০২:৪২ এএম

পাকিস্তানে এক বছরে ৪০৫টি সম্মান রক্ষার হত্যাকাণ্ড

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ০২:৪২ এএম

পাকিস্তানে এক বছরে ৪০৫টি সম্মান রক্ষার হত্যাকাণ্ড

‘অনার কিলিং’-এর নামে নারী ও পুরুষকে গুলি করে হত্যার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তান জানিয়েছে, ২০২৪ সালে পাকিস্তানে অন্তত ৪০৫টি সম্মান রক্ষার হত্যাকা- ঘটেছে। এসব হত্যাকা-ে বেশির ভাগ ভিকটিমই নারী। পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ‘অনার কিলিং’-এর নামে এক যুগলকে গুলি করে হত্যার একটি লোমহর্ষক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, অজ্ঞাত পরিচয়ের কয়েকজন ব্যক্তি ওই যুগলকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, ঈদুল আজহার কয়েক দিন আগেই হত্যাকা-টি সংঘটিত হয়েছিল, তবে ভিডিও অনলাইনে ছড়ানোর পরই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে পারিবারিক সম্মতির বিরুদ্ধে বিয়ে করার অপরাধে এক নারী ও এক পুরুষকে গুলি করে হত্যা করার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটিকে ‘সম্মান রক্ষার নামে হত্যাকা-’ বা ‘অনার কিলিং’ হিসেবে চিহ্নিত করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি সোমবার জানিয়েছেন, হত্যাকা-ের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার স্থান ও অভিযুক্তদের শনাক্ত করে। এরপরই গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভাইরাল ভিডিওতে কী দেখা গেছে? ভিডিওটিতে দেখা যায়, মরুভূমির মতো এক নির্জন এলাকায় কিছু পিকআপ ও এসইউভি গাড়ি থেমেছে। যেখান থেকে এক নারী ও এক পুরুষকে নামিয়ে আনা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের ওই জায়গায় আনা হয়েছিল হত্যা করার উদ্দেশ্যে। ভিডিওতে নারীর কণ্ঠও শোনা যায়। যেখানে তিনি একজন পুরুষকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে সাত পা হাঁটো, তারপর আমাকে গুলি করো।’ ওই পুরুষ কয়েক কদম তার পেছনেও হাঁটেন। এরপর ওই নারী তার দিকে ঘুরে দাঁড়ান। এরপর ওই নারীর সঙ্গে থাকা পুরুষ খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করেন। প্রথম দুটি গুলি শরীরে ঢুকে গেলেও ওই নারী দাঁড়িয়েই ছিলেন, কিন্তু তৃতীয় গুলি লাঘার সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর আরও গুলির শব্দ শোনা যায়। ভিডিওতে আরও এক রক্তাক্ত পুরুষকে মাটিতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওই নারীর মৃতদেহের কাছাকাছি পড়ে ছিলেন তিনি। এরপর আরও কয়েকজন পুরুষ এসে উভয় মরদেহের দিকে গুলি ছোড়েন।

একজন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভিডিওতে ওই নারী চিৎকার করেননি বা প্রাণভিক্ষাও চাননি। ব্রাহাভি ভাষায় তিনি বলছিলেন, ‘তুমি আমাকে শুধু গুলি করতে পারো, এর বেশি কিছু না। তবে ‘এর বেশি কিছু না’ বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। রয়টার্স ভিডিওটি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি। মানবাধিকারকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, কর্তৃপক্ষ এসব হত্যাকা- বন্ধে ব্যর্থ হয়েছে। পাকিস্তান ও ভারতের বহু রক্ষণশীল পরিবার এখনো প্রেম বা পারিবারিক মতের বিরুদ্ধে বিয়ে মেনে নেয় না। এ কারণে অনেক দম্পতিকে সম্মান রক্ষার নামে হত্যা করা হয়। বেলুচিস্তানের এই নির্মম হত্যাকা- পাকিস্তানে সম্মান রক্ষার নামে চলমান সহিংসতার ভয়াবহ বাস্তবতাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগতি ভাইরাল ভিডিওর পর ঘটনাটিকে ‘সামাজিক মূল্যবোধ ও মানব মর্যাদার প্রকাশ্য অপমান’ বলে আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগতি নিহতদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এই ধরনের নৃশংসতা কোনো অবস্থায় সহ্য করা হবে না। যারা রাষ্ট্রের মর্যাদা চ্যালেঞ্জ করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার রাখে না।’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহত যুগল ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন, যা তাদের ‘অনার কিলিং’-এর নামে হত্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পাকিস্তানে ‘অনার কিলিং’ বা ‘সম্মান রক্ষার নামে হত্যা’ মূলত সামাজিক ও পারিবারিক রীতিনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে নারী ও পুরুষকে হত্যা করার এই প্রবণতার পেছনে কয়েকটি মূল কারণ রয়েছে: বিয়ের ক্ষেত্রে নারীর পছন্দমতো সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক পরিবার ‘অপমান’ হিসেবে দেখে। 

নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে পাকিস্তানে ১৩ ‘জঙ্গি’ নিহত
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনী পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে অন্তত ১৩ জন সন্দেহভাজন ‘জঙ্গিকে’ হত্যা করেছে। পাশাপাশি খাইবার পাখতুনখোয়ার আপার সাউথ ওয়াজিরিস্তান জেলায় পৃথক দুটি ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন দুই এসআইসহ সাত পুলিশ সদস্য। রবিবার সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, খাইবার পাখতুনখোয়ার মালাকান্দ জেলায় চালানো অভিযানে ৯ ‘জঙ্গি’ নিহত ও আরও ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এ অভিযানটি চালানো হয় পুলিশ, লেভিস, কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে। আইএসপিআরের ভাষ্য, গোয়েন্দা সূত্রে জঙ্গিদের অবস্থানের তথ্য পাওয়ার পর মালাকান্দে অভিযান চালানো হয়। এ সময় জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

গুলিবিনিময়ের পর জঙ্গিদের দুটি গোপন আস্তানা ধ্বংস এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। নিহতদের ‘ভারতীয় প্রক্সি’ বলে দাবি করেছে সামরিক বাহিনী। অন্যদিকে, বেলুচিস্তানের কালাত জেলায় ‘ভারতীয় প্রক্সিগোষ্ঠী ফিতনা আল হিন্দুস্তানের’ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। সেখানেও ব্যাপক গুলিবিনিময়ের পর নিহত হয় চার ‘জঙ্গি’। অভিযানে তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া মালিকশাহী এলাকায় একটি ড্রোন হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন এক নারী এবং আহত হন আরেক নারী ও এক কিশোরী। তবে এই ড্রোন হামলার উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এদিকে, আপার সাউথ ওয়াজিরিস্তানের পৃথক দুটি ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন দুই এসআইসহ সাত পুলিশ সদস্য। স্থানীয় প্রশাসন মনে করছে, তাদের অপহরণ করা হয়ে থাকতে পারে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!