বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১২:৫৮ এএম

ক্ষুধার্ত গাজা, নির্বাক বিশ্ব!

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১২:৫৮ এএম

ক্ষুধার্ত গাজা, নির্বাক বিশ্ব!

জীর্ণ শরীর। ৯ বছরের ছোট্ট ছেলে ফাদি জান্ত। শরীরে মাংস বলতে কিছুই নেই। গালগুলো ফুলে গেছে। মাথার চুলগুলো ঝড়ে পড়েছে। চামড়ার নিচে হাড়গোড় স্পষ্ট। মনে হচ্ছে, হাসপাতালের শয্যায় নিঃশব্দে শুয়ে আছে চামড়ায় ঢাকা এক কঙ্কাল। রাফাহর অস্থায়ী একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে ফাদি। শুধু ফাদি নয়, খাদ্য সংকট, বোমা, আর বিশ্ব নিরবতায় জীবনহানির ঝুঁকিতে পড়েছে গাজার শিশুরা। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গাজায় কমপক্ষে ৬০ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২ মার্চ অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে অপুষ্টিতে ৫৭ জন শিশুর মারা গেছে। পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আগামী ১১ মাসে পাঁচ বছরের কম বয়সি প্রায় ৭১ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ ছাড়া গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষ অনাহারে আছে বলেও জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ইসরায়েলের অবরোধের ফলে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা তীব্র অপুষ্টির সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে, বিশেষ করে শিশুরা অনাহারের ঝুঁকিতে রয়েছে। গাজার দক্ষিণে খান ইউনিসের একটি শিশু অপুষ্টিতে মারা গেছে। উত্তরে ৪০ দিন বয়সি আরও একটি শিশু অপুষ্টির কারণে মারা গেছে। ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধের কারণে গাজায় ক্ষুধায় মারা যাওয়ার ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুর্ভিক্ষে সংকট আরও খারাপ হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে, শুধু রোববারেই অপুষ্টিতে কমপক্ষে ১৯ জন মারা গেছেন। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলছে, গাজার ৯০ হাজার নারী ও শিশুর অপুষ্টির জন্য জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন। গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে তার ১৪ বছর বয়সি ছেলের বিছানার পাশে বসে থাকা অবস্থায় উম্মে মুসাব আল দিবস কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ‘আমার ছেলের ওজন এখন ১০ কেজিরও কম। আগে তার ওজন ছিল ৪০ কেজি। সে আমাকে ও তার বোনদের কাজে সাহায্য করত। গাজা উপত্যকার বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফায় সম্প্রতি অপুষ্টির ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসা সরবরাহের তীব্র ঘাটতির কারণে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রধান মোয়াতাজ হারার আল জাজিরাকে বলেন, ‘সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বেশি ভাগ রোগী আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে না, বরং তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছেন।

এমনকি আমাদের কিছু চিকিৎসাকর্মীও খাবারের অভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন। ইসরায়েলকে এখনই যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডাসহ ২৮টি দেশ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। তবে আল জাজিরাসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশের সংখ্যা ২৫ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গাজায় চলমান ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ ২১ মাসের বেশি সময় পার হতে চলেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখ-টির ২০ লাখের বেশি বাসিন্দার মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল বালাহ শহরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কর্মীদের বাসস্থান ও প্রধান গুদামে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে, জানিয়েছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের সংস্থাটি জানায়, গত সোমবারের এ ঘটনায় সংস্থার কর্মীদের জীবন হুমকির মুখে পড়ার পাশাপাশি গাজায় তাদের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এদিন ডব্লিউএইচওর কর্মীদের বাসভবনে টানা তিন দফা হামলা চালানো হয়। বিমান হামলায় বাসস্থান ও গুদামে আগুন ধরে যায় এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে সংস্থাটির কর্মী, তাদের শিশুসহ পরিবার বিপদগ্রস্ত হয় বলে সংস্থাটির বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স। ডব্লিউএইচও বলেছে, ‘ইসরায়েলি বাহিনী ওই প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখ-ের একটি চার্চে সম্প্রতি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ ঘটনায় ‘হতবাক’ হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ফোনও করেন তিনি। গতকাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আনাদোলু। বার্তা সংস্থাটি বলছে, সিরিয়ায় বোমা হামলা ও গাজার একটি ক্যাথলিক গির্জায় ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘হতবাক’ হয়ে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। উভয় ঘটনার পর ট্রাম্প তৎক্ষণাৎ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করেন বলেও জানান হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট।গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল-বালাহে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) অভিযানের সময় নিজেদের বিস্ফোরণেই তাদের এক সেনা নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জনিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল। নিহত ১৯ বছর বয়সি সেনার নাম স্টাফ সার্জেন্ট অমিত কোহেন। হোলনের গোলানি ব্রিগেডের ১৩তম ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন তিনি। সোমবার দক্ষিণ গাজায় আইডিএফের বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় তার।আইডিএফের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, খান ইউনিসে একটি ভবনের ভিতরে ইসরায়েলি সামরিক গোলাবারুদের বিস্ফোরণে কোহেন নিহত হয়েছেন। আইডিএফ জানিয়েছে, বিস্ফোরণে ১৩তম ব্যাটালিয়নের একজন কর্মকর্তাও গুরুতর আহত হন।

এদিকে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস বলছে, তারা গাজায় দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে এবং এই ভয়াবহ যুদ্ধ বন্ধ করতে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছে এবং মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, গাজার চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা খাবারের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
ইসরাইল মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি ভূখ-ে হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় ১৫ জন নিহত ও আরো অনেকেই আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!