রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫, ০১:২০ এএম

বীভৎস নির্যাতন ও গোয়েন্দা তকমা দিয়ে ১৫ লাখ আফগানকে ফেরত ইরানের

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫, ০১:২০ এএম

বীভৎস নির্যাতন ও গোয়েন্দা তকমা দিয়ে ১৫ লাখ আফগানকে ফেরত ইরানের

পিঠে জমে থাকা গভীর কালশিটে দাগ। দেখলেই আলি আহমাদের চোখে জল চলে আসে। তিনি বলেন, ইরানি পুলিশ তাকে আটক করে এবং গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ তোলে। ‘ওরা আমাদের পশুর মতো পিটিয়েছেÑ পানির পাইপ, হোসপাইপ, কাঠ দিয়ে মারধর করেছে।’ এই সাক্ষাৎকারটি জুলাই মাসের শুরুতে ইসলাম কালা সীমান্তে বিবিসিকে দেওয়া। তখন তিনি আফগানিস্তানে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার পরিচয় গোপন রাখতে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। ইরান দাবি করেছে, তারা চার মিলিয়নেরও বেশি আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। যারা সংঘাত থেকে পালিয়ে এসেছে। তবে গত কয়েক মাস ধরে দেশটি জোরালোভাবে তাদের প্রত্যাবাসন শুরু করেছে। মার্চে যারা বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি, তাদের জুলাইয়ের মধ্যে স্বেচ্ছায় চলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু জুনে ইসরায়েলের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধের পর ‘জাতীয় নিরাপত্তা’র অজুহাতে লাখ লাখ আফগানকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো হয়। জাতিসংঘের তথ্য মতে, জুলাইয়ের শুরুতে দৈনিক প্রত্যাবাসনের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারে পৌঁছায়। যার বেশির ভাগই ছিল দীর্ঘ ও কষ্টকর যাত্রার পর। আলি আহমাদ জানান, ইরানি কর্মকর্তারা তার মোবাইল ফোন ও সব টাকা কেড়ে নেয়। এক টাকাও হাতে রাখেনি, ফেরার পথে খরচ করার মতো কিছুই ছিল না। তিনি আড়াই বছর ধরে ইরানে বসবাস করছিলেন তিনি। সম্প্রতি ইরানে আফগান অভিবাসীদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয়েছে, যেগুলোর বেশির ভাগই রাষ্ট্রীয় ও পুলিশ সূত্রভিত্তিক ইরানি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আফগান বলেন, ‘আমরা যেখানেই যাই, সবার চোখে গুপ্তচর। আমাদের বলা হয়, তোমরা ইসরায়েলের হয়ে কাজ করো। ঘরে বসেই ড্রোন বানাও। আমরা আতঙ্কে থাকি।’ আফগানিস্তানবিষয়ক বিশ্লেষক বারনেট রুবিন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি মনে করেন, ‘তেহরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ব্যর্থতায় বলির পাঁঠা খুঁজছে।’ তিনি বলেন, ‘ইরানের নিরাপত্তাব্যবস্থা দুর্বল। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা এরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা নিয়ে সরকার খুব বিব্রত। তাই কাউকে দায়ী করতেই হবে।’ অনেকে বলছেন, এই গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এলে ইরান সরকারের আফগানদের বহিষ্কারের পরিকল্পনাকে বৈধতা দেওয়ার কৌশল। বিবিসি ইরান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো জবাব পায়নি। তবে ১৮ জুলাই রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানায়, ‘মানবাধিকারের প্রতি সম্মান রেখে এবং শান্তিপূর্ণভাবে আফগান শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনই সরকারের লক্ষ্য।’ আবদুল্লাহ রেজাই (নাম পরিবর্তিত) একই রকম অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন বিবিসির সঙ্গে ইসলাম কালা সীমান্তে। তিনি জানান, আটক অবস্থায় প্রায় ১৫ জন ইরানি পুলিশ তাকে এবং আরো অনেক আফগানকে নির্যাতন করে। তিনি বলেন, ‘তারা আমার ভিসা ও পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলে এবং অনেক মারধর করে। তারা বলে, ‘তুমি গুপ্তচর।’ আমি তখন মাত্র দুই মাস হলো ইরানে এসেছি, বৈধ ভিসা নিয়েই।’ তিনি আরো বলেন, ‘তারা আমাদের প্লাস্টিকের লাঠি দিয়ে মারছিল আর বলছিল, ‘তোমরা গুপ্তচর, আমাদের দেশ নষ্ট করছ।’ ওই চার দিনের অভিজ্ঞতা যেন চার বছরের সমান ছিল। আমাদের ঠিকমতো খাবার পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।’ ১৩ জুন যেদিন ইসরায়েল ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়, সেদিনই ইরান সরকার জনগণকে ‘অসাধারণ’ কার্যকলাপ যেমন ভ্যানে অস্ত্র পরিবহনের মতো বিষয় পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেয়। 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!