পাকিস্তানে বেলুচিস্তানগামী যাত্রীবাহী ‘জাফর এক্সপ্রেস’ ট্রেনে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে বেলুচিস্তান সীমান্তের সুলতানকোট এলাকায় রেললাইনে পুঁতে রাখা আইইডি (বিস্ফোরক) বিস্ফোরণে ট্রেনটির অন্তত ছয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে অন্তত ৭ যাত্রী আহত হয়েছেন। খবর ডনের। শিকারপুরের ডেপুটি কমিশনার শাকিল আবরো জানান, সকালে সুলতানকোট রেলস্টেশন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে রেললাইন লক্ষ্য করে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে চারজনকে কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালে এবং বাকি তিনজনকে শিকারপুর সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুক্কুর বিভাগের পরিবহন কর্মকর্তা মোহসিন আলি সিয়াল জানান, ট্রেনের যাত্রীদের নিরাপদে কাছাকাছি স্টেশনে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। এদিকে সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং প্রাদেশিক পুলিশপ্রধানের কাছ থেকে বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছেন। তিনি লারকানা কমিশনারকে আহত যাত্রীদের দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে বেলুচ বিদ্রোহী সংগঠন বেলুচ রিপাবলিক গার্ডস (বিআরজি) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। বিআরজির দাবি, ট্রেনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যরা থাকায় সেটিকে ‘লক্ষ্য’ করে হামলা চালানো হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের খারান এলাকায় অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা এক আদালতে বেপারোয়া হামলা চালানোর পর বিচারককে অপহরণ করে নিয়ে গেছে এবং আদালত ভবনে অগ্নিসংযোগ করেছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গত শনিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খারান শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মাসকান কালাত এলাকায় ওই আদালত ভবনে হামলা চালায় একদল সশস্ত্র ব্যক্তি। বিচারক তখন মামলার শুনানি পরিচালনা করছিলেন। হামলাকারীরা বিচারক মুহাম্মদ জানসহ আদালতের কর্মীদের জিম্মি করে, আদালতের নথি নষ্ট করে এবং দপ্তরের আসবাবপত্রসহ সেখানে থাকা সবকিছু ভাঙচুর করে। বেলুচিস্তানের রাখশান অঞ্চল পুলিশের উপ-মহাপরিচালক (ডিআইজি) আবদুল হাই আমির বালুচ ডনকে বলেন, ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আদালতে প্রবেশ করে সহিংস হামলা চালায় এবং কোর্টরুমসহ ভবনের অন্যান্য অংশে আগুন ধরিয়ে দেয়।’ আগুনে আদালত ভবনটি পুড়ে যায় আর গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও ধ্বংস হয়।
পালিয়ে যাওয়ার সময় হামলাকারীরা বিচারককে বন্দুকের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ‘হামলাকারীরা বিচারকের সরকারি গাড়িসহ দুটি গাড়ি নিয়ে পালিয়েছে। অপর গাড়িটি একজন আইনজীবীর,’ জানান ডিআইজি বালুচ। ঘটনার খবর পেয়ে সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনী, বিশেষ করে ফ্রন্টিয়ার কোরের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকা ঘিরে ফেলে এবং হামলাকারীদের সন্ধানে ও অপহৃত বিচারককে উদ্ধারের লক্ষ্যে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি বলে জানিয়েছে ডন।