ঢাকা বুধবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৫

বিসিবি নির্বাচনে সরকার হস্তক্ষেপ করেছে

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৫, ০৫:০৭ এএম

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনে সরকারি হস্তক্ষেপ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছিলেন তামিম ইকবালসহ বিএনপিপন্থি পরিচালক প্রার্থীরা। এবার বিসিবি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। বিসিবির নির্বাচনে বর্তমান সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এই হস্তক্ষেপের প্রতিটি ঘটনার প্রমাণ আছে বলেও দাবি করেছেন দেশের সাবেক এই ফুটবল অধিনায়ক।

বিতর্কের মধ্যেই গত সোমবার বিসিবি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। নতুন বোর্ডের প্রথম সভাও হয়ে গেছে সোমবার রাতেই। পরে মুলতুবি হওয়া যে সভা মঙ্গলবার দুপুরে শুরু হয়েছে আবার। নির্বাচন ঘিরে নানা অভিযোগের ঝড় উঠেছে বেশ কদিন ধরেই। নির্বাচনে ‘সরকারে নগ্ন হস্তক্ষেপ’, নানা রকম ‘অনিয়ম ও স্বেচ্ছারিতার’ অভিযোগ তুলে সরে দাঁড়ান মোট ২১ প্রার্থী। নির্বাচনের আগেই পরিচালক পদ পাওয়া নিশ্চিত হয়ে যায় ৯ জনের। ক্লাব ক্যাটাগরির ১২ পরিচালকের লড়াইয়ে শুরুতে ৩০ জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা নেমে আসে ১৫ জনে। ক্রীড়া উপদেষ্টার সাজানো ছকেই নির্বাচন হয়েছেÑ এমন অভিযোগ উঠেছে বিস্তর। গতকাল পল্টনে জিয়া আন্তঃভলিবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী আয়োজনে বিসিবি নির্বাচন নিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে ক্রীড়া উপদেষ্টাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান আমিনুল। তিনি বলেন, ‘আমার প্রধান উদ্বেগ হলো, সরকারি হস্তক্ষেপ এবং ক্রীড়া উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ।

তার হস্তক্ষেপের প্রতিটি ঘটনার প্রমাণ রয়েছে। আমি শুনে অবাক হয়েছি যে, ক্রীড়া উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে কাউন্সিলরদের হুমকি দিয়েছেন, নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। অনেক কাউন্সিলর আমাকে ফোন করে বলেছেন যে, তাদের ডেকে নিয়ে এভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে।’ আমিনুল ইসলাম বুলবুল বেশ কিছুদিন আগেই সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ক্রীড়া উপদেষ্টা চাইলে তিনি আবার বিসিবি সভাপতির দায়িত্বে থাকতে চান। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজেও বলেছিলেন, বোর্ড সভাপতি হিসেবে তার ব্যক্তিগত পছন্দ বুলবুল। আমিনুল হকও বললেন, বুলবুলকে সভাপতি করতে মরিয়া ছিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। আমিনুলের কণ্ঠে, ‘ক্রীড়া উপদেষ্টার আচরণ অগ্রহণযোগ্য। বিসিবি সমগ্র বাংলাদেশের, এটি কোনো ব্যক্তির সম্পত্তি নয়। ক্রীড়া উপদেষ্টা কার্যত বিসিবিকে তার নিজস্ব ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। তিনি এমনকি বলেছেন, যেকোনো মূল্যে তিনি বুলবুল ভাইকে সভাপতি করবেন।

এই স্বেচ্ছাচারিতা এবং সরাসরি সরকারি হস্তক্ষেপ বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটপ্রেমী মেনে নেবেন বলে আমি মনে করি না।’ দেশের ফুটবল ইতিহাসের সেরা গোলকিপার আমিনুলের মতে, বিসিবি নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়াই চরম বিতর্কিত ছিল। তিনি বলেন, ‘পুরো নির্বাচন বিতর্কের মেঘে ঢাকা। আমরা যারা খেলার সঙ্গে জড়িত, আমি মনে করি না যে এমন একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন মেনে নিতে পারি এবং ভবিষ্যতেও মানব না। জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছে কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য চিঠি পাঠানো থেকে শুরু করে পরবর্তী পদক্ষেপ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে হতাশা ও বঞ্চনার একটি পরিবেশ তৈরি করেছে।’