ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধরতদের মুখ থেকে রুশ সেনারা ফ্রন্ট লাইনে অবিরাম বিদেশি ভাষা শুনতে পাচ্ছে বলে ক্রেমলিন মঙ্গলবার জানিয়েছে। এ ছাড়া তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এ ধরনের যোদ্ধাদের ‘ধ্বংস’ করা হবে। রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, ন্যাটো সামরিক কর্মীরা ইউক্রেনে উপস্থিত রয়েছে এবং তাদের আড়িপাতা পরিষেবাগুলোতে ফ্রন্ট লাইনে বারবার ইংরেজি ও ফরাসি ভাষা শোনা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো বলেছে, তারা ইউক্রেনকে সমর্থন করে, তবে সেখানে কোনো সেনা মোতায়েন করেনি। যদিও মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ইউক্রেনে উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে।
ফ্রান্স ইউক্রেনে কিছু সেনা মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে যে দাবি উঠেছে, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সামরিক বাহিনী বিদেশি ভাষা শুনতে পায়, তারা ফ্রন্ট লাইনে ক্রমাগত বিদেশি ভাষা শুনতে পাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং এই বিদেশিরা সেখানে আছে, আমরা তাদের ধ্বংস করছি। আমাদের সামরিক বাহিনী তাদের কাজ চালিয়ে যাবে। ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলাগুলোকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন ‘ইনডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি অন ইউক্রেন’। সম্প্রতি প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সেনারা পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক মানুষ ও তাদের অবকাঠামো লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জাতিসংঘের সংস্থাটি খেরসন, মাইকোলাইভ ও দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে হামলার ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করেছে। এই এলাকাগুলো সম্মুখ সমরের কাছাকাছি হওয়ায় গত এক বছরে সেখানে ড্রোন হামলার তীব্রতা বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑরুশ ড্রোনগুলো ধারাবাহিকভাবে ঘরবাড়ি, মানবিক সহায়তা বিতরণকেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। একই স্থানে একাধিকবার হামলার ঘটনাও ঘটেছে। রাশিয়া বিভিন্ন ধরনের কম দামি ও ছোট আকারের ক্যামেরা ও গাইডেন্স সিস্টেমযুক্ত ড্রোন ব্যবহার করেছে। এগুলোর কিছু আঘাতের সময় বিস্ফোরিত হয়, আবার কিছু ওপর থেকে বিস্ফোরক ফেলতে পারে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, এ ধরনের হামলায় গত এক বছরে অন্তত ২০০ বেসামরিক মানুষ নিহত এবং প্রায় ২ হাজার জন আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ কমিশন দাবি করেছে, এসব হামলা শুধু হত্যাকা- নয়, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক জনগণকে লক্ষ্যবস্তু করার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে। একই সঙ্গে বেসামরিকদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করার নীতির অংশ হিসেবেও এগুলো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।

