বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৬:৫২ এএম

ইউক্রেন সেনাবাহিনীতে রেকর্ড সংখ্যায় পলায়ন, চরম সংকটে ফ্রন্টলাইন

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৬:৫২ এএম

ইউক্রেন সেনাবাহিনীতে রেকর্ড সংখ্যায় পলায়ন,  চরম সংকটে ফ্রন্টলাইন

রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে ক্লান্ত ও বিপর্যস্ত ইউক্রেন সেনাবাহিনীতে পলায়ন ও অনুপস্থিতির সংকট নজিরবিহীন মাত্রায় পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক এক বছরে রেকর্ড সংখ্যক সেনা দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, যা ফ্রন্টলাইনে জনবল-সংকটকে আরও চরম করেছে।

কিয়েভের ৩৬ বছর বয়সি অফিসকর্মী তিমোফিয় (ছদ্মনাম) দুইবার সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে পালিয়েছেন। আল-জাজিরাকে তিনি জানান, জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে তোলার পর যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, তা ছিল পুরোপুরি আনুষ্ঠানিকতা; বাস্তব যুদ্ধে বাঁচার মতো কোনো প্রস্তুতিই তার ছিল না। প্রশিক্ষকরা অধিকাংশ সময় ব্যয় করতেন পালানো ঠেকাতে, ফলে প্রশিক্ষণের মান ছিল অত্যন্ত নিচু। তিনি অভিযোগ করেন, ‘ওরা জানতই প্রথম আক্রমণেই আমি মারা যাব।’

ইউক্রেন প্রসিকিউটর দপ্তরের তথ্যমতে, ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের পর থেকে প্রায় দুই লাখ ৩৫ হাজার সেনা দায়িত্ব থেকে অনুপস্থিত হয়েছেন এবং ৫৪ হাজার সৈন্য সরাসরি পলায়ন করেছেন। এর বড় অংশই গত এক বছরে ঘটেছে। শুধু ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুপস্থিতি নথিভুক্ত হয়েছে এক লাখ ৭৬ হাজার, আর পলায়ন ২৫ হাজার। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সংখ্যা যুদ্ধের তীব্র চাপ ও মনোবলের ভাঙনকে স্পষ্ট করে।

স্টর্ম ট্রুপসের কমান্ডার ভ্যালেন্টিন মানকো বলেন, প্রতি মাসে ৩০ হাজার নতুন সেনা সংগ্রহ সম্ভব হলেও ফ্রন্টলাইন ধরে রাখতে মাসে অন্তত ৭০ হাজার জনবল প্রয়োজন। অন্যদিকে রাশিয়া নভেম্বরেই পূর্ব ইউক্রেনের প্রায় ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে এবং মার্কিন মধ্যস্থতায় চলা শান্তি–আলোচনাও স্থবির হয়ে আছেÑ ফলে পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন। আইন অনুযায়ী, ইউনিট থেকে ২৪ ঘণ্টা অনুপস্থিত থাকলেই সৈন্যকে পলাতক ঘোষণা করা যায়; শাস্তি সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু অনেকেই মনে করেন, জেল যুদ্ধক্ষেত্রের চেয়ে নিরাপদ। সাবেক জেনারেল ইগর রোমানেনকো জানান, অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে আত্মসমর্পণ বা গ্রেপ্তার হওয়ার পথও বেছে নেন। এই চাপে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে প্রথমবারের মতো পলায়নকারীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এতে প্রায় ৩০ হাজার সেনা শাস্তি ছাড়াই আবার ইউনিটে ফিরে এসেছেন। তবে মনোবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সব পলায়নের কারণ ভয় নয়Ñ কমান্ডারের অবহেলা, ছুটি না পাওয়া, পারিবারিক সমস্যাকে গুরুত্ব না দেওয়া ইত্যাদিও বড় কারণ। এদিকে পলাতকদের ধরতে সেনা-পুলিশের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। আদালতে জমে আছে হাজারো মামলা। জনসমাগমস্থলে ‘কনস্ক্রিপশন প্যাট্রোল’ চালিয়ে তরুণদের নথিপত্র যাচাই করা হচ্ছে। কেউ ঘুষ দিয়ে রেহাই পাচ্ছেন, কেউ আবার যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন বা ট্রাফিক জরিমানা থেকে শনাক্ত হচ্ছেন। পালিয়ে বেঁচে থাকলেও সামাজিকভাবে টিকে থাকতে পারছেন না অনেকে। তিমোফিয় জানালেন, তাকে ‘ভীতু’ বা ‘অদেশপ্রেমিক’ আখ্যা দিচ্ছেন স্বজনেরা; কেউ কেউ সম্পর্কও ছিন্ন করেছেন। যুদ্ধাহত সাবেক সেনা ইয়েভহেন গালাসিয়ক আরও কঠোর মন্তব্য করে বলেন, ‘ওদের ভোটাধিকার বা পেনশনও থাকা উচিত নয়।’

ফ্রন্টলাইনে জনবল সংকট ও মনোবলহীনতার এই বহুমুখী সংকট ইউক্রেনের যুদ্ধপরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!