বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৮:২০ এএম

পুরাতন যন্ত্রপাতি ও জনবল সংকটে আবারও চালু হচ্ছে ঠাকুরগাঁও চিনিকল

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৮:২০ এএম

ঠাকুরগাঁও চিনিকল। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঠাকুরগাঁও চিনিকল। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দীর্ঘদিনের পুরাতন মেশিনপত্র ও নড়বড়ে যন্ত্রপাতি দিয়ে আবারও চালু হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁও চিনিকল। আগামি ১৯ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে ৬৮তম মাড়াই মৌসুম।

৬৭ বছর ধরে মিলটি শত কোটি টাকা লোকসান গুনলেও কর্তৃপক্ষ এবার এই মিলটিকে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে বিএমআরই-র পরিবর্তে রিপ্লেসমেন্টের দাবি জানিয়েছে। এতে নতুন মেশিনে চিনির আহরণের হার বাড়লে মিলটি আর লোকসানের দিকে যাবে না বলে দাবিও করছে কর্তৃপক্ষ।

১৯৫৮ সালে সাবেক ইপিআইডিসি কর্তৃক ঠাকুরগাঁও চিনিকল স্থাপিত হয়। স্থাপনের সময় এ চিনিকলটির দৈনিক আখ মাড়াই ক্ষমতা ছিল ১ হাজার ১৬ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক চিনি উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১০ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন।

পরবর্তীকালে ১৯৬৬-৬৭ মৌসুম থেকে আখ মাড়াই ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দৈনিক ১ হাজার ৫২৪ মেট্রিক টনে উন্নীত করা হয় এবং বার্ষিক চিনি উৎপাদন ১৫ হাজার ২৪০ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়।

দীর্ঘদিন পুরনো হয়ে যাওয়ায় এ মিলের অনেক যন্ত্রপাতি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এছাড়াও জরুরি সময়ে দূর্লভ যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেলে কোনো মতে জোড়াতালি দিয়ে মিল চালানো হয়। এ অবস্থায় প্রতি মৌসুমে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চিনিকলটি ঘন ঘন বন্ধ হয়ে উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং ১২০ দিন মিলটি চালু রাখা সম্ভব হয় না।

এছাড়াও অনেক শ্রমিক অবসরজনিত কারণে মিল থেকে বিদায় নেওয়ায় এবং নতুন করে শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োগ না হওয়ায় মিল পরিচালনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়, যা লোকসানের বড় একটি কারণ।

কৃষকদের অভিযোগ- চিনিকলের কাঁচামাল আখ দীর্ঘমেয়াদী ফসল হলেও কৃষকদের সময়মতো টাকা পরিশোধ করা হয় না। অন্যান্য ফসল বিক্রি করে কৃষকরা নগদ টাকা পায় এবং প্রয়োজন মেটাতে পারে।

কিন্তু আখ বিক্রি করে দীর্ঘসময় টাকা না পাওয়ায় এবং টাকার জন্য বারবার মিল ঘুরে হয়রানির শিকার হওয়ায় অনেকেই আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এ নিয়ে কৃষক ও নেতারা অভিযোগ দেওয়ার পর এ বছর আখের মূল্য কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে ধান, গম, আলুসহ অন্যান্য ফসলে লোকসান গুনে অনেক কৃষক আবার আখ চাষে ফিরেছে। এ অবস্থায় আখের মূল্য ৮০০ টাকা কুইন্টাল করা গেলে আখচাষে কৃষকদের আগ্রহ আরও বাড়বে বলে মনে করেন ঠাকুরগাঁও চিনিকলের কেন্দ্রীয় আখচাষী সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ।

এ বছর ঠাকুরগাঁও চিনিকলে ৯০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৫ হাজার ৪৯০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গত বছর চিনিকলটি ৫ হাজার ৯৩২ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করে, যা সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার, বিজিবির রেশনিংয়ে সরবরাহ করা হয়। কিছু চিনি নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে খোলা বাজারেও বিক্রি করা হয়।

ঠাকুরগাঁও চিনিকলের বাজারমূল্য এবং বাজারের সাদা চিনির মূল্যের মধ্যে বড় ফারাক থাকায় প্রতিবছর এ চিনিকলের অনেক চিনি অবিক্রিত পড়ে থাকলেও এ বছর ব্যতিক্রম দেখা গেছে বেশিরভাগ চিনি বিক্রি হয়ে গেছে। এ বছর চিনিকলের চিনির মূল্য ১২৫ টাকা কেজি নির্ধারণ থাকলেও বাজারে ১৪০ টাকা পর্যন্ত দাম ওঠায় দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়।

বর্তমানে ২,৬০০ মেট্রিক টন চিনি মজুদ রয়েছে এবং তা মিল চালুর আগেই বিক্রি হয়ে যাবে বলে জানান চিনিকলের জিএম (প্রশাসন) সুভাষ চন্দ্র সিংহ।

তিনি বলেন, এ বছর ঠাকুরগাঁও চিনিকলে ৯০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৫ হাজার ৪৯০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। গত বছর ৫ হাজার ৯৩২ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদিত হয়। বর্তমানে ২,৬০০ মেট্রিক টন চিনি মজুদ রয়েছে, যা মিল চালুর আগেই বিক্রি হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজাহান কবির বলেন, দীর্ঘদিনের পুরাতন যন্ত্রপাতি ও কারখানার বাস্তবতা স্বীকার করে জেলার একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠানটিকে টিকিয়ে রাখতে বিএমআরই নয়, বরং রিপ্লেসমেন্ট প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, ৬৭ বছরে ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫০ কোটি টাকা এবং মিলটি শত কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!