কুমিল্লার তিতাস উপজেলার আসমানিয়া এলাকায় গোমতী নদীর ওপর নির্মিত অস্থায়ী কাঠের সেতুটি টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির প্রবল স্রোতে ভেঙে পড়েছে। এতে নদীর দুইপাড়ের অন্তত ৪৫ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী, কৃষক ও কর্মজীবী মানুষ।
গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেতুটি ভেঙে পড়ে বলে জানান স্থানীয়রা। কাঠের এ সেতুটি নির্মিত হয়েছিল নির্মাণাধীন পাকা সেতুর পাশেই, বিকল্প যোগাযোগের ব্যবস্থা হিসেবে। আসমানিয়া বাজার ও নারান্দিয়া গ্রামের সংযোগে নির্মিত এই অস্থায়ী কাঠের সেতুর ওপর নির্ভরশীল ছিল গোমতীর উত্তর-পশ্চিম তীরের নারায়ণপুর, হরিপুর, রতনপুর, কদমতলী, ভাটিবন, সোনাকান্দা, জগৎপুরসহ ২৯টি গ্রাম এবং দক্ষিণ-পূর্ব তীরের আসমানিয়া, খোশকান্দি, গাজীপুর, নয়াচর, কালিপুরসহ আরও ১৪টি গ্রামের মানুষ।
রতনপুর গ্রামের শাহআলম জানান, ‘সেতুটি বহুদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। সময়মতো সংস্কার বা মজবুত না করায় শেষ পর্যন্ত প্রবল স্রোতে তা নদীতে ভেঙে পড়ে।’
আসমানিয়া আয়েশা আক্তার মহিলা কলেজের শিক্ষক মো. কিবরিয়া বলেন, ‘সেতু ভেঙে যাওয়ায় অনেক অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।’ নয়াচর গ্রামের ব্যবসায়ী আমিন মিয়া বলেন, ‘সেতু ভেঙে যাওয়ার পর বাজারে বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। এতে ব্যবসায়িক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে।’
সাবেক ইউপি সদস্য মোস্তাক হোসেন জানান, ‘সেতু ভেঙে যাওয়ার পর থেকে বাজারমুখী যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অর্ধশতাধিক সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক আয় হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।’
তিতাস উপজেলা প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘নদীতে এখনো প্রবল স্রোত রয়েছে। ফলে আপাতত মেরামত সম্ভব নয়। পানি কমে গেলে সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ বর্তমানে বিকল্প হিসেবে এলাকাবাসী চার কিলোমিটার পথ ঘুরে দাসকান্দি হয়ে চলাচল করছেন। কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে নৌকা ও ট্রলার ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন।