তরুণ মেহরাব ও তাঁর শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠনের সদস্যদের মনে সবসময় এমন কিছু স্বপ্ন ঘুরে বেড়ায় যা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর গল্প হয়ে ওঠে। কখনো বিনা মূল্যে দরিদ্র মানুষের জন্য কাপড় বিতরণ, খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রীর ব্যবস্থা করা আবার কখনো সবাই মিলে এলাকার পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করা। ইতিমধ্যেই এই স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনটি সারা দেশেই সুনাম কুড়িয়েছে। মেহেরাবের ভাষায়, একটা স্বপ্ন ছিল মানুষের জন্য কিছু করার। একা সেই কাজটি করা একটু কঠিন। তবে সাথে আরও কয়েকজন থাকলে অবশ্যই সেটি সম্ভব। প্রথমে অবশ্যই প্রতিকূল পরিস্থিতির ভিতর দিয়ে আসতে হয়েছে। এখন সবাই পাশে দাঁড়ায়। দল বা ধর্ম ও বর্ণ এখানে কোনো বাধা তৈরি করতে আসে না। মেহেরাবদের এবারের উদ্যোগটি একটু ব্যতিক্রম ধরনের। বাংলাদেশে এটি প্রথম কি না ঠিকঠাক বলা যায় না। তবে আশপাশে এই ধরনের কোনো উদ্যোগ নেই। একটি লাইব্রেরি বা পাঠাগার স্থাপন করে মানুষকে বদলে দেওয়ার চিন্তা। তবে এই লাইব্রেরি আবার এমন এক স্থানে যেখানে মানুষ ছুটির দিনে ঘুরতে আসে পরিবার পরিজন নিয়ে। অর্থাৎ একটি টুরিস্ট স্পটে। বাংলাদেশের মানুষ পাঠাভ্যাসে বিশ্বে অনেক পিছিয়ে আছে, কয়েকদিন আগেই এমন একটি জরিপের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তবে এখনো এ দেশের তরুণরা বই পড়েন, বই পড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করছে। গড়ে তুলছে পাঠাগার।
চেষ্টা করছে এই প্রজন্মকে মোবাইল থেকে বইয়ের দিকে টানতে। এ রকমই এক উৎসাহব্যঞ্জক কাজ শুরু হয়েছে পাবনার বেড়া উপজেলায়। ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য জনপ্রিয় পাবনার বেড়া উপজেলার ডাকবাংলো সংলগ্ন বেড়া নৌ বন্দর। শীতকালে মানুষের আনাগোণা শীতের দাপটে একটু কম হলেও গরম পড়তেই বাড়তে থাকে পর্যটকের সংখ্যা। সামনে বিশাল বিস্তৃত যমুনার শাখা হুরাসাগর আর শিশু-কিশোরদের মিলনমেলায় স্থানটি এখন খুব পরিচিত বিনোদন কেন্দ্রও। এখানেই বই পড়–য়াদের পাঠাভ্যাসে একটু আনন্দ দিতে তরুণদের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে কুঁড়েঘর পাঠাগার।
তরুণদের বইয়ের সহযোগিতা করেন কলি প্রকাশনীর মহিউদ্দিন কলি। আর পাঠাগার তৈরিরে সহযোগিতা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোরশেদুল ইসলাম। আপাতত ৩০০ বই নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছে কুঁড়েঘর পাঠাগারের। প্রতিদিন বিকেল ৪-৬ পর্যন্ত খুলা থাকছে এই পাঠাগার। ইতিমধ্যেই এই উদ্যোগ তরুণ সমাজের ভেতর ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। যারা এখানে বেড়াতে আসছেন তাদের অনেকেই এখান থেকে বই নিয়ে পড়ছেন, আবার পড়া শেষে রেখে দিচ্ছেন। দ্বিতীয় দিনেই ঘুরতে এসেছিলেন স্থানীয় হাইস্কুলের শিক্ষক মনিরুজ্জামান।’ শুনেছিলাম এখানে একটি পাঠাগার তৈরি করা হয়েছে। এটি দেখতেই আসা। এখন থেকে অলস বসে না থেকে একটা বই পড়ব। এটা খুবই চমৎকার উদ্যোগ। এসব মহৎ উদ্যোগেই হয়তো একদিন বাংলাদেশ পাঠাভ্যাসে এগিয়ে যাবে। মনিরুজ্জামান আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

