দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বস্ত্র ও টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি দাপট দেখিয়েছে। এতে গতকাল রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে বাজারটিতে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে।
সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। তবে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। অবশ্য এরপরও ডিএসইতে সাড়ে সাতশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৮০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৬টির। আর ৭২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তালিকাভুক্ত ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বাকি ৪টির শেয়ার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এ ছাড়া টেলিকমিউনিকেশন খাতের তালিকাভুক্ত ৩টি কোম্পানিই দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। আর বস্ত্র খাতের ৩৬টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ১৩টির এবং ৮টির শেয়ার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৮৪টির দাম কমেছে এবং ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৩০টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৩৮টির দাম কমেছে এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৫টির দাম কমেছে এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৭৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচক বড় উত্থান হলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৭৫ কোটি ৯০ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৮৯ কোটি ৬৮ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস ৭০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। কোম্পানিটির ৩০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার। ২০ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে, রেনেটা পিএলসি, খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, আইডিএলসি ফিন্যান্স, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, একমি পেস্টিসাইড এবং লাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস। অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৪৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৮টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।