বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৫, ০৮:৩৪ এএম

ব্যাংকাস্যুরেন্স বাংলাদেশের বিমা খাতের সবচেয়ে বড় গেমচেঞ্জার 

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৫, ০৮:৩৪ এএম

বিমা খাত

বিমা খাত

দেশের জনসংখ্যার তুলনায় জীবন বিমা গ্রাহকের হার অতি নগণ্য। পার্শ্ববর্তী দেশেসহ উন্নত বিশ্বে বিমা গ্রাহকের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশের মানুষ বিমা গ্রহণে অনাগ্রহী কেন? 

উত্তর: উন্নত বিশ্বে কিংবা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে বিমা গ্রাহকের হার আমাদের তুলনায় বহুগুণ বেশি। এর মূল কারণ হলো ইন্স্যুরেন্স লিটারেসি মানুষ বিমার প্রয়োজনীয়তা ও সুবিধা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখে। বাংলাদেশে এখনো সে জায়গাটা তৈরি হয়নি। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আস্থার অভাব। আস্থা ছাড়া কেউ তার কষ্টার্জিত টাকা কোনো বিমা প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেবে না এটাই স্বাভাবিক।

তা ছাড়া আমাদের অর্থনীতি যতটা বেড়েছে, গুরুত্বপূর্ণ এই খাত সেই হারে এগোতে পারেনি। এর প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে দক্ষ জনবল, শক্তিশালী তথ্যপ্রযুক্তি, সঠিক পণ্য ও অভিনব বিক্রয় চ্যানেল এর অভাব। এ খাতকে এগিয়ে নিতে হলে আস্থা তৈরি করতে হবে, ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে হবে, আর সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। এজন্য দরকার দক্ষ নেতৃত্ব, সুশাসন ও ন্যায্য প্রতিযোগিতা এবং বেশ কিছু জায়গায় প্রয়োজন রয়েছে আইনের সংস্কার।

অতীতের তুলনায় বর্তমানে বিমার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়ছে বলে আপনি মনে করেন কি?

উত্তর: নিঃসন্দেহে আস্থা বাড়ছে। যদিও পুরো সম্ভাবনা উন্মোচিত হয়নি, তবুও করোনা মহামারি মানুষের মধ্যে বিমার প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। এখন মানুষ শুধুমাত্র বিমার ব্যাপারে জানার জন্য আগ্রহী-ই নয়, বরং এর সুবিধাও বুঝতে পারছে।

আমাদের লিভিং বেনিফিটস প্রোডাক্টের চাহিদা দ্রুত বেড়েছে, সঙ্গে বেড়েছে বিমার গ্রাহক এবং সম্ভাব্য গ্রাহকের পরিধি। তাই এখন গার্ডিয়ান গ্রাহকদের চাহিদা-ভিত্তিক ইন্স্যুরেন্স সেবা দিচ্ছে। এর প্রমাণ হলো- যেখানে আগে আমাদের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১ কোটি, এখন তা ১ কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে।

ব্যাংকাস্যুরেন্সের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কতটুকু দেখছেন?   

উত্তর: আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ব্যাংকাস্যুরেন্স বাংলাদেশের বিমা খাতের সবচেয়ে বড় গেমচেঞ্জার। কারণ ব্যাংকের প্রতি মানুষের যে আস্থা আছে, সেটাই এ খাতকে দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। ব্যাংকের মাধ্যমে বিমা সেবা পেয়ে গ্রাহকরা দ্বিধাহীনভাবে বিমা নিচ্ছেন।

তবে একটি বড় বাধা আছে, বর্তমানে মাত্র তিনটি ব্যাংক এই সেবার অনুমোদন পেয়েছে। এই সীমাবদ্ধতা পুরো খাতের প্রবৃদ্ধিকে থামিয়ে রাখছে। যদি আরও বেশি ব্যাংক-কে ব্যাংকাস্যুরেন্সে যুক্ত করা যায়, তাহলে বিমা গ্রাহকের সংখ্যা বহুগুণ বাড়বে, আর পুরো খাতের চেহারা বদলে যাবে। তাই আমি বলব, ব্যাংকাস্যুরেন্সের সম্ভাবনা সীমাহীন, তবে সেটিকে মুক্ত করতে হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দ্রুত নীতি সংস্কার করতে হবে।

বিমা দাবি পরিশোধ বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন উল্লেখ করুন? 

উত্তর: বিমা দাবি পরিশোধ মানে মানুষের সবচেয়ে কঠিন প্রয়োজনের সময়ে পাশে দাঁড়ানো। তাই আমরা এটাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেই।
গার্ডিয়ান শুরু থেকেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ৩-৫ কার্যদিবসের মধ্যে দাবি নিষ্পত্তি। গত বছরই আমরা ৩৬ হাজারের বেশি ‘ডেথ ক্লেইমস’ পরিশোধ করেছি। বর্তমানে ৯৫% এর বেশি বিমা দাবি ৩ দিনের মধ্যেই নিষ্পত্তি করছি। আমাদের লক্ষ্য আরও এগিয়ে গিয়ে এটি এক কার্যদিবসের মধ্যে করা। এটাই হবে বিমা খাতে নতুন মানদ-।

বিমা খাতের উন্নয়নে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে কি কি ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে বলে আপনি মনে করেন? 

উত্তর: বিমা খাতের উন্নয়নে সবচেয়ে জরুরি হলো অপ্রয়োজনীয় জটিলতা দূর করা এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ। নতুন বিমা প্রোডাক্টগুলোর অনুমোদন প্রক্রিয়াকে সহজ ও সময়োপযোগী করতে হবে, যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত সেবা দিতে পারে। একই সঙ্গে ব্যাংকাস্যুরেন্সকে আরও উন্মুক্ত করতে হবে। বর্তমানে মাত্র তিনটি ব্যাংকের সীমাবদ্ধতার কারণে খাতটি কাক্সিক্ষত গতিতে এগোতে পারছে না। যদি আরও বেশি ব্যাংক-কে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা যায়, তবে গ্রাহকদের কাছে বিমার পরিসর বহুগুণে বেড়ে যাবে। এ ছাড়াও, গ্রাহকের কাছে আরও কার্যকরভাবে পৌঁছাতে ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং চ্যানেল ও ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করা যেতে পারে। আমরা ইতোমধ্যেই কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছি এবং সামনে এই অংশীদারিত্ব আরও বিস্তৃত ও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হলো যত বেশি সম্ভব গ্রাহককে সহজ ও নির্ভরযোগ্যভাবে বিমা সেবার আওতায় আনা।

এ ছাড়া মানুষের কাছে বিমার গুরুত্ব তুলে ধরতে সরকারের পক্ষ থেকে বড় পরিসরে গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম নেওয়া দরকার। সাধারণ মানুষ এ খাতকে যত বেশি বুঝবে, তত দ্রুত এই খাত প্রসারিত হবে। একই সঙ্গে, ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর বিকল্প নয় এটি অপরিহার্য। ইনসুরটেক, বিকল্প ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল, ব্যাংক ও হাসপাতালের ডেটা ইন্টিগ্রেশন এসবকিছুর মাধ্যমে আমরা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী নতুন প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস সাজাতে পারব।

সবশেষে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। দাবি নিষ্পত্তির রেকর্ড, আর্থিক সক্ষমতা ও পরিচালনা পর্ষদের কার্যকারিতা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করলে গ্রাহকের আস্থা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও শিল্প খাতের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া বিমা খাত তার পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করতে পারবে না। আর যদি সেই প্রচেষ্টা আসে, তবে বিমা খাত হবে বাংলাদেশের অর্থনীতির নতুন প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন।

শেখ রাকিবুল করিম 
গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স 
ডিএমডি ও ভারপ্রাপ্ত সিইও 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!