ঢাকা বুধবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৫

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

রপ্তানিতে দেশীয় বিমার পথ খুলল

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৫, ০৩:৫৩ এএম

রপ্তানি প্রক্রিয়ায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমাতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে দেশীয় বিমা কোম্পানির কভারেজের বিপরীতে ওপেন অ্যাকাউন্ট পদ্ধতিতে পণ্য রপ্তানি করতে পারবে। গতকাল মঙ্গলবার জারি করা নতুন সার্কুলারে ব্যাংকগুলোকে স্থানীয় বিমা কোম্পানি থেকে পেমেন্ট রিস্ক কভারেজ গ্রহণের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো এখন স্থানীয় বিমা কোম্পানি থেকে পেমেন্ট অ্যান্ডারটেকিং বা পেমেন্ট রিস্ক কভারেজ গ্রহণ করতে পারবে। এর আগে শুধু বিদেশি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পেমেন্ট অ্যান্ডারটেকিংয়ের মাধ্যমেই ওপেন অ্যাকাউন্ট রপ্তানি সম্ভব ছিল।

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, দেশীয় বিমা কোম্পানির মাধ্যমে ইস্যু করা বৈদেশিক মুদ্রাভিত্তিক বিমা পলিসির আওতায় ওপেন অ্যাকাউন্ট পদ্ধতিতে রপ্তানি পরিচালনা করা যাবে। তবে রপ্তানি আয় দেশে প্রত্যাবসিত না হলে বিমা দাবি বৈদেশিক মুদ্রায় নিষ্পত্তি করতে হবে। একই সঙ্গে বিমা কোম্পানিগুলো নিজস্ব নিয়ন্ত্রক কাঠামোর আওতায় বিদেশ থেকে পুনর্বিমা নিতে পারবে। এই সিদ্ধান্তের মূল পরিবর্তনটি হলো, এর আগে শুধু বিদেশি কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পেমেন্ট গ্যারান্টি নিয়েই ওপেন অ্যাকাউন্ট পদ্ধতিতে রপ্তানি করা যেত। কিন্তু নতুন এই নির্দেশনায় এখন দেশীয় বিমা কোম্পানির কাছ থেকে পেমেন্টের নিরাপত্তা (পেমেন্ট আন্ডারটেকিং) বা পেমেন্ট রিস্ক কভারেজ নিয়েও একই পদ্ধতিতে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

সার্কুলার অনুযায়ী, এই বিমা পলিসি অবশ্যই বৈদেশিক মুদ্রায় ইস্যু করতে হবে। আর রপ্তানি আয় দেশে ফেরত না এলে বিমা কোম্পানিকে সেই দাবির টাকাও বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হবে। প্রয়োজন হলে বিমা কোম্পানিগুলোকে নিয়ম মেনে বিদেশ থেকে পুনর্বিমা (রিইনশিওরেন্স) নেওয়ারও সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, স্থানীয় বিমা কভারেজের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট রপ্তানির বিপরীতে ব্যাংকগুলো রপ্তানি করা পণ্যের জন্য অর্থায়নও (পোস্ট-শিপমেন্ট ফাইন্যান্স) করতে পারবে।

ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নীতিগত সিদ্ধান্ত রপ্তানিকারকদের বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাবে। এতে বাণিজ্যিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে নমনীয়তা বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা আরও শক্তিশালী হবে।