রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০২:৩২ এএম

বিপিএর সংবাদ সম্মেলন

১ নভেম্বর থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন স্থগিত

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০২:৩২ এএম

১ নভেম্বর থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন স্থগিত

সরকার দেশের পোলট্রি খাত নিয়ন্ত্রণ করা করপোরেট সিন্ডিকেট না ভাঙলে ১ নভেম্বর থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন স্থগিতের হুমকি দিয়েছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। গতকাল শনিবার রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ হুমকি দেন। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার।

সুমন বলেন, দেশের প্রান্তিক খামারিরা প্রতিকূল পরিবেশেও উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ফিডের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি, করপোরেট সিন্ডিকেটের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ এবং সরকারের কার্যকর তদারকির অভাবে পুরো পোলট্রি খাত গভীর সংকটে নিমজ্জিত। সরকারের পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকায় এই খাতে প্রকৃত অর্থে চলছে অর্থনৈতিক হরিলুট।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১৬ বছর ধরে দেশের কয়েকটি বড় করপোরেট গ্রুপ নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ‘বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)’ নামের নিবন্ধনহীন ও বেআইনি সংগঠন গঠন করেছে। এই সংগঠন কোনো সরকারি স্বীকৃতি বা তদারকির আওতায় নেই। তবু তারা ফিড, বাচ্চা এবং টিকা ও ওষুধের বাজার প্রভাবিত করছে এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের নীতি-নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সরাসরি অংশ নিচ্ছে। ফলে দেশের প্রকৃত উৎপাদক অর্থাৎ, প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বিপিএকে আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। বিপিএ সভাপতি অভিযোগ করেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ের বাস্তব পরিস্থিতি না জেনে কেবল করপোরেট গ্রুপের পরামর্শে কাজ করছেন। অতীতে প্রান্তিক খামারিদের প্রতিনিধিত্বের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। বরং কিছু সান্ত¡না পুরস্কার ও ফটোসেশন দেখিয়ে সমস্যার মূল বিষয় আড়াল করা হয়েছে। তারা সান্ত¡নার ভেতরে থাকতে চান না, তারা ন্যায্যতার ভেতরে থাকতে চান। তাদের দাবি, মাঠের বাস্তবতাকে ভিত্তি করে নীতি প্রণয়ন করতে হবে এবং সরকারি সিদ্ধান্তে প্রান্তিক খামারিদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

সুমন বলেন, ২০২৩ সালে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে বাংলাদেশের বাজারে প্রতি কেজি ফিডে ১৫ থেকে ২০ টাকা অতিরিক্ত দাম নেওয়া হচ্ছে। সরকার তবু কেন নীরব ভূমিকা পালন করছে ফিডের দাম কমাতে? পার্শ্ববর্তী দেশের বাজারে প্রতি কেজি ফিডের দাম যদি ৩২-৪০ টাকার মধ্যে হয়, একটি ডিম উৎপাদন খরচ যদি পাঁচ টাকা এবং এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ৮০-৯০ টাকা হয়, তাহলে বাংলাদেশের বাজারে কেন একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা এবং এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০-১৬৫ টাকা হয়? দেশের বাজারে সিন্ডিকেট যখন থামানো যাচ্ছে না, আমাদের উচিত যেভাবে চাল, ডাল, পেঁয়াজ আমদানি করি, ঠিক একইভাব ফিড, মুরগির বাচ্চা এবং ওষুধ ও টিকা পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে আমদানি করা। তাহলে সিন্ডিকেট বিলুপ্ত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। দেশের ফিড মিল ও হ্যাচারিদের সুবিধা দিতে গিয়ে প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে ডিম ও মুরগির দাম। এর ফলে সাধারণ মানুষ তাদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানান বিপিএ সভাপতি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২১ সালে ৫০ কেজি লেয়ার ফিডের দাম ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার, ব্রয়লার মুরগির ফিড ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ এবং একটি মুরগির বাচ্চার উৎপাদন খরচ ২০ থেকে ২২ টাকা ছিল। ২০২২ সালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অজুহাত দেখিয়ে ফিড কোম্পানি বস্তাপ্রতি দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা বাড়ায়। পরে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম অর্ধেক নেমে গেলেও বাংলাদেশে ফিডের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজিতে সয়াবিন মিল (কেক) ৭০-৮০ টাকা থেকে ৪৫-৫০ এবং ভুট্টা ৪০-৪৫ টাকা থেকে ২০-৩০ টাকা দাম কমেছে। কিন্তু ২৮-৩০ টাকা উৎপাদন খরচের বাচ্চা বর্তমানে ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। কখনো কখনো ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

মাঝেমধ্যে আবার ১০-১৫ টাকায় বিক্রি করে ছোট হ্যাচারিগুলোকে ক্ষতির মুখে ফেলে বাজার থেকে সরানো হচ্ছে। ফলে খামারিরা প্রতিটি ডিমে ২ থেকে ৪ টাকা এবং প্রতি কেজি ব্রয়লারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা ক্ষতির মুখে পড়ছে। ১০-১২টি করপোরেট গ্রুপ একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, করপোরেট সিন্ডিকেট সরকারকে বিভ্রান্ত করছে, বিকৃত (ভুল) তথ্য দিয়ে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করছে। বাস্তবে তারা বাজারের প্রতিটি স্তর নিয়ন্ত্রণ করে। অতি শিগগিরই যদি সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তাহলে প্রান্তিক খামারিরা একে একে বাজার থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!