জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশে পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ঠিকঠাক প্রতিফলিত হয়নি বলে মনে করেন বোর্ডের পরামর্শক কমিটির সদস্য ফরিদ উদ্দিন।
তিনি বলেছেন, অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবিতে এনবিআর কর্মীরা আন্দোলনে নামার ফলে এখন যদি ‘বিদ্বেষ’ থেকে সংস্থাটিকে দুই ভাগ করা হয়, তাহলে তা জাতির জন্য ‘ভয়ংকর’ পরিস্থিতি তৈরি করবে। পরামর্শক কমিটির কোনো সুপারিশ অধ্যাদেশে রাখা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন করলে ফরিদ উদ্দিন একটি কাগজ তুলে ধরেন এবং সবাইকে পাঠাবেন বলে জানান।
গতকাল শনিবার ঢাকার গুলশানে এনবিআর সংস্কারবিষয়ক গোলটেবিলে তিনি এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরার পাশাপাশি মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ (পিইবি) বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরিদ উদ্দিন বলেন, রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে ভাগ করার বিষয়টা এখানে (সংস্কার প্রতিবেদন) আমরা এনেছি। আমরা কমিটি থেকে যে সুপারিশ করেছি, আসলে সেভাবে বিষয়টা, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সেভাবে হয়নি।
তিনি আরও বলেন, “আমি কিন্তু সরকারকে বলেছি, আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, যদি ভুল হয়, এটা কোনো বিদ্বেষ থেকে বা যদি ভুল করে করা হয়, তাহলে এটা জাতির জন্য ‘ভয়ংকর’ অবস্থা, পরিস্থিতি হবে।”
গত ১২ মে রাতে এনবিআর বিলুপ্ত করে ‘রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে সরকার। পরের দিন থেকে আন্দোলনে নামেন দেশের প্রধান রাজস্ব আহরণকারী সংস্থাটির কর্মীরা। অবস্থান, কলমবিরতিসহ কর্মবিরতির মতো টানা কর্মসূচি পালন করেন তারা।
তাদের দাবি ছিল, প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পদে প্রশাসন ক্যাডার থেকে আসা সচিবদের যেন না বসানো হয়। এর পরিবর্তে বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের অভিজ্ঞদেরই যেন নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের দাবির মুখে অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন থেকে সরে আসে সরকার। তখন সরকারের তরফে সংশোধনের কথা বলা হয়। পরে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে যে দুই ভাগ করা হচ্ছে, সেগুলোর শীর্ষ পদে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব দেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে সংশোধিত অধ্যাদেশে। এটিসহ ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর সংশোধনে ১১টি পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।