ঢাকা রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বললেন তারেক রহমান

ঐক্যবদ্ধ না হলে গুপ্ত স্বৈরাচারের আবির্ভাব হবে 

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ১১:২০ পিএম

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বাধীনতার পর থেকে দেশে বারবার স্বৈরাচারের আবির্ভাব হয়েছে। জনগণের আন্দোলনেই তারা বিতাড়িত হয়েছে। কিন্তু আগামী দিনে যদি বিএনপি ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ না থাকে, তাহলে আবারও গুপ্ত স্বৈরাচারের উদ্ভব হতে পারে।

গতকাল শনিবার বিকেলে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় টাউনহল মাঠে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

তারেক রহমান বলেন, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, আমরা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, ২০০৮ সালের তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে, ওয়ান-ইলেভেনের মাধ্যমে যেভাবে স্বৈরাচার জেঁকে বসেছিল, যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, আগামী দিনে গুপ্ত স্বৈরাচারের আবির্ভাব হতে পারে। জনগণ যেভাবে চায়, আমাদের সেভাবে চলতে হবে। একটি কথা, সবার আগে বাংলাদেশ। এটিই আমাদের শুরু, এটিই আমাদের শেষ, সবার আগে বাংলাদেশ।

তারেক রহমান বলেন, গত ১৫-১৬ বছরে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী খুন, গুম, নির্যাতন ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তারপরও জনগণের সঙ্গে থেকে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন তারা। আজ স্বৈরাচার পতিত হয়েছে, কিন্তু সামনে রয়েছে দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব। এ জন্য নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে।

তিনি বলেন, সমাবেশে বক্তব্য দিলেই হবে না। এখন এই বাংলাদেশকে গঠন করতে হবে, কারণ এই দেশ আমার, আপনার, আমাদেরÑ সবার। এ দেশকে গঠন করতে হবে। দেশ গঠন করতে হলে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব দেশের যে শক্তিÑ অর্থাৎ জনগণের কাছে আমাদের যেতে হবে। এ রকম মিটিং করে করে জনগণের কাছে গেলে চলবে না। আপনাদের সবাইকে দুইজনের, তিনজনের ছোট টিম করে করে জনগণের দুয়ারে যেতে হবে। জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে যে আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, আমাদেরকে সমর্থন করলে আমরা পুরো দেশকে গঠন করব। কীভাবে জনগণের সন্তানের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলব, কীভাবে যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তুলব, কীভাবে দেশের নারীদের ক্ষমতায়ন করব, কীভাবে কৃষকদের পাশে এসে বিএনপি দাঁড়াবে, কীভাবে শিক্ষাব্যবস্থা, দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলবোÑ এই কথাগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। একটি কথা মেনে নিতে হবে, আমাদের লক্ষ্য এখন একটি ঐক্য, জনগণ এবং দেশ গঠন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা দেখেছি দেশ স্বাধীনের পরে এক স্বৈরাচার চেপে বসেছিল দেশের মানুষের কাঁধে। পরবর্তীতে সেই স্বৈরাচারকে বিতাড়িত করা হয়েছিল একদলীয় শাসনকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরবর্তীতে আবারও স্বৈরাচার এসেছিল, সেই স্বৈরাচারকেও দেশের জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে বিতাড়িত করেছে। বিগত ১৫ বছর আরেক স্বৈরাচার বসেছিল। সেই স্বৈরাচারকে বিতারিত করেছে দেশের জনগণ।

তারেক রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের লক্ষ্য এখন একটাইÑ ঐক্য, জনগণ ও দেশ গঠন। জনগণই বিএনপির ক্ষমতার উৎস, তাই জনগণ যেভাবে চায় সেভাবেই কাজ করতে হবে।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, জান্নাতের টিকিট বিক্রি করা ধর্মব্যবসায়ীরা দেশে বিভাজন তৈরি করতে চাইছে। চেতনার ব্যবসাও দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে।

এর আগে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বিশেষ অতিথি ছিলেন মনিরুল হক চৌধুরী, হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াসিন, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, মো. আবুল কালাম ও মো. মোস্তাক মিয়া।

সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন এবং সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ভিপি ওয়াসিম। দুপুর থেকেই কাউন্সিলরসহ হাজারো নেতাকর্মীর ঢল নামে টাউনহল মাঠে। সম্মেলন শেষে নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করা হয়।