ঢাকা রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

খরচ কমলেও বইয়ের মানে শঙ্কা

উৎপল দাশগুপ্ত
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ১১:২২ পিএম

পুনঃদরপত্র অনুযায়ী মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির বিনা মূল্যের পাঠ্যবইয়ের ছাপার সর্বনি¤œ দর পড়েছে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম। এতে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে এসব শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য মানসম্পন্ন বই ছাপানো নিয়ে চ্যালেঞ্জে পড়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। তবে বাতিল হওয়া দরপত্রের তুলনায় পুনঃদরপত্রের দর অনেক কম হওয়ায় আগামী শিক্ষাবর্ষের বই ছাপাতে এনসিটিবি তথা সরকারের খরচ কমেছে প্রায় ৩১০ কোটি টাকা। 

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে আর মাসতিনেক বাকি। পুনঃদরপত্র হওয়ায় সব প্রক্রিয়া শেষে এই তিন শ্রেণির বই ছাপা শুরু হতে আরও সময় লাগবে। অন্যদিকে ৯ম শ্রেণির বই ছাপাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই এই শ্রেণির বই ছাপা কবে শুরু হবে তা অনিশ্চিত। অন্যদিকে মাধ্যমিক স্তরের ইবতেদায়ি ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির বই ছাপার জন্য গত ১০ দিন আগে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়। কিন্তু ছাপার কাজ নজরদারির জন্য প্রি-ডেলিভারি ইন্সপেকশন এজেন্ট (পিডিআই) নিয়োগ এখনো চূড়ান্ত না হওয়ায় কাজ শুরু করতে পারেনি প্রেসগুলো। পাশাপাশি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) এড়িয়ে গত বছরের মতো এবারও পিডিআই নিয়োগ দিতে একটি মহলের সক্রিয় থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

বই ছাপাতে কম দর ও প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ছাপার কাজ শুরু হতে সময় বেশি লাগায় নতুন বছরের জানুয়ারিতে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন বই পাওয়া শঙ্কা রয়েছে। বর্তমান কাগজের বাজার যাচাই করে যেসব লটের দর ২ টাকা ৫০ পয়সা (প্রতি ফর্মা) থেকে ২ টাকার নিচে রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে এনসিটিবি পুনঃমূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নিলে মানসম্পন্ন বই পাওয়া সম্ভব। আর প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে ছাপার কাজ শুরু করতে পারলেই নির্ধারিত সময়ে বই দেওয়া সম্ভব। এনসিটিবি ও বই ছাপার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 
সরকারের খরচ কমলেও শঙ্কায় বইয়ের মান : দেশের প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনা মূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করে এনসিটিবি। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সর্বনি¤œ দরদাতা প্রেসগুলো এসব বই ছাপার কাজ করে থাকে। বরাবরের মতো এবারও প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় ৩০ কোটির বেশি বই ছাপানোর কাজ করছে এনসিটিবি। দরপত্রসহ সব প্রক্রিয়া শেষ করে এরই মধ্যে প্রাথমিক স্তরের বই ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। তবে প্রেসগুলো নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে বেশি দর দেওয়ার অভিযোগে মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির ক্রয় প্রস্তাব বাতিল করে পুনঃদরপত্র করা হয়। তবে ৯ম শ্রেণির বই ছাপার ক্রয় প্রস্তাবের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। 

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণির ১২ কোটি ৬১ লাখের বেশি বই ৩০০ লটে (প্রতি শ্রেণিতে ১০০ লট) ছাপার জন্য ২০৭ কোটি ফর্মা (৮ পৃষ্ঠা ১ ফর্মা হিসাবে) কাগজ প্রয়োজন হবে। এই তিন শ্রেণির বাতিল হওয়া দরপত্রে দরদাতাদের দেওয়া গড়ে দর ছিল ৩ টাকা ১৯ পয়সা (প্রতি ফর্মা)। কিন্তু সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদে এই ক্রয় প্রস্তাব বাতিল হওয়ায় ৩০০ লটের পুনঃদরপত্র সম্প্রতি উন্মুক্ত করা হয়।  নতুন দরদাতারা প্রতি ফর্মায় আগের দরপত্রের তুলনায় গড়ে সর্বোচ্চ ১ টাকা ৫০ পয়সা কমিয়েছেন। এতে ২০৭ কোটি ফর্মার বই ছাপাতে এনসিটিবি তথা সরকারের খরচ কমছে প্রায় ৩১০ কোটি টাকার বেশি। 

বই ছাপার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর দাবি, আগের (বাতিল) দরপত্রে প্রতি ফর্মার দর ৩ টাকা ১৯ পয়সা না হয়ে ২ টাকা ৭০ বা ২ টাকা ৮০ পয়সা হলে হয়তো এটি বাতিল হতো না। এতে প্রেসগুলোর মুনাফা ‘উচ্চ’ না হলেও মানসম্পন্ন বই দিয়েও ‘ভালো’ লাভ থাকত। তবে পুনঃদরপত্রে যেমন কম রেট পড়েছে তাতে এনসিটিবির স্পেসিফিকেশন (শর্ত) অনুযায়ী মানসম্পন্ন বই দেওয়া সম্ভব নয়। 

কম দরে বেশি কাজে লাভের কৌশল : ৬ষ্ঠ শ্রেণির বইয়ের পুনঃদরপত্র যখন উন্মুক্ত করা হয় তখনই কম দরের বিষয়টি সামনে আসে। সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, তিন শ্রেণির (৬ষ্ঠ-৮ম) বই ছাপার জন্য এনসিটিবির পুনঃদরপত্রের প্রাক্কলিত দর ছিল গড়ে ৩১৫০ টাকা (প্রতি রিম হিসাবে) বা তার কাছাকাছি। ৬ষ্ঠ শ্রেণির ১৭ নম্বর লটে প্রাক্কলিত দর থেকে সর্বনি¤œ দরদাতা দর কম দিয়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ। এই শ্রেণিরই আরেকটি লটের সর্বনি¤œ দরদাতা একটি বড় প্রেসের দর পড়েছে ২ টাকা ৯ পয়সা। ৮ম শ্রেণির ৮০ নম্বর লটে সর্বনি¤œ দরদাতার দর পড়েছে এক হাজার ৭৮৫ টাকা। প্রাক্কলিত দর থেকে যা প্রায় ৪৫ শতাংশ কম। এই শ্রেণিতে প্রতি ফর্মা ১ টাকা ৭৩ পয়সা থেকে ১ টাকা ৯০ পয়সা দরও পড়েছে। ৭ম শ্রেণির দর ৬ষ্ঠ ও অষ্টম থেকে কিছুটা ভালো। তবে অষ্টম শ্রেণিতে দরে বিপর্যয় ঘটেছে। 

এনসিটিবির কাগজের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী বই ছাপার জন্য বর্তমান বাজার দরে প্রতি রিম কাগজের দাম পড়ে এব হাজার ৬৪৩ টাকা। এর সঙ্গে বই ছাপার জন্য কাভারের কাগজ, কাভার প্রিন্ট, কালি, বইয়ের প্রিন্টিং, বাইন্ডিং, পরিবহন, ট্যাক্স, ব্যাংক ইন্টারেস্টসহ আরও কয়েকটি খাতে খরচ রয়েছে। অথচ এই লটটির সর্বনি¤œ দরদাতা একটি সম্পূর্ণ বই নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়াসহ দর দিয়েছে এক হাজার ৭৮০ টাকা। অর্থাৎ কাগজ কেনার পর মাত্র ১৩৭ টাকায় বাকি সব কাজ করে বই ছাপা চূড়ান্ত করবে এই দরদাতা।

এনসিটিবির বই ছাপার কাগজের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী এটি কখনোই সম্ভব নয় মন্তব্য করে সূত্রের দাবি, একাধিক বড় প্রেস কম দর দিয়ে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির বেশি লটে সর্বনি¤œ হওয়ায় ৮ম শ্রেণিতে কাজ পাওয়া নিশ্চিত করতে অন্যান্য প্রেসগুলোও দর কম দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নামে। দর কম হলেও কাজ যদি বেশি পাওয়া যায় তাতে লোকসান কমে একপর্যায়ে কম হলেও লাভও থাকে। এ ছাড়া নভেম্বরের শেষ থেকে যখন বই ছাপা শেষ করার জন্য মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবিসহ সব মহলে তাড়াহুড়ো থাকে। সে সময় কাগজের স্পেসিফিকেশনে একটু পরিবর্তন করতে পারলে লাভের অংক বাড়ারও সুযোগ থাকে। কিন্তু কাজ না পেলে কোনো সম্ভাবনাই থাকে না। মূলত এমন কৌশল থেকেই এই তিন শ্রেণির বই ছাপার দর পড়ে গেছে বলে সূত্রের মতো।

শঙ্কা প্রকাশ করে সূত্র জানিয়েছে, যেসব বড় প্রেস দর কম দিয়ে সর্বনি¤œ হয়েছে, বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করেও এনসিটিবিকে নির্দিষ্ট সময়ে মানসম্পন্ন বই সরবরাহ করার সক্ষমতা তাদের রয়েছে। তবে যেসব ছোট ও মাঝারি প্রেস কম দরের প্রতিযোগিতায় নেমে একাধিক লটে সর্বনি¤œ হয়েছে তাদের পক্ষে নির্দিষ্ট সময়ে মানসম্পন্ন বই সরবরাহ করা কঠিন।

নির্দিষ্ট সময়ে বই পাওয়া নিয়ে রয়েছে শঙ্কা:

সাধারণত বছরের প্রথম দিন সারা দেশের প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীকে পাঠ্যবই দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে এনসিটিবি। সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরাই বছরের প্রথম দিন কিছু বই পেলেও সব শিক্ষার্থীর বই পেতে ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হয়ে যায়। এবার এনসিটিবি যেভাবে বই ছাপার কাজ শুরু করেছে তাতে আগামী শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়েই বই পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরের বই ছাপার কাজও প্রায় একই সময়ে শুরু হয়েছিল। কিন্তু ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণির দরপত্র বাতিল করে পুনঃদরপত্র হওয়ায় বই ছাপার গোটা প্রক্রিয়া পিছিয়ে গেছে।

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে এখনো বাকি ৯০ দিনের বেশি। তিন শ্রেণির পুনঃদরপত্র উন্মুক্ত করা হলেও এখনো মূল্যায়ন শেষ হয়নি। দরপত্র মূল্যায়ন শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে বই ছাপার ক্রয় প্রস্তাব কেবিনেট ডিভিশন হয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটিতে অনুমোদনের পর আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় হয়ে এনসিটিবিতে আসবে। বিগত দিনের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, এই পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে অক্টোবর মাস লাগতে পারে।

ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন হয়ে আসার পর এনসিটিবি কাজ পাওয়া প্রেসগুলোকে নোয়া (নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড) দিবে। এরপর প্রেসগুলো তাদের কাজ করতে এনসিটিবির সঙ্গে চুক্তি করার জন্য ২৮ দিন সময় পাবে। অর্থাৎ এসব প্রক্রিয়া শেষ করতে নভেম্বর মাস শেষ হতে পারে। এই হিসাব অনুযায়ী সবকিছু ঠিক থাকলে নভেম্বরের শেষ দিকে এই তিন শ্রেণির বইয়ের ছাপার কাজ শুরু হতে পারে। তবে ৯ম শ্রেণির বই আগের দরপত্র অনুযায়ী হবে না পুনঃদরপত্র হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় বই ছাপা কবে শুরু হবে তা অনিশ্চিত। অন্যদিকে মাধ্যমিক স্তরের ইবতেদায়ি ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির বই ছাপার জন্য গত ১০ দিন আগে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়।

কিন্তু ছাপার কাজ নজরদারির জন্য প্রি-ডেলিভারি ইন্সপেকশন এজেন্ট (পিডিআই) নিয়োগ এখনো চূড়ান্ত না হওয়ায় কাজ শুরু করতে পারেনি প্রেসগুলো। এ ছাড়া এবার অমর একুশে বইমেলা ডিসেম্বরে আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। বই ছাপার কাজ যারা করেন তাদের অনেকে বই মেলায়ও অংশ নেন। বইমেলাকে কেন্দ্র করে এ সময় প্রেসের বাইন্ডারদের (বই বাঁধাইকারক) কাজের চাপও থাকে বেশি। পাশাপাশি আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিকে মোটামুটি ঠিক থাকলেও আগামী শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েই যাচ্ছে। 

সংকট নিয়ে একমত এনসিটিবি:

কম দরে কাজ নিয়ে মানহীন বই চালিয়ে দেওয়া বা ৯০ দিনের মধ্যে সব শিক্ষার্থীর কাছে বই পৌঁছানো ইত্যাদি সংকট নিয়ে একমত এনসিটিবি। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা (এমবার্গো) থাকায় এসব বিষয়ে নামপ্রকাশ করে মন্তব্য করতে রাজি হননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। 

এনসিটিবির প্রাক্কলিত দর থেকে কমবেশি ৩০ শতাংশ কম দর পড়ার কথা স্বীকার করে এক কর্মকর্তা বলেন, সততা ও কঠিন নজরদারির মাধ্যমে মানসম্পন্ন বই পাওয়া নিশ্চিত করা হবে। আর সব বাধা অতিক্রম করে জানুয়ারিতে বই দেওয়ার সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।    

কম দর দিয়ে কাজ নেওয়ার বিষয়ে আরেক কর্মকতা বলেছেন, বিষয়টি উদ্বেগের অবশ্যই। কারণ আমাদের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন বই দেওয়া। প্রেসগুলো সমঝোতা করে একবার এত বেশি দর দেওয়ায় তা বাতিল হয়েছে। আবার এখন এত কম দর দিল যে, এনসিটিবির স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মানসম্পন্ন বই দেওয়া সম্ভব নয়। এই প্রেক্ষাপটে প্রেসগুলো থেকে মানসম্পন্ন বই বের করে আনা এনসিটিবির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, কঠিনভাবে মনিটরিং করে ভালো বই পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া যে লটগুলোর দর অনেক কম পড়েছে মূল্যায়ন কমিটি সেগুলোও যাচাই-বাছাই করে দেখবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। তবে এই ক্ষেত্রে পিপিআর লঙ্ঘন বা কোনো পক্ষ যাতে বঞ্চিত না হয় এমন স্পর্শকাতর বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে।

কম দরের যাচাই চান সাবেক সভাপতিও :

পুনঃদরপত্রে বই ছাপায় সরকারের খরচ কমায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির (বামুশিস) সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান। তবে পুনঃদরপত্রে তিনটি শ্রেণির বইয়ের কোনো কোনো লটে অনেক কম দর পড়ায় মানসম্পন্ন বই পাওয়া নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন তিনি। রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, এনসিটিবির মূল্যায়ন কমিটি এখন দরগুলো যাচাই-বাছাই করে যেগুলো অধিক কম মনে হবে সেসব দরদাতাকে ডেকে ব্যাখ্যা চাইতে পারে কীভাবে এই কাজ করবে। বিশেষ করে যে লটগুলোর দর ২ টাকার নিচে পড়েছে, সেই দরগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা যতে পারে বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।

সাবেক এ সভাপতির মতে, ন্যূনতম ২ টাকা পয়সা ৫০ পয়সা দরে (প্রতি ফর্মা) কাজ করলে মানসম্পন্ন বই ছাপা সম্ভব। এ ছাড়াও আগামী শিক্ষাবর্ষে নির্দিষ্ট সময়ে বই পাওয়ার বিষয়ে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেহেতু প্রাথমিকের কাজ শুরু হয়ে গেছে, তাই এই কাজ শেষ করতে মাধ্যমিকের স্তরের ছাপার প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে। প্রেসগুলো তখন নির্বিঘেœ মাধ্যমিকের কাজ করতে পারবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের কাজ যেহেতু ধাপে ধাপে হবে, তাই ডিসেম্বরে মেলা হলে বাইন্ডার পাওয়া নিয়ে সমস্যা হবে না বলে মনে করি।