রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫, ১১:১৯ পিএম

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর

স্বস্তি ফিরলেও আগামীর অজানা শঙ্কায় উদ্বেগ 

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫, ১১:১৯ পিএম

স্বস্তি ফিরলেও আগামীর অজানা শঙ্কায় উদ্বেগ 

বোমা ও ড্রোন হামলার শব্দ নেই। নেই বোমা বিস্ফোরণে আকাশ কাঁপানো আগুনের লেলিহান শিখা। চারপাশে সবকিছু কেমন চুপচাপ, নিস্তব্ধ। বিগত দুই বছরে এমন রাত দেখেনি গাজাবাসী। যুদ্ধবিরতির পর এই উপত্যকায় এক ধরনের স্বস্তি ফিরলেও শব্দহীন অন্ধকার রাতের মতো অজানা আগামী নিয়ে নানা শঙ্কা ও বর্তমানের পর্যুদস্ত জীবনকে নতুন করে গোছানোর চিন্তা নিয়ে রয়েছে উদ্বেগ।

গাজায় গত শুক্রবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় ফিরে আসতে শুরু করেছেন। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধের অবসান এবং বন্দি বিনিময়ের চুক্তি অনুমোদনের পর এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। 

যুদ্ধবিরতির পর উত্তর গাজায় আসা একাধিক ফিলিস্তিনি সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেছেন, গাজায় এমন একটি রাত কাটিয়েছেন যা তারা গত দুই বছরে কল্পনাও করতে পারেননি। তারা বলেন, গাজার ওপর কেবল আশার আলো। কোনো ড্রোন নেই, কোনো বোমা নেই, কমলা আকাশ নেই, কেবল নীরবতা। এখানে এটা এত বিরল যে খুব অদ্ভুত লাগছে। তবে এখানেই শেষ নয়, সামনে দীর্ঘ সময়। অজানা কত সমস্যা আসতে পারে ভেবে এত শান্তির পরও কেমন যেন লাগছে।
আমরা নিরাপদ, আমাদের সন্তানরা নিরাপদ। আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের সাথে শান্তিতে জড়ো হয়েছি, এটা খুব ভালো। তবে আরও দেখতে হবে বলে সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি এক নারী। 

দক্ষিণ গাজাজুড়ে জনাকীর্ণ অস্থায়ী শিবিরে, বারবার বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো অবশেষে শান্তির মুহূর্ত খুঁজে পাচ্ছে। এক নারী আলজাজিরাকে বলেন, গত দুই বছর ধরে আমরা যত যন্ত্রণা এবং যা দেখেছি, তা সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতিতে আমি খুশি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ভেতরের ভয় চলে গেছে এবং এখন আমরা আমাদের প্রিয়জন, আমাদের পরিবার, প্রতিবেশী এবং বন্ধুদের দেখতে পাচ্ছি যারা এখনো বেঁচে আছে। আমি সত্যিই খুঁশি। আজ (গত শুক্রবার) আমি বাজারে গিয়ে আমার বোনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আমি তাকে দুই বছর ধরে দেখিনি। তাকে দেখে আমার হৃদয়ে সত্যিকারের আনন্দ অনুভূত হয়েছে। তবে শঙ্কাও রয়েছে অনেক।

এদিকে গাজায় হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি ইসরায়েলি নাগরিকেরা আগামীকাল সোমবার ঘরে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ওই দিন ২০ জন জীবিত ও ২৮ জন মৃত জিম্মির দেহ হস্তান্তর করা হবে।

ট্রাম্প গত শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। কারণ, এ দিন হামাস ৪৮ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে (জীবিত ও মৃত) মুক্তি দেবে। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি দুই হাজার ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

ট্রাম্প বলেন, এখনো কিছু জিম্মির মরদেহ মাটির নিচ থেকে উদ্ধারের কাজ চলছে। গাজায় থাকা জীবিত জিম্মিদের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘তাদের এমন কঠিন পরিবেশে রাখা হয়েছে যে, খুব কম মানুষই জানে তারা কোথায় আছেন।’

ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি এই সপ্তাহান্তে কায়রো যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার আগে তিনি ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ভাষণ দেবেন।

অন্যদিকে একটি সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে গতকাল শনিবার ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানায়, ইসরায়েলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে মুক্তির জন্য নির্ধারিত ফিলিস্তিনি বন্দিদের হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। একই সঙ্গে হামাসও সোমবার মুক্তির জন্য বাকি ইসরায়েলি বন্দিদের প্রস্তুত করছে।

তবে হামাসের নেতারা জানিয়েছেন, নিহতদের দেহ হস্তান্তরে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু একাধিকবার বলেছেন, ‘জিম্মিরা মৃত বা জীবিত হোক, তাদের সবাইকে একত্রে ফিরিয়ে আনা হবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় করা গাজা পরিকল্পনা অনুসারে বন্দিবিনিময়ের ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে হামাস ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে, যার পরপরই ইসরায়েল মুক্তি দেবে ২৫০ জন দীর্ঘমেয়াদি সাজাপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দি ও যুদ্ধকালীন সময়ে গ্রেপ্তার হওয়া আরও এক হাজার ৭০০ জনকে। ইসরায়েল ইতিমধ্যে মুক্তি পেতে যাওয়া ২৫০ বন্দির নামের তালিকা প্রকাশ করেছে। তবে হামাসের দাবিকৃত কয়েকজন বিশিষ্ট নেতার নাম তালিকায় নেই।

ইসরায়েলি কারাগারে এই বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে সম্পূর্ণ গণমাধ্যমবিহীন পরিবেশে। আগের মতো কোনো সশস্ত্র প্রদর্শন বা আয়োজন থাকবে না। পুরো প্রক্রিয়াটি তদারক করবে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস, যারা মাঠপর্যায়ে অনিয়ম বা লঙ্ঘনের বিষয় নথিভুক্ত করে রিপোর্ট দেবে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গত শুক্রবার সকাল থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সমঝোতা কার্যকর হওয়ায় গাজার একাংশ থেকে তারা আংশিক সেনা প্রত্যাহার করেছে। সেনাবাহিনী পিছিয়ে এসে এমন জায়গায় অবস্থান নিয়েছে, যা নিয়ে উভয়পক্ষ সম্মত। যদিও ওই উপত্যকার অর্ধেকই তাদের দখলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাজা শহরের উত্তর-পশ্চিম শহরতলি থেকে সৈন্যরা পূর্বদিকে পিছিয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণে খান ইউনিস থেকেও কিছু সেনার সরে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বর্তমানে গাজা শহরের যেসব এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার হয়েছে সেখানে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনীকে রাস্তায় মোতায়েন হতে দেখা গেছে। তাদের যেসব ছবি পাওয়া গেছে সেখানে হামাস ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির লোগো দেখা গেছে। সেনা প্রত্যাহারের পরপরই অনেক দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে নিজ এলাকায় ফিরে আসছেন। কেউ কেউ ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হেঁটে এসেছে। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন দুর্বল ও অপুষ্টিতে ভোগা। 
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!