শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ১২:০৬ এএম

সিইপিজেডে ভয়াবহ আগুন

৮তলা পর্যন্ত পুড়ে ছাই

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ১২:০৬ এএম

৮তলা পর্যন্ত পুড়ে ছাই

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকার কারখানায় লাগা আগুন রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভাতে কাজ করছে সিইপিজেড, বন্দর, কেইপিজেড ও আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের মোট ২০টি এবং নৌ ও বিমান বাহিনীর চারটি ইউনিট। পরে যোগ দিয়েছেন দুই প্লাটুন বিজিবি সদস্যও। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদামে আগুন লাগে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আগুনের তীব্রতায় ভবনের লোহা গলে খসে পড়তে শুরু করেছে ভবন। আগুনের শিখা এতটাই তীব্রতা ধারণ করেছে যে, এর কারণে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আশপাশের কারখানার ভবনগুলোও।

সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুস সুবাহান সংবাদমাধ্যমকে জানান, অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদামে দুপুর ২টার দিকে এই আগুন লাগে। অ্যাডামস তোয়ালে ও ক্যাপ এবং জিহং মেডিকেল সার্জিক্যাল গাউন তৈরির কারখানা। কারখানার ভবনটি আটতলা। দুটি কারখানার গুদামও সপ্তম তলায়। এখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয় বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস। পরে এই আগুন ধীরে ধীরে ষষ্ঠ ও পঞ্চম তলায় ছড়িয়ে পড়ে। ভবনটিতে মোট ৭০০ শ্রমিক কাজ করেন। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই কেউ আহত কিংবা অগ্নিদগ্ধ হননি। এ ঘটনায় কারও হতাহত হওয়ার আশঙ্কাও করছেন না তিনি।

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভেতরে দাহ্য পদার্থ ছিল। তাই আগুন নেভাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে আমাদের। ভেতরে কোনো শ্রমিক আটকে নেই বলে কারখানার মালিকপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন। তবে আমরা ভবনটির ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় আটকে পড়া ২৫ জনকে উদ্ধার করেছি। তারা ধোঁয়ায় আটকা পড়েছিলেন। আমরা তাদের নিরাপদে সরিয়ে এনেছি। কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে কিংবা কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। রাত ৯টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীর সদস্যরা আগুন নেভাতে কাজ করছিলেন। আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে সাত ঘণ্টা পরও তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি তারা। চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে ঘন কালো ধোঁয়া। আগুন দেখতে অনেকেই ভবনটির আশপাশে ভিড় করেছে। তাদের সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা সরিয়ে দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে এক নারী শ্রমিককে গাড়িতে করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। শ্রমিকদের ধারণা, ওই নারী আগুনের ধোঁয়ায় আহত হয়েছেন।

জিহং মেডিকেল কোম্পানিতে কর্মরত জোবেদা বেগম বলেন, আমি পঞ্চম তালায় কাজ করছিলাম। দুপুরে খাওয়ার পর ‘আগুন-আগুন’ বলে চিৎকার করে ওপর থেকে অনেককে নিচে নামতে দেখি। চিৎকার শুনে আমরাও সবাই দৌড়ে নিচে নেমে আসি। যে জায়গায় প্রথমে আগুন লেগেছে, সেখানে নারী শ্রমিকেরা অনুমতি ছাড়া যেতে পারেন না।

জিহং মেডিকেল কোম্পানির সুপারভাইজার ফাহিমুল মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, যখন আগুন লাগে, তখন আমি চতুর্থ তলায় ছিলাম। হঠাৎ জরুরি অ্যালার্ম শুনে নিচে নেমে আসি আমরা। কারখানাটিতে হাসপাতালে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও তোয়ালে তৈরি করা হতো।

এদিকে সিইপিজেড এলাকার অ্যাডামস ক্যাপ কারখানায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পরে যোগ দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গতকাল বিকেলে বিজিবি সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম ইপিজেডে একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগার ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করতে দুই প্লাটুন বিজিবি সদস্য যোগ দিয়েছেন।

ঝুঁকিতে আশপাশের ভবন: সিইপিজেড এলাকায় পোশাক কারখানায় লাগা আগুনের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। আগুন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ভবনে। আগুনের তীব্রতায় আশপাশের আরও কয়েকটি কারখানা ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আগুনের প্রচ- তাপে পাশের কয়েকটি কারখানার ভবন অতিরিক্ত গরম হওয়ায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কারখানাগুলোর অভ্যন্তরে পানি ছিটিয়ে শীতল রাখার চেষ্টা করছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ।

আগুন লাগা ভবনের পাশের কারখানা স্মার্ট জ্যাকেটের কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ বলেন, ‘আগুনের তাপ পার্শ্ববর্তী কারখানার ভবনে আঘাত করছে। ক্ষতি এড়াতে আমাদের কারখানার ভবনে পানি ছিটিয়ে শীতল করা হচ্ছে।’

আগুনের তীব্রতায় ভবনের লোহা গলে ইতিমধ্যে খসে পড়তে শুরু করেছে ভবন। আগুনের শিখা এতটাই তীব্রতা ধারণ করেছে যে, এর কারণে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আশপাশের কারখানার ভবনগুলোও।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আগুনের তীব্রতা আশপাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে আগুন নেভাতে মাঠে কাজ করছে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীসহ ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। ভবন থেকে ২৭ জনকে উদ্ধার করা হলেও প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

সিএমপির ইপিজেড থানার ওসি মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া বলেন, ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড নামের ওই কারখানায় লাগা আগুনের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। বর্তমানে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়েছে। মূলত জিনিসপত্র রাখার গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে কারখানাটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। ওখানে লোকজন ছিল না বলে জেনেছি। যারা নিচের তলায় ছিল, তারা বেরিয়ে এসেছে। কেউ কেউ হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ফায়ার ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। সহযোগিতা করছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!