*** উভয় সীমান্তে উত্তেজনা চরমে
গরুচোর সন্দেহে তিন বাংলাদেশিকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে ভারতীয় উগ্রবাদী কয়েক যুবক। এ নিয়ে চুনারুঘাট সীমান্তে ও ভারতের খোয়াই সীমান্তে উত্তেজনা চলছে। ভারতীয়দের দাবি, বাংলাদেশি তিন ব্যক্তি তাদের এখানে গরু চুরি করতে গিয়েছিল। এমন সন্দেহে তাদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের আত্মীয়-স্বজনের দাবি, তারা সীমান্ত এলাকায় পাতা কুড়োতে গিয়েছিল। এমন সময় ভারতীয়রা তাদের ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার ভোরে ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই জেলার বিদ্যাবিল সীমান্তে।
ভারতীয়দের হাতে নিহত বাংলাদেশিরা হলো চুনারুঘাট সীমান্ত গাজীপুর ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের মৃত আশ^ব উল্লার ছেলে জুয়েল মিয়া, বাসুল্লা গ্রামের কণা মিয়ার ছেলে প-িত মিয়া এবং কবিলাশপুর গ্রামের কুদ্দুছ মিয়ার ছেলে সজল মিয়া। নিহত সজল মিয়ার স্ত্রী মিনারা খাতুন জানান, তার স্বামী সীমান্তে প্রায়ই পাতা কুড়াতে যেত। বুধবার প্রতিদিনের মতো অন্যদের সাথে একইভাবে তারা সীমান্তে যান। পরে ফিরে না আসায় আত্মীয়-স্বজনের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হলে সীমান্ত এলাকায় তাদের খুঁজতে যান। এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়, গরুচোর সন্দেহে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে এবং নিহতদের কাছে বাংলাদেশি সিম পাওয়া গেছে। এর পরপরই নিহতদের আত্মীয় নিশ্চিত হন, ওই তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে অভিজ্ঞ মহলের অভিযোগ, এভাবে ধরে নিয়ে কাউকে পিটিয়ে হত্যা করা আন্তর্জাতিক আইন তথা মানবাধিকার লঙ্ঘন। অনুপ্রবেশের দায়ে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত; কিন্তু কাউকে হত্যা করা উচিত হয়নি। এদিকে ভারতীয়দের হাতে তিন বাংলাদেশি খুন হওয়ায় চুনারুঘাটের বাল্লা, গুইবিল, চিমটিবিল, সাতছড়ি ও কালেঙ্গা সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবির টহল জোরদার করতে দেখা গেছে। অপরদিকে ত্রিপুরা রাজ্যের প্রহড়মোড়া, বাছাইবাড়ি, দুর্গাবাড়ি, বিদ্যাবিল এলাকায় বিএসএফ কড়া পাহারা বসিয়েছে। এ রিপোর্ট দেখা পর্যন্ত নিহত ৩ বাংলাদেশির মরদেহ ভারতের খোয়াই জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ভারত থেকে বাংলাদেশিদের মরদেহ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি ও হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে।