মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসান আরিফ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৫, ১২:৩০ এএম

২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট

অগ্রাধিকারভিত্তিক ব্যয় কৃচ্ছ্রতায় প্রাধান্য

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৫, ১২:৩০ এএম

অগ্রাধিকারভিত্তিক ব্যয়  কৃচ্ছ্রতায় প্রাধান্য

  • নতুন যানবাহন ক্রয় এবং বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
  • শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ছাড়া নতুন ভবন নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ সীমিত
  • ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ ব্যয় বন্ধ থাকবে
  • ধীরগতির প্রকল্প থেকে বরাদ্দ হ্রাস করে দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের নির্দেশ

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট প্রণয়নে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে কৃচ্ছ্রসাধন, অগ্রাধিকার খাত নির্ধারণ এবং সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বাজেট-১) ড. জিয়াউল আবেদীনের স্বাক্ষরিত এ পরিপত্রে বলা হয়েছে, সরকারের অগ্রাধিকার খাতগুলো পর্যাপ্ত বরাদ্দ নিশ্চিত এবং বাজেট বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। এতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট (পরিচালন ও উন্নয়ন) প্রণয়নের জন্য বিস্তারিত নীতিমালা ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে বাজেট পরিপত্র জারি করা হয়েছে।

অতিরিক্ত বরাদ্দ নয়, মূল বাজেটের মধ্যেই সংকুলান: পরিপত্রে বলা হয়েছে, কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি করতে পারবে না। সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন করতে হবে মূল বাজেটে প্রদর্শিত ব্যয়সীমার মধ্যেই। প্রয়োজনে অগ্রাধিকারমূলক কার্যক্রমের জন্য একটি খাত থেকে অন্য খাতে বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করা যেতে পারে, তবে এর জন্য বাজেটের মোট ব্যয়সীমা অতিক্রম করা যাবে না।

কৃচ্ছ্রসাধনমূলক ব্যয়নীতি অব্যাহত থাকবে:

অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরেও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ব্যয় নিষিদ্ধ বা সীমিত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন ভবন নির্মাণে সীমাবদ্ধতা: শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ছাড়া নতুন আবাসিক ও অনাবাসিক ভবন নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ সীমিত থাকবে। শুধু ইতিমধ্যে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া কাজের জন্য বরাদ্দ রাখা যাবে।

যানবাহন ক্রয় বন্ধ:

মোটরযান, জলযান ও আকাশযান ক্রয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় করা যাবে না। তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনো যানবাহন প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যয় করা যাবে।

ভূমি অধিগ্রহণ:

পরিচালন বাজেটে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ ব্যয় বন্ধ থাকবে। উন্নয়ন বাজেটের অধীনে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে।

থোক বরাদ্দের ব্যবহার:

উন্নয়ন বাজেটে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ ও ‘থোক বরাদ্দ’ খাতের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রেও অর্থ বিভাগের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।

বিদেশ ভ্রমণ ও ওয়ার্কশপে ব্যয় সীমিত:

চলতি অর্থবছরে সরকারি অর্থে সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে অত্যাবশ্যকীয় ও সীমিত পরিসরে বিদেশ ভ্রমণ অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে করা যাবে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ও ২০২৫ সালের ২১ অক্টোবরের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

রাজস্ব ও ব্যয় প্রাক্কলনে বাস্তব তথ্যের ব্যবহার:

২০২৫-২৬ অর্থবছরের রাজস্ব ও মূলধনপ্রাপ্তির সংশোধিত প্রাক্কলনের জন্য ফরম-৭ ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে ২০২৩-২৪, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস এবং চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের রাজস্ব আদায়ের প্রবণতা বিবেচনা করে প্রাক্কলন প্রস্তুতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একইভাবে পরিচালন ব্যয়ের সংশোধিত প্রাক্কলনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী দুই অর্থবছরের ব্যয়ের প্রবণতা এবং চলতি বছরের বাস্তব ব্যয় বিবেচনা করতে হবে। বেতন-ভাতা সংক্রান্ত প্রাক্কলনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার দপ্তরের তথ্য যাচাই করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

উন্নয়ন বাজেটে গতি আনতে নির্দেশনা:

উন্নয়ন বাজেট ও সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) প্রণয়নের ক্ষেত্রে বৈদেশিক ঋণ-অনুদান, অগ্রাধিকার প্রকল্প ও সময়মতো সমাপ্তির লক্ষ্যে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন গতি পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। ধীরগতির প্রকল্প থেকে বরাদ্দ হ্রাস করে দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

অর্থ বিভাগ বলেছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং দুর্যোগ মোকাবিলা সংক্রান্ত প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

অননুমোদিত প্রকল্পে বরাদ্দ নয়:

পরিপত্রে স্পষ্ট বলা হয়েছে, অননুমোদিত কোনো প্রকল্প বা কারিগরি সহায়তা প্রকল্প সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। একই উদ্দেশ্যের ক্ষুদ্র প্রকল্পগুলো একত্রে ‘গুচ্ছ প্রকল্প’ হিসেবে প্রণয়ন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বাজেট প্রাক্কলনের সময়সীমা ও প্রেরণ প্রক্রিয়া: সংশোধিত বাজেট প্রাক্কলন ও সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২০২৫ সালের ৯ নভেম্বরের মধ্যে অর্থ বিভাগের বাজেট অনুবিভাগ-১/২, পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট সেক্টর ডিভিশনে পাঠাতে হবে। বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় অনুমোদিত কার্যবিবরণী সংযুক্ত করতে হবে।

বাস্তবায়ন পরিকল্পনা হালনাগাদ:

সংশোধিত বাজেট অনুমোদনের পর রাজস্ব আহরণ, ব্যয় পরিকল্পনা ও বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা (বিআইপি) হালনাগাদ করতে হবে। এই প্রক্রিয়ার সময়সীমা অর্থ বিভাগ পরে জানাবে।

স্পষ্টীকরণ ও যোগাযোগ:

পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সংশোধিত বাজেট সংক্রান্ত নীতিমালা ও দিকনির্দেশনা বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা বা স্পষ্টীকরণের প্রয়োজন হলে অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট বাজেট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারের এ ধরনের নির্দেশনাগুলো চলতি অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যয় কাঠামোকে শৃঙ্খলিত রাখার পদক্ষেপ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আহরণে লক্ষ্য অর্জনে চাপ থাকায় সরকার এখন ব্যয়ের ক্ষেত্রে কঠোরতা বজায় রাখছে। সংশোধিত বাজেট প্রণয়নের এ নির্দেশনাকে তারা দেখছেন রাজস্ব প্রবাহের বাস্তবতা এবং ঋণনির্ভর ব্যয় হ্রাসের প্রয়োজনীয়তার স্বীকৃতি হিসেবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!