ঢাকা সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

পুরান ঢাকায় মামুন হত্যাকাণ্ড 

৫ দিন পর মামলা, আসামি অজ্ঞাত

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ১২:৩৫ এএম

পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে (৫৫) প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার পাঁচ দিন পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় কারও নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত শনিবার নিহত মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার রীপা বাদফ হয়ে সূত্রাপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। গতকাল রোববার সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, তারিক সাইফ মামুন হত্যার ঘটনায় শনিবার তার স্ত্রী রীপা বাদফ হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ডিবি পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও মামলায় কেন অজ্ঞাত জানতে চাইলে ওসি বলেন, আসামি ধরা পড়েছে অস্ত্র মামলায়। হত্যা মামলায় তদন্তকারী অফিসার তদন্ত করে বের করবে। গত ১১ নভেম্বর তারিক সাইফ মামুন হত্যায় অংশ নেওয়া দুই শ্যুটারসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার দুই শ্যুটার হলেন ফারুক ওরফে কুত্তা ফারুক ও রবিন। গ্রেপ্তার বাকি তিনজন হলেনÑ ইউসুফ, রুবেল ও শামীম। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার ফারুক ও রবিন ছিলেন পেশাদার দুই শ্যুটার। গ্রেপ্তারের সময় হত্যাকা-ে ব্যবহৃত দুটি পিস্তল, হত্যাকা-ের পারিশ্রমিক হিসেবে নগদ টাকা ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

ডিবি জানায়, হত্যাকা-ের মূল পরিকল্পনাকারী রনি। রনি একসময় ছিলেন মুদি দোকানি, বর্তমানে কাফরুলের বাসিন্দা এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী। আন্ডারওয়ার্ল্ডের আলোচিত জুটি ইমন-মামুনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য এবং প্রকট। হত্যাকা-ের জন্য রনি নিজে ২ লাখ টাকা দেন এবং অস্ত্রও সরবরাহ করেন। মূল আন্ডারওয়ার্ল্ডের আধিপত্য বিস্তার নিয়েই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। রনি পলাতক। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

এর আগে, গত সোমবার (১০ নভেম্বর) পুরান ঢাকার সূত্রাপুর এলাকায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় তারিক সাইফ মামুনকে। স্বজনেরা জানান, পুরোনো একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে রাজধানীর আফতাবনগরের বাসায় ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা মামুনকে গুলি করে হত্যা করে। দুই বছর আগেও রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় ২০ বছরের বেশি সময় জেল খেটে ২০২৩ সালে জামিনে মুক্তি পান মামুন। জামিনের তিন মাসের মাথায় ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় একদল সন্ত্রাসী। তখন পাশ দিয়ে যাওয়া মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায় একটি গুলি লাগে। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভুবন মারা যান। এ ঘটনার পর পুলিশ বলেছিল, গুলি ছুড়েছিল কারাবন্দি শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের লোকজন।

ইমন ও মামুন একসময় ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার আতঙ্ক ছিলেন। তাদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। তারা দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি।