মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ১২:২৪ এএম

শেখ হাসিনার রায় ঘিরে উত্তেজনা

লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে দিনভর উত্তপ্ত ধানমন্ডি ৩২

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ১২:২৪ এএম

লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে  দিনভর উত্তপ্ত ধানমন্ডি ৩২

গণঅভ্যুত্থানে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে গতকাল সোমবার দুপুর থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ধানম-ি-৩২ এলাকা। গতকাল সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ জনতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া এবং শতাধিক সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিন সকাল থেকেই শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি-৩২ নম্বর বাড়ির অবশিষ্ট ধ্বংসাবশেষ গুঁড়িয়ে দিতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার সমাবেশ বাড়তে থাকে। বেলা ১১টার দিকে দুটি এক্সকেভেটর নিয়ে তারা বাড়িটির সামনে পৌঁছালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ বাধা দিলে দুপুর পৌনে ১টা থেকে শুরু হয় সংঘর্ষ ও দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী ও অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গতকাল সন্ধ্যার পরও পরিস্থিতি উত্তপ্ত অবস্থায় ছিল। রাসেল স্কয়ার থেকে মেট্রো শপিং মল পর্যন্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছিলেন। অন্যদিকে কলাবাগান, পান্থপথ, শুক্রাবাদ ও ধানমন্ডি লেকের পাশে বিক্ষোভকারীরা ছিলেন।

শেখ মুজিবুর রহমানের ৩২ নম্বর বাড়িটিকে আওয়ামী লীগের কেল্লা দাবি করে বুলডোজার দিয়ে এর বাকি অংশটুকু ভেঙে ফেলে খেলার মাঠ বানানোর দাবিতে বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও লাঠিাচার্জ এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

গতকাল দুপুর থেকেই জুলাই যোদ্ধাদের মিছিল-স্লোগানে এলাকাজুড়ে তৈরি হয় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি। বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি-৩২-এর দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। এতে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ধানমন্ডি, কলাবাগান, পান্থপথ ও সোবহানবাগ এলাকায় আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় পুলিশ ও ছাত্র-জনতার মধ্যে ইটপাটকেল, সাউন্ড গ্রেনেড আর ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। থেমে থেমে চলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ আর টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ।

এর আগে দুপুরে, ধানম-ির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বিধ্বস্ত বাড়ি ভেঙে খেলার মাঠ নির্মাণে এক্সকাভেটর নিয়ে আসা ছাত্র-জনতাকে ধাওয়া দিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। এ সময় ছাত্র-জনতা পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। বিপরীতে পুলিশকে অন্তত চারটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর ১টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ছাত্র-জনতাকে এক্সকাভেটর থেকে নামিয়ে বাঁশি বাজাতে বাজাতে ধাওয়া দেয়। ধাওয়া খেয়ে ছাত্র-জনতা সোবহানবাগ, কলাবাগান এবং পান্থপথের দিকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাসেল স্কয়ার মোড়ে অবস্থান নিলে তিন দিক থেকেই তাদের দিকে ইট-পাটকেল ছোড়ে ছাত্র-জনতা। পরে পুলিশ আবার ধাওয়া দিলে চারটি সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। দুপুর দেড়টার দিকে ছাত্র-জনতার একটি অংশ আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের সড়ক আটকে স্লোগান দিতে থাকে। তাদের চারপাশ ঘিরে রাখে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা ডিএমপির রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পুলিশের ব্যারিকেড ছিল। ছাত্র-জনতা সেটি ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। তাই আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। এ সময় তারা কিছু ঢিল ছোড়ে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

এক্সকাভেটর দিয়ে পরিত্যক্ত শেখ মুজিবের বাড়ি ভাঙার নেতৃত্বে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির উদ্দিন রিয়ন। তিনি বলেন, আমরা এই পরিত্যক্ত বাড়িটি ভেঙে একটি খেলার মাঠ নির্মাণের কর্মসূচি দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ বাঁধা দেয়। পরে সেনাবাহিনী আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি আরও বলেন, আমাদের সঙ্গে নানা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ যোগ দিচ্ছেন। আমরা আমাদের কর্মসূচি সফল করব।

এর আগে সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২-এর বিধ্বস্ত বাড়ি ভাঙতে সেখানে পৌঁছায় ছাত্র-জনতা। তবে সেনাবাহিনী ও পুলিশের বাঁধার কারণে এক্সকাভেটরগুলো মূল সড়ক থেকে ভেতরে নেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে সেখানে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে এক্সকাভেটর দুটি পাশের মেট্রো শপিং মলের সামনে রাখা হয়। এর পর থেকে ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২-এ প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ বারবার বাধা দিলে উত্তেজনা তৈরি হয়।

গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে স্কয়ার হাসপাতালের সামনে সংঘর্ষের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। টানা সাউন্ড গ্রেনেড ও ককটেল বিস্ফোরণে হাসপাতালের রোগী, কর্মী এবং স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার আগে হাসপাতালের ফটক নিরাপত্তার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়, ফলে অনেক স্বজন দীর্ঘসময় বাইরে আটকা থাকেন। এ ছাড়া বিক্ষোভের কারণে ধানমন্ডি, কলাবাগান, স্কয়ার হাসপাতাল, নিউ মার্কেট, মিরপুর রোড, ২৭ থেকে ৩২ নম্বর পর্যন্ত পুরো এলাকা অচল ছিল। ব্যারিকেড, জ্বালানি কাঠ ও ইটের স্তূপ ছিল রাস্তাগুলোয়। ব্যস্ত সড়কগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!