মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ১২:২৯ এএম

আবু হোসেন, আবু সাঈদের বড় ভাই

রায় কার্যকর হলেই প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ১২:২৯ এএম

রায় কার্যকর হলেই  প্রকৃত ন্যায়বিচার  প্রতিষ্ঠিত হবে

আজ ১৭ নভেম্বর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা হয়েছে। গত বছর জুলাই-আগস্টের সময়ে সংঘটিত হত্যাকা-, নির্যাতন ও দমন-পীড়নের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বহু শুনানি শেষে এ রায় এসেছে। এই রায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদ- দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদ- দেওয়া হয়েছে। রায়ে উল্লেখ আছে, আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদ-, একটিতে আমৃত্যু কারাদ- দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে। রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনের সাজা সহজ করে পাঁচ বছরের কারাদ-ের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজকের এই রায় বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থা এবং বর্তমান পরিস্থিতি থেকে আবারো প্রমাণিত যে, মানুষের ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। আজকের এই বাস্তবতা থেকে যেন বাংলাদেশের রাজনীতিবীদরা শিক্ষা নেয়। আর কেউ যেন এই দেশে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা না করে।

অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে যেসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকা-ে প্ররোচনা, উসকানি, ষড়যন্ত্র ও সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ। আবু সাঈদের ভাই হিসেবে তো অবশ্যই, একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেও আমি চাই এই রায়ের কার্যকরিতা যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন হোক। আজকাল অনলাইনে দেখা যায়, আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে অনেকে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছেন। কিছুদিন আগে শেখ হাসিনার পক্ষের একজন আইনজীবী বলেছেন, ‘আবু সাঈদের হত্যাকা-ের যে ভিডিও, সেটা নাকি এআই দিয়ে বানানো।’ কিন্তু কোনটা সত্য, তা দেশের মানুষ জানে। আমার ভাই আবু সাঈদের নির্মম হত্যাকা- ভিডিওতে ধরা পড়েছিল বলেই আজ আদালতে সত্য প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আদালত তো অবশ্যই উপযুক্ত প্রমাণ গ্রহণ করে কঠোর রায় দিয়েছেন, তার মানে এআই বা বানোয়াট ভিডিওর গল্প যে ভিত্তিহীন, তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মক্কেলের পক্ষে যুক্তি দেওয়া আইনজীবীর দায়িত্ব, কিন্তু মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা গ্রহণযোগ্য নয়। তার কথা অনুযায়ী যদি সেই ভিডিও সত্যিই এআই দিয়ে বানানো হতো, তাহলে তো বিজ্ঞ আদালতে শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ হতো না। দেশের জন্য জীবন দেওয়া এক তরুণের মৃত্যুকে নিয়ে এমন অসত্য প্রচার আমি প্রত্যাখ্যান করি।

বর্তমানে শেখ হাসিনা বিদেশে পলাতক রয়েছেন এটি সবাই জানে। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে কত সময় লাগবেÑ জানি না। তবে আমি চাই যত দ্রুত সম্ভব তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করা হোক। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার সময় তাদের একটি প্রতিজ্ঞা ছিলো, তারা জুলাই অপরাধীদের বিচার করবে। এখন অন্তর্বর্তী সরকার যদি এই বিচার দ্রুত কার্যকর করতে পারে, তাহলে তাদের দেওয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হবে।

তবে এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন। জুলাই অপরাধীদের বিচার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে, এটা ভালো খবর। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অপরাধী কিন্তু শুধু শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল কিংবা আবদুল্লাহ আল মামুন নন; পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়, ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতা, এমপি-মন্ত্রীসহ অনেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জুলাই হত্যাকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই ন্যায়বিচার সম্পূর্ণ করতে হলে শুধু কিছু ব্যক্তির সাজাই যথেষ্ট নয়। আমরা চাই দেশের আইন অনুযায়ী যেন সব অপরাধীকেই বিচারের মুখোমুখি করা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। অনেক পরিবার আমাদের মতো শোকের ভার বয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা যারা প্রিয়জন হারিয়েছি, তাদের জন্য এই রায় ন্যায়বিচারের একটি বড় পদক্ষেপ। তবে সব অপরাধীর বিচারের রায় কার্যকর হলেই প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমি আশা করি, বাংলাদেশের আদালত ন্যায়বিচারের পথে এগিয়ে যাবে। আমরা সবাই মিলে এমন একটি দেশ গড়ব যেখানে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিপীড়ন এবং স্বৈরাচারের জায়গা থাকবে না আর।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!