আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল তৃতীয় দিন শেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬৭ রানের লিড নিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে এক উইকেট হারিয়ে দিন শেষে ১৫৬ রান সংগ্রহ করেন তারা। এর আগে প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে অলআউট হয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। ২১১ রানে এগিয়ে থাকলেও আইরিশদের ফলোঅন করায়নি বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে রানের উৎসবেই মেতে ওঠেন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। মাহমুদুল হাসান জয় ও সাদমান ইসলাম মিলে উদ্বোধনীতে ১১৯ রানের জুটি গড়েন। ৬০ রান করে জয় আউট হলেও ব্যাটিংয়ে নৈপুণ্য দেখিয়ে যান সাদমান। মুমিনুলের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন এই ওপেনার। দিন শেষে সাদমান ৬৯ আর মুমিনুল ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন।
মিরপুরে তৃতীয় দিনের শুরুতে ৫ উইকেটে ৯৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে আয়ারল্যান্ড। এদিন বাকি ৫ উইকেট খুইয়ে তারা যোগ করেছে আরও ১৬৭ রান। ৭৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার তাইজুল। ২৪২ উইকেট নিয়ে এই ম্যাচ খেলতে নেমেছেন তিনি। এখন বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিবের সঙ্গে টেস্টে যৌথভাবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। দুজনেরই নামের পাশে এখন সমান ২৪৬ উইকেট। তবে সাকিবকে যেখানে খেলতে হয়েছে ৭১ টেস্ট, সেখানে ৫৭ টেস্টেই তার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন তাইজুল। আইরিশদের দ্বিতীয় ইনিংস বাকি থাকায় চলতি টেস্টেই সাকিবকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন তিনি। ৭ উইকেটে ২১১ রান নিয়ে লাঞ্চের পর খেলতে নামে আয়ারল্যান্ড। এক প্রান্ত আগলে থাকা লরকান টাকার ও জর্ডান নিল জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। বাংলাদেশ নতুন বল নেওয়ার পর তৃতীয় ওভারে ভাঙে জুটি। পেসার ইবাদত হোসেনের বলে টপ এজ হয়ে কভারে মুমিনুল হকের তালুবন্দি হন নিল। ৮৩ বলে ৯টি চারে তার রান ৪৯। থামে ১৪৫ বলে ৭৪ রানের জুটি। এরপর সফরকারীদের অলআউট করতে বেশি সময় নেয়নি স্বাগতিকেরা। আরেক পেসার খালেদের বলে অভিষিক্ত গ্যাভিন হোয়ে (১০ বলে ৪ রান) উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে ক্যাচ দেওয়ার পর তাইজুল ছাঁটেন হামফ্রিসকে (১৪ বলে ৪ রান)। ছয়ে নামা টাকার অপরাজিত থাকেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৫ রানে। তার ১৭১ বলের ধৈর্যশীল ইনিংসে চার ৭টি। বল হাতে তাইজুলকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া খালেদ ও আরেক বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ ২টি করে উইকেট নেন। এর আগে দিনের প্রথম সেশন ভালো কাটে আয়ারল্যান্ডের। তারা ৩১ ওভারে ২ উইকেট খুইয়ে যোগ করে ১১৩ রান।
প্রথম ঘণ্টায় বাংলাদেশকে হতাশ করে দ্রুত রান আনেন টাকার ও স্টিফেন ডোহেনি। এরপর ভূমিকম্পের কারণে খেলা বন্ধ থাকে তিন মিনিট। সে সময় ভয়ংকর ঝাঁকুনিতে পুরো মাঠে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ধাতস্থ হয়ে ফের খেলা শুরু হলে তিন বলের মধ্যে জোড়া আঘাত করে টাইগারদের স্বস্তিতে ফেরান তাইজুল। অভিজ্ঞ স্পিনারের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান আরেক অভিষিক্ত ডোহেনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান। ৭৭ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন চারটি চার। তার সঙ্গে টাকারের জুটি ছিল ১৫০ বলে ৮১ রানের। এক বল পর তাইজুলের আরেকটি দারুণ ডেলিভারিতে লাইন মিস করে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনও স্টাম্প হারান। তিনি খুলতে পারেননি রানের খাতা। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে উড়ন্ত শুরু পাইয়ে দিয়েছেন দুই ওপেনার।

