শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০২:১৯ এএম

বাজারে তেলে পুড়ছে হাত, বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০২:১৯ এএম

বাজারে তেলে পুড়ছে হাত,  বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ

হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম কেজিতে একলাফে বেড়েছে ৪০ টাকা। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। সরকারের অনুমতি ছাড়াই প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯ টাকা বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। দুই দিন আগেও যার কেজি ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা। একইসাথে ঊর্ধ্বমুখী সবজির বাজারেও স্বস্তি ফেরেনি। কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা কমলেও সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আসেনি। চালসহ বিভিন্ন পণ্যের বাড়তি দামে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন গড়পড়তা আয়ের মানুষ। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে রাজধানীর নবাবগঞ্জ, নিউমার্কেট, পলাশী, হাতিরপুল কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

হঠাৎ অস্থির পেঁয়াজের বাজার :

দেশের বাজারে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। কোনোরকম নিয়ম বা নিয়ন্ত্রণই কাজ করেনি নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে। সিজন শেষে মজুতও কমে আসছে এমন অজুহাতে, সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন পাইকার ও মজুতদাররা। কিন্তু একলাফে ৪০ টাকা বাড়তি দাম, কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতারা।

গতকাল সরেজমিনে বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৫০-১৬০ টাকা। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১৫০ টাকা এবং বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা করে। দেশি পেঁয়াজ ১৬০ টাকা, লাল আলু ২৫ টাকা, সাদা আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার আলু ৪০ টাকা, দেশি রসুন ৮০-১১০ টাকা, চায়না রসুন ১৭০-১৮০ টাকা, চায়না আদা ১৮০-২০০ টাকা, ভারতীয় আদা মানভেদে ১৪০-১৬০ দরে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের এক আড়তদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আজকের (গতকাল) তুলনায় আগামীকাল আরও বেশি দামে বিক্রি হবে। আমরা যেখান থেকে পেঁয়াজ ক্রয় করি সেখানে (পাইকারি হাটে) ৫৮০০ থেকে ৬০০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু করলে দাম স্বাভাবিকভাবে কমে যাবে।

খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ সংকটের কারণেই পুরোনো পেঁয়াজের দাম এমন চড়া হয়েছে। তাদের মতে, পাইকারি দাম বেশি থাকায় খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা গেলে দাম কিছুটা কমবে। আড়তদাররা জানান, ভারত ইতোমধ্যে রপ্তানি করার জন্য বন্দরগুলোতে পেঁয়াজ এনে রেখেছে, শুধু বাংলাদেশ আমদানির অনুমতি দিলেই দাম কমে যাবে।

তেল বেড়েছে লিটারে ৯ টাকা :

কোনো ঘোষণা ছাড়াই নীরবে ভোক্তা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছে আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এবার একলাফে লিটারে বাড়ানো হয়েছে ৯ টাকা। বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। ভোক্তা-সংশ্লিষ্টরা জানান, আগাম ঘোষণা ছাড়া এভাবে কূটকৌশলে দাম বাড়ানো চরম অন্যায়। সরকারের সংশ্লিষ্টদের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিলেন ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং সরকারের সংশ্লিষ্টরা। কোম্পানিগুলোর দাবি, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ছে। তাই সরকারকে অবহিত করেই দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ব্যবসায়ীরা আবেদন করেছেন। কিন্তু দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে বাজারে ঘুরে দেখা যায়, রূপচাঁদা, তীর, পুষ্টি, ফ্রেশসহ প্রায় সব ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। নিউমার্কেটে তেল কিনতে এসে, ফ্রেশ ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনে বাসায় ফিরছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী আজিজ। কত দাম নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে নতুন বাড়তি দরের তেল আসছে। কয়েকটি দোকান ঘুরে পরিচিত দোকানদারের কাছ থেকে আগের দরে, অর্থাৎ ৯২০ টাকায় নিয়েছেন। বোতলের গায়ে দাম লেখা ছিল ৯২২ টাকা। ওই মার্কেটে কয়েকটি দোকানে নতুন ৯৬৫ টাকা দরের তেল দেখা গেছে।

শীতের সবজি বাজারে এলেও দাম কমেনি :

সবজি এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। শীতের সবজি বাজারে এলেও ঊর্ধ্বমুখী দামে স্বস্তি ফেরেনি। কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা কমলেও কম দাম বলা চলে না। যদিও সবজির দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় টমেটো ১৫০-১৬০ টাকা, দেশি টমেটো ১২০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৬০-৭০ টাকা, দেশি গাজর ৬০-৭০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৭০-৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৭০-৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০-৯০ টাকা, শিম (প্রকারভেদে) ৬০-১৪০ টাকা, শালগম ৬০ টাকা, নতুন আলু ৮০-৯০ টাকা, পেঁয়াজ পাতা ১০০ টাকা, পেঁয়াজ কলি ১২০-১৬০ টাকা, দেশি শসা ৮০-৯০ টাকা, করলা ৮০-১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১০০-১২০ টাকা, পটল (হাইব্রিড) ৬০-৮০ টাকা, দেশি পটল ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, বরবটি ৮০-১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, মূলা ৫০-৬০ টাকা, কচুরমুখী ৭০-৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০-১২০ টাকা, ধনেপাতা (মানভেদে) ৮০-১৩০ টাকা, শসা (হাইব্রিড) ৭৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০-১২০ টাকা, চাল কুমড়া ৭০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, ব্রুকলি ৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।  আর প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা করে।

দাম কমেছে মুরগির :

কয়েক সপ্তাহ ধরেই মুরগির বাজার রয়েছে সহনীয় পর্যায়ে। দেশি মুরগি ছাড়া সব ধরনের মুরগির দাম কমেছে। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম এবং সব ধরনের ডিমের দাম অপরিবর্তিত। বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকা কেজি দরে, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা কেজিতে। ব্রয়লার মুরগি ১৫০-১৬৫ টাকা, কক মুরগি ২৪০-২৭০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৭৫-৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি ডজন মুরগির লাল ডিম ১১০ টাকা এবং সাদা ডিম ১০০-১০৫ টাকা, হাঁসের ডিম ২০০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হচ্ছে।

দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে দুই থেকে পাঁচ টাকা, কক মুরগির দাম কমেছে ৮-১০ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম কমেছে পাঁচ টাকা। তবে দেশি মুরগির দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। বিক্রেতারা বলেন, এখন সব মুরগির দামই প্রায় মাসখানেক ধরে কমের দিকেই আছে। তবে এই দাম থাকবে না, বেড়ে যাবে। স্কুলের পরীক্ষা শেষ হলেই দাম বাড়বে। পিকনিক হবে, আবার সামনে থার্টি ফার্স্ট আসছেÑ দাম তখন বেড়ে যাবে।

এ ছাড়া গতকাল বাজারে আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ প্রতি কেজি ১১০০-৩০০০ টাকা, রুই ৪০০-৬০০ টাকা, কাতল ৩৫০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৮০০-১৫০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, কৈ মাছ ২৫০-১২০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৮০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, বেলে মাছ ১০০০-১৪০০ টাকা, মেনি মাছ ৬০০-৮০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৫৫০-১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১২০০-১৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ৯০-১৩০ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৫৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৯০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মাসকলাইয়ের ডাল ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৪৫০-১৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা, খোলা চিনি ৯৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৩০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া এলাচ ৪৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১২৮০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১৩৫০ টাকা ও কালো গোলমরিচ ১১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!