দাদ বা রিংওয়ার্ম আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত একটি চর্মরোগ। নামের সঙ্গে ‘ওয়ার্ম’ থাকলেও এটি কোনো কৃমি দ্বারা নয়, বরং ফাংগাস সংক্রমণে হয়ে থাকে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না নিলে এটি শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
দাদের কারণ
- ফাংগাল ইনফেকশন (ডার্মাটোফাইট)
- শরীরে অতিরিক্ত ঘাম জমে থাকা
- টাইট ও অস্বাস্থ্যকর পোশাক ব্যবহার
- নোংরা তোয়ালে বা কাপড় ব্যবহার
- আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা
- পোষা প্রাণীর দেহে ফাংগাল সংক্রমণ
- দাদের লক্ষণ
- ত্বকে বৃত্তাকার বা অর্ধ-বৃত্তাকার লালচে দাগ
- দাগের মাঝখান তুলনামূলক ফিকে, চারপাশ উঁচু ও লালচে
- প্রচ- চুলকানি
- চামড়া খসখসে হওয়া
- মাথার ত্বকে হলে চুল পড়ে যাওয়া
- কারা বেশি ঝুঁকিতে
- শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা
- খেলোয়াড় বা যাদের বেশি ঘাম হয়
- ডায়াবেটিস রোগী
- যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম
- যারা নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মানেন না
- প্রতিরোধের উপায়
- প্রতিদিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় ব্যবহার করা
- শরীর সর্বদা শুকনো রাখা
- টাইট জামা এড়িয়ে চলা
- অন্যের তোয়ালে, জামা বা চিরুনি ব্যবহার না করা
- পোষা প্রাণীর নিয়মিত যতœ নেওয়া
- চিকিৎসা
স্থানীয়ভাবে অ্যান্টি-ফাংগাল ক্রিম ব্যবহার করা। বড় দাগ বা ছড়িয়ে গেলে ডাক্তারি পরামর্শে মুখে খাওয়ার ওষুধ।
স্টেরয়েডযুক্ত ক্রিম ব্যবহার এড়ানো উচিত, কারণ এতে রোগ আরও খারাপ হয়। চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী পুরো কোর্স শেষ করা জরুরি।
দাদ কোনো মারাত্মক রোগ নয়, তবে এটি অস্বস্তিকর এবং অন্যদের মধ্যে সহজেই ছড়ায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এটি সহজেই নিরাময়যোগ্য। তাই দাদ হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সর্বোত্তম।
ডা. শেখ শিমুল রহমান
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ
চেম্বার: আলোক মাদার এন্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর-৬, ঢাকা।