সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আতিকুল ইসলাম খান শাওন

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৫:৩৯ এএম

কোডিং থেকে কাস্টমার সাপোর্ট সবক্ষেত্রে এআই এখন সহযাত্রী

আতিকুল ইসলাম খান শাওন

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৫:৩৯ এএম

কোডিং থেকে কাস্টমার সাপোর্ট সবক্ষেত্রে এআই এখন সহযাত্রী

রাত ১টা, ঢাকার এক ছোট ফ্ল্যাটে টেবিল ল্যাম্পের আলোয় বসে আছেন তরুণ ডেভেলপার তাসনিম হোসেন। ডেডলাইনের চাপ, চোখে ক্লান্তি। হঠাৎ স্ক্রিনে ভেসে ওঠে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) এর প্রস্তাব: ‘এই ফাংশনে একটি ‘এজ কেস’ বাদ পড়েছে, এভাবে সংশোধন করলে আর ক্র্যাশ হবে না।’ তাসনিম হাসে, এ যেন এক ‘নীরব সহকর্মী’; যে ভুল ধরিয়ে দেয়, সমাধানের রাস্তাও দেখায়। বাংলাদেশে হাজারো তাসনিমের কাজকে সহজ করতে, সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে এআই এমনভাবেই উপকারী হয়ে উঠছে। প্রযুক্তির দৈনন্দিন কাজে এআই এর এই সহযাত্রী ভূমিকা নিয়েই লিখেছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও সফটবিডি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম খান শাওন।

ডেভেলপমেন্টে এআই সহযাত্রী, প্রতিযোগী নয়

এআই টুল যেমন গিটহাব কো-পাইলট, চ্যাটজিপিটি কোড সাজেশন দেয়, রিফ্যাক্টরিং আইডিয়া দেয়, এমনকি ডকুমেন্টেশনও তৈরি করে। ডেভেলপারের সৃজনশীলতা সেখানে থামে না, বরং বাড়ে। ক্লান্তিকর কাজ এআই করে দেয়, মানুষ ফোকাস করে ‘আর্কিটেকচার’ ও সমস্যা সমাধানে। এক কথায়, ‘রিপিটেড টাস্ক’ ডেভেলপারকে আর বার বার করতে হয় না। তাই এআই তাকে দ্রুততর ও স্মার্ট বানায়।

টেস্টিংয়ে এ আই ভুল হওয়ার আগেই সতর্কতা

স্বয়ংক্রিয় ইউনিট বা ইন্টিগ্রেশন টেস্ট কেস জেনারেশন, পূর্বের বাগ ডেটা দেখে রিস্ক এসেসমেন্ট, আর ইউজার ইন্টারফেস (ইউআই) বা ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (ইউএক্স) এ ব্যবহারকারীর আচরণ সিমুলেশন; এই তিনটিতেই এআই এখন শক্তিশালী। ফলে রিলিজ দ্রুত হয়, গুণগত মানও থাকে উচ্চ। স্টার্টআপ হোক বা এন্টারপ্রাইজ, সবার জন্যই বিষয়টি লাভজনক। 

সাপোর্টে এআই ২৪/৭ ‘মানবিক’ সহায়তা

মাঝরাতে গ্রাহক প্রশ্ন করলে এআই চ্যাটবট তাৎক্ষণিক উত্তর দেয়, টিকেট ক্যাটাগরাইজ করে, প্রয়োজনে মানব এজেন্টে এস্কেলেট করে। লক্ষ্য একটাই, মানুষের সময় বাঁচানো, কিন্তু মানুষের ‘সহমর্মিতা’ বজায় রাখা। ভালো ট্রেনিং দিলে এআই শ্রদ্ধাশীল, সহানুভূতিশীল, সংক্ষিপ্ত আচরনের ধরনও শিখে ফেলে।  

সুবিধা বনাম চ্যালেঞ্জ 

এআই এর সুবিধাগুলোকে সংক্ষেপে বললে সময় ও অর্থ সাশ্রয়, গতি ও মান উন্নয়ন, ডেভেলপারদের সৃজনশীল কাজের সময় পাওয়ার মতো বিষয়গুলোকে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। অন্যদিকে, চ্যালেঞ্জ তো কিছু রয়েছেই। ডেটার গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা, স্কিল- আপস্কিলিং এর প্রয়োজনীয়তা এবং ‘এআই বলেছে’- এই অন্ধ নির্ভরতার মতো চ্যালেঞ্জগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি একটি উদাহরণ পাওয়া গেছে যেখানে এক ব্যক্তি এআই এর পরামর্শ অনুযায়ী ওষুুধ সেবন করে প্রায় মারা যাচ্ছিলেন। তাই এআইকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এআই হবে আপনার ‘সহায়ক’, আপনার ‘একমাত্র’ না।

যেভাবে শুরু করবেন : বাংলাদেশি টিমের জন্য ছোট রোডম্যাপ

ছোট পরিসরে শুরু করতে পারেন। এক বা দুইটি টিমে পাইলট চালান, কোডিং সহায়তা ও টেস্টিং অটোমেশন নিন। সংবেদনশীল কোড বা ডেটা শেয়ার করার আগে নীতি ঠিক করুন। ডেভেলপারদের প্রম্পট-ইঞ্জিনিয়ারিং, এমএল বেসিকস শেখানোর মাধ্যমে আপস্কিলিং করুন।স্প্রিন্ট ভেলোসিটি, বাগ লিকেজ, রিলিজ সাইকেল; সব কেপিআই (কী পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর) আগে-পরে তুলুন।

মানবিক স্পর্শও জরুরি

এআই লিখতে পারে, কিন্তু অনুভব করতে পারে না; এই সত্য মাথায় রাখুন। ব্যবহারকারীর কষ্ট, ভাষার সূক্ষ্মতা, সংস্কৃতির ভিন্নতা; এসব শুধু মানুষে বোঝে। তাই ‘মানবিক বিচার’ই শেষ কথা। এআইকে পাশে নিয়ে মানুষই তৈরি করবে দায়িত্বশীল সফটওয়্যার।

এআই কোনো যাদুর কাঠি নয়, এটি এক নিবেদিত সহকর্মী; যে দ্রুত, নির্ভুল ও নিঃশব্দে কাজ করে। যে টিম ভেবেচিন্তে, নিয়ম মেনে এবং মানবিকতা বজায় রেখে এআই  ব্যবহার করবে, তারাই আগামী দিনের সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে নেতৃত্ব দেবে। আজই ছোট্ট এক পদক্ষেপ নিন, আগামীকাল বড় সাফল্য আপনার হাতের মুঠোয়। 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!