বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৫, ০২:০৪ এএম

সাড়ে ৮ লাখ ঘুষ দিয়ে পিয়নের চাকরি

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৫, ০২:০৪ এএম

সাড়ে ৮ লাখ ঘুষ দিয়ে  পিয়নের চাকরি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার শ্রীকর্ণদীঘি উচ্চবিদ্যালয়ে সাড়ে আট লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে পিয়ন পদে চাকরি নিয়েছিলেন মাসুদ রানা। যোগ দেওয়ার দেড় বছর পার হলেও নিয়োগসংক্রান্ত জটিলতায় তার বেতন-ভাতা হয়নি। অবশেষ ঘুষের টাকা ফেরতের দাবিতে তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য (মেম্বর) সাইফুল ইসলামকে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে। গত রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে দুপক্ষের দেন-দরবারের স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা লিখে নেওয়ার পর সাইফুল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পিয়ন মাসুদ রানার বাড়ি উপজেলার ঘোলকুড়ি গ্রামে। সাইফুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তিলকপুর ইউপির সাবেক সদস্য এবং নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা।

মাসুদ রানা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। জমি ও গরু বিক্রি করে সাড়ে আট লাখ টাকা দিয়ে চাকরি নিয়েছি। ভুল নিয়োগ বোর্ডের কারণে চাকরিতে যোগ দেওয়ার দেড় বছরেও এমপিওভুক্ত হইনি। ওই নিয়োগ বোর্ডে কখনো আমার এমপিওভুক্তি হবে না। নিয়োগ পরীক্ষার ২৫ দিন আগে মেম্বর সাইফুল ইসলাম আমাকে বাড়িতে ডেকে নেন। সেই সময় সেখানে বিদ্যালয়ের সভাপতি মাজেদুল রহমানের উপস্থিতিতে সাড়ে ছয় লাখ টাকা সাইফুলের হাতে দিয়েছি।’

মাসুদ রানা বলেন, ‘এরপর তিলকপুর বাজারের সভাপতি মাজেদুল ইসলাম ও সাইফুল আমাকে ডেকে নিয়ে আরও দুই লাখ নিয়েছেন। নিয়োগ বোর্ড বিধিসম্মত না হওয়ায় একাধিকবার অনলাইনে আবেদন করেও এমপিওভুক্তি হয়নি। সাইফুলের কাছে ঘুষের সাড়ে আট লাখ টাকা চাইলে নানা টালবাহানা শুরু করেন। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, একাডেমিক সুপারভাইজারকে জানিয়েছি। তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘গত রোববার রাতে সাইফুল মোটরসাইকেল নিয়ে শ্রীকর্ণদীঘি মোড়ের দোকানে ওষুধ কিনতে আসেন। আমরা তখন সাইফুলকে ধরে দোকানে বসিয়ে রেখে ঘুষের সাড়ে আট লাখ টাকা ফেরত চাই। সাইফুল প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। ঘুষের টাকা বিদ্যালয়ের সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন ও সাইফুল ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। পুলিশের উপস্থিতিতে স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা লিখে নেওয়ার পর তাকে রাত ১২টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ সাইফুলকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে।’

গত সোমবার দুপুরে সাইফুল ইসলামকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে। তবে সাইফুলের স্ত্রী তাহমিদা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীর মধ্যস্থতায় বিদ্যালয়ের সভাপতি মাজেদুল ইসলাম টাকা নিয়েছেন। অথচ তারা আমার স্বামীকে রাতে আটকে রেখে মারধর করে তার কাছে স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা লিখে নিয়েছে।’
বিদ্যালয়ের সভাপতি মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিএনপি করতাম। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে স্থানীয় এমপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি হয়েছি। একই সঙ্গে বিদ্যালয়ে তিনটা নিয়োগ দিয়েছি। আমি একটি টাকাও ছুঁয়ে দেখিনি। বিধিসম্মতভাবে নিয়োগ বোর্ড হয়নি। এ কারণে বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগকৃত তিন কর্মচারীর কারো এমপিওভুক্ত হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাইফুল আমাকে পিয়ন মাসুদ রানার নিয়োগের জন্য কোনো টাকা দেননি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন একদিন আমাকে সঙ্গে নিয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যান। সেখানের নতুন কর্মচারীদের নিয়োগসংক্রান্ত ব্যাপারে অফিসের কর্মচারী আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ দুলালকে দুই লাখ দিয়েছিলেন।’ টাকা কোথায় পেলেন প্রধান শিক্ষক এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেটা আমি জানি না।’

প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি নিয়োগ বাণিজ্যে সর্ম্পকে কিছুই জানি না। তখন আওয়ামী লীগের নেতারা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম আমাকে কোণঠাসা করে বিদ্যালয়ে তিনটি নিয়োগ দিয়েছিলেন। আমি শুধু সভাপতিকে সঙ্গে নিয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ দুলালকে দুই লাখ টাকা দিয়েছি। নিয়োগ বোর্ডের জন্য এ টাকা দিতে হয়। সেই সময় নিয়োগ বোর্ড বিধিসম্মত হয়নি। এ কারণে তিন কর্মচারী এমপিভুক্ত হয়নি। সেই তিন পদে আবার নতুন নিযোগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।’
আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে চাকরি করেন। তিনি শ্রীকর্ণদীঘি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে কেউ টাকা দেননি।’

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!