রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ) হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হত্যা মামলায় তিন আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১৬ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
রিমান্ডে নেওয়া তিন আসামি হলেন- তারেক রহমান রবিন, রিজওয়ান উদ্দিন ওরফে অভিজিৎ বসু (৩১), ও মো. নান্নু কাজী (৩৩।
আদালতে হাজির করার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান তাদের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক সাত দিন করে রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন। এ সময় আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
৯ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেট সংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে সোহাগকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তাকে হত্যার পর নিথর দেহের ওপর কয়েকজন যুবক লাফাচ্ছেন।
ঘটনার পর কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়—একটি হত্যা মামলা, অপরটি অস্ত্র মামলা।
মামলার এজাহারে লাল চাঁদের বোন উল্লেখ করেন, লাল চাঁদ বংশাল থানা এলাকার রজনী বোস লেন–সংলগ্ন মসজিদের পাশে দীর্ঘদিন ধরে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসা করতেন। ব্যবসায়িক বিভিন্ন বিষয়সহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আসামিদের সঙ্গে লাল চাঁদের বিরোধ চলছিল। এর জেরে আগেও আসামিরা লাল চাঁদের ভাঙারির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের গুদামে তালা দিয়েছিলেন। তার ভাইকে এলাকাছাড়া করতে বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছিলেন আসামিরা।
ঘটনার দিনের বর্ণনায় এজাহারে বলা হয়, সেদিন (৯ জুলাই, বুধবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে নাম উল্লেখ থাকা ১৯ আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ আসামি বংশালে লাল চাঁদের সোহান মেটাল নামের ভাঙারির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করেন।
তখন তাঁদের সঙ্গে ধারালো দা, প্লাস্টিকের পাইপ, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা, সিমেন্টের কংক্রিট, ইট, পাথরের টুকরা ছিল। আসামিরা লাল চাঁদকে দোকান থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করেন।
মারধর করে টেনেহিঁচড়ে লাল চাঁদকে মিটফোর্ড হাসপাতালের ভেতরে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে আসামিরা লাল চাঁদকে এলোপাতাড়িভাবে লোহার রড, ভারী লাঠি এবং সিমেন্টের ব্লক–ইট দিয়ে আঘাত করেন। আঘাতে তার মাথার দুই পাশে গুরুতর জখম হয়। এ ছাড়া লাল চাঁদের ডান কান, ডান চোখের ওপরে, বাঁ হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে জখম করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :