ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

দগ্ধ সায়েবার মা সুরভী

‘আম্মু বলে চিৎকার করে দৌড় দেয় মেয়েটা আমার’

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৫, ১২:২৭ এএম

‘স্কুল ছুটির পর সায়েবা দোলনায় খেলছিল। ও আমাকে দেখে ডেকেছিল, জোরে আওয়াজ পেয়ে কলেজ মাঠে আম্মু বলে চিৎকার করে দৌড় দিয়েছিল মেয়েটা আমার। তারপর আগুনের মধ্যে পড়ে যায়। ওর শরীরের পেছনের ২২ শতাংশ পুড়ে গেছে।’ বলছিলেন মাইলস্টোন স্কুলের ক্লাস ফোরের শিক্ষার্থী শেখ সায়েবা মেহেজাবিনের মা শারমিন ইয়াসমিন সুরভি। 

তিনি বলেন, ‘সায়েবারা চারজন ছিল দোলনায়। আমার চোখের সামনে ব্লাস্টটা হয়। আমি সায়েবাকে আনতে স্কুলে গিয়েছিলাম। ও আমাকে দেখে ডাক দিয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যেই বিকট শব্দে আগুন লেগে গেল।’ গতকাল বুধবার দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পঞ্চম তলায় পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডের  দরজার সামনে বসে ছিলেন শারমিন।

তিনি বলেন, ‘সায়েবার শরীরের পেছনের ২২ শতাংশ পুড়ে গেছে। জোরে আওয়াজ পেয়ে কলেজ মাঠে আম্মু বলে চিৎকার করে দৌড় দিয়েছিল। সেখানে এক লোক এবং এক শিক্ষক গায়ে পানি দিয়ে আগুন নিভিয়েছে। ওই লোক এবং শিক্ষক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। বিস্ফোরণের পর আমি মেয়েকে খুঁজে পাইনি। ছোট ছেলে সাদকে কোলে নিয়ে দৌড়াচ্ছিলাম। দোলনার কাছে মেয়ের ব্যাগ দেখতে পেয়েছিলাম, কিন্তু মেয়ে নাই। ব্যাগ নিতে যেতে পারিনি, যেতে দিচ্ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরে একজন ফোন করে বলে, সায়েবা লুবানা হাসপাতালে আছে। এরপর ফোন করে বলেছে, ঢাকা মেডিকেলে আনতেছে। তখনো বড় ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না, সেও মাইলস্টোনে ক্লাস নাইনে পড়ে। তবে সে আগে পরীক্ষা দিয়ে বাসায় চলে গিয়েছিল। বাসায় গিয়ে ছেলেকে পেয়েছি।’ 

শারমিন জানান, উত্তরা তুরাগ থানার খালপাড়ে বাসা তাদের। তিনি আবেগঘনভাবে বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সায়েবা বলেছে, আম্মু তুমি দেরি করেছ কেন! আমি পাঁচ মিনিট লেট করেছিলাম। আমি দেরি না করলে আমার মেয়ে আজ ভালো থাকত।’