ঢাকা শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ‘গোপন বৈঠক’

৫ দিনের রিমান্ডে মেজর সাদিকুলের স্ত্রী

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০১:৪৯ এএম

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় সুমাইয়া জাফরিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

এ সময় আদালতের অনুমতি নিয়ে সুমাইয়া তাহমিদ জাফরিন বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ওখানে গিয়েছিলাম। ওখানে কী ধরনের কাজ হচ্ছিল, সে সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। আমাকে রিমান্ড দিয়েন না স্যার (বিচারক)।  আমি কোনো অন্যায় কাজ করিনি।’ 

রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গোপন বৈঠকের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় মেজর সাদেকুলের স্ত্রী ও অপারেশন ঢাকা ব্লকেডের সক্রিয় এডমিন সদস্য সুমাইয়া তাহমিদ জাফরিন এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ও অপারেশন ঢাকা ব্লকেডের ম্যানেজমেন্ট সদস্য আদনান বিন আব্দুল্লাহ চৌধুরীর বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সুমাইয়া জাফরিন মেজর সাদিকুলের স্ত্রী। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসংলগ্ন একটি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ‘গোপন বৈঠকের’ সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে জাফরিনকে গত বুধবার হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মেজর সাদিকুল হকও এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সেনা হেফাজতে রয়েছেন।

পুলিশ ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সুমাইয়া জাফরিনকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে সুমাইয়া জাফরিনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি আসছিল। পরে মিরপুর ডিওএইচএসের একটি রেস্তোরাঁ থেকে তাকে ডিবি হেফাজতে আনা হয়।

গত ১৩ জুলাই রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। তাতে বলা হয়, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরাসংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তারা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশ থেকে লোকজন এসে ঢাকায় সমবেত হবেন। তারা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন। তারা সেখানে এসব ষড়যন্ত্র করছিলেন।

গত ৩১ জুলাই সেনাসদরের এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, ওই মেজরকে সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরদিন ১ আগস্ট আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠা ওই সেনা কর্মকর্তাকে ১৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরা থেকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।