রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৫, ০২:১৬ এএম

শিল্পের উষ্ণতা নিয়ে ফিরল দেশ গ্যালারি

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৫, ০২:১৬ এএম

শিল্পের উষ্ণতা নিয়ে ফিরল দেশ গ্যালারি

বাংলাদেশের শিল্পমহলের পরিচিত না দেশ আর্ট গ্যালারি। মাঝে কিছুদিন এর কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও আবার নতুন করে শুরু হলো এর পথচলা। দেশ আর্ট গ্যালারির জন্মের সঙ্গে এই জনপদের সংগ্রামী ঐতিহ্যের নিবিড় যোগ আছে।

১৯৬৯ সালে এ দেশের মানুষের স্বাধিকারের লড়াই প্রবল গতিবেগ লাভ করে। সে সময় জনগণের মুক্তির স্পৃহার স্বরূপ প্রকাশ পায় বহুবিধ সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে। তৎকালীন গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী আকাক্সক্ষার সূত্র ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশ আর্ট গ্যালারি। গ্যালারির নাম ‘দেশ’ হওয়ায় এটি অনুমিত যে, এর মধ্যে নিহিত আছে স্বদেশপ্রেমের চিন্তাবীজ। 
শিল্পপ্রেমী ব্যক্তিত্ব ইউসুফ সাঈদের উদ্যোগে ১৯৬৯ সালে দেশ আর্ট গ্যালারির যাত্রা শুরু হয়। এ দেশের গুরু গ্রাহ্য পেইন্টারদের কাজের পাশাপাশি নতুন শিল্পীদের কাজের প্রদর্শনী ও বিক্রির মধ্য দিয়ে মানুষের শিল্পরুচি প্রসারণে দেশ আর্ট গ্যালারি তখন থেকেই অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে।

নানাবিধ প্রতিকূলতার কারণে দেশ আর্ট গ্যালারির কর্মকা- বহুদিন স্তিমিত হয়ে পড়েছিল। গ্যালারি সংশ্লিষ্টজনের পরিবারের উদ্যোগে আবার এ প্রতিষ্ঠান নবজন্ম লাভ করল। এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার রাজধানীর বারিধারার ১২ নং সড়কে অবস্থিত দেশ আর্ট গ্যালারি পরিণত হয় শিল্পতীর্থে।

গ্যালারি পরিচালনার সামনের সারির ব্যক্তিত্ব শিল্পজন সাবিনা জোহা খান উপস্থিত সুধীজনের উদ্দেশে বলেন, “আমার বাবা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শহীদ ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা। ’৬৯-এর ছাত্র আন্দোলনে পাকিস্তান আর্মির গুলিতে যিনি শহিদ হন। এ কারণে এ কথা বলা অসংগত নয় যে শহিদ শামসুজ্জোহার ঐতিহাসিক আত্মদানের সঙ্গে যোগ রয়েছে দেশ আর্ট গ্যালারির ইতিহাস। আমি ছোটবেলা থেকেই দেখেছি পরিবারের সদস্যদের শিল্পের সঙ্গে বসবাস। দেশ আর্ট গ্যালারির আদি কর্ণধার আমার খালু ইউসুফ সাঈদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমি গ্যালারিটির পুনর্জন্মের উদ্যোগ নিয়েছি। এর জন্য শিল্পের সঙ্গে পথচলার নতুন ও আগের ঐতিহ্যবাহী শেকড় তাৎপর্যবহ ও স্মরণীয় করে রাখার জন্য বর্তমান এই প্রদর্শনী সুপরিকল্পিতভাবে সাজানো হয়েছে।’

এই উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে দুটি ভাগ আছে। দেশবরেণ্য শিল্পী জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, এস এম সুলতানÑ এই শিল্পগুরুদের দুর্লভ শিল্পকর্মের ধারাবাহিকতায় উপস্থাপন করা হয়েছে পঞ্চাশের দশকের অগ্রগণ্য শিল্পী ঐতিহ্য। এর পাশাপাশি আছে সমকালীন শিল্পীদের কাজ। 

বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী উপস্থিত ছিলেন এ আয়োজনে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্মের ঐতিহ্যের সঙ্গে যোগ আছে ’৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের। এই দেশ আর্ট গ্যালারি তাই বাংলাদেশের চেতনাবাহী একটি শিল্পতীর্থ। এখানের শিল্পকর্ম এই বাংলাকে নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করবে। একই সঙ্গে ঐতিহ্য ও আধুনিকতা এই দুইয়ের ধারক হতে চলেছে দেশ আর্ট গ্যালারি।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী গৌতম চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘চিত্রকলা সব সময় প্রকাশের উপলক্ষ খুঁজে থাকে। এই গ্যালারি তাই শিল্পজনদের পদচারণে মুখর থাকবে সারা বছর। শিল্পীদের নিত্য-নতুন কাজের সুবাদে এটি শিল্পজনদের নিজেদের অঞ্চল হয়ে উঠবে।’

শিল্পী কনকচাঁপা চাকমা অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে বলেন, ‘দূতাবাস এলাকায় অবস্থিত এ গ্যালারি শিল্পের বাজার বিস্তারে সময়োপযোগী ভূমিকা রাখবে। শহরে যখন ট্রাফিক জ্যামের কারণে পর্যটকদের বিঘœ ঘটে চলাচলে। এ এলাকার একটি গ্যালারি তখন তাদের উপযুক্ত চাহিদা পূরণে কার্যকর হবে। আমি এই গ্যালারির জন্য আগাম সুবার্তা জানিয়ে রাখতে চাই।’

সব মিলিয়ে নতুন ও আগের শিল্পীদের কাজের নান্দনিকতায় ফিরেছে দেশ আর্ট গ্যালারি। নবীনের সঙ্গে যোগ হয়েছে গর্বের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার। শিল্পের পথচলায় এভাবেই সমকালে নিজেদের দৃপ্ত পদছাপ রাখতে চলেছে দেশ আর্ট গ্যালারি। শিল্পবোদ্ধাদের জন্য এ এক আনন্দের ক্ষণ। শনিবার দেশ গ্যালারি পুনর্জন্ম উপলক্ষে আয়োজিত এ মিলনমেলা তাই মুখরিত ছিল পুরোমাত্রায় শিল্পের জয়ধ্বনিতে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!