- সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আনসার ও পুলিশ সদস্য, দর্শকসহ অন্তত ৫০ আহত
- পাঁচ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে বিক্রি করা হয় ৩০ হাজারের বেশি টিকিট
চরম অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলার কারণে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা স্থগিত করেছে প্রশাসন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ দর্শকরা স্টেডিয়ামে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পাশাপাশি টানটান উত্তেজনার সৃষ্টি হয় পুরো মাঠজুড়ে। এ ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আনসার ও পুলিশ সদস্য, দর্শকসহ অন্তত ৫০ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
গতকাল বিকেলে নির্ধারিত ছিল রামু ও টেকনাফ উপজেলার মধ্যকার ফাইনাল খেলা। কিন্তু ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি টিকেট বিক্রি হওয়ায় বিকেলে কয়েক হাজারো দর্শক গেট ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দর্শকদের সরানোর চেষ্টা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি স্থগিত করা হয়। এ ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠের ভেতর থেকে লোকজন সরানোর চেষ্টা করলে ধাক্কাধাক্কি ও লাঠিচার্জ হয়। এরপর বিক্ষুব্ধ দর্শকেরা গ্যালারি, দরজা-জানালার কাচ ও প্রেসবক্স ভাঙচুর করেন। বাইরে কাঠ ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে ১০ থেকে ১২ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
দর্শকেরা অভিযোগ করেন, স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা প্রায় পাঁচ হাজার হলেও ফাইনালের জন্য বিক্রি করা হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি টিকিট। নির্ধারিত ৫০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকায়। বেলা দুইটার মধ্যেই গ্যালারি পূর্ণ হয়ে যায়। পরে কয়েক হাজার দর্শক বাইরে ভিড় করলে গেট ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত টিকিট বিক্রির কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে পুলিশের কয়েকজন সদস্যও আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারের মানুষ ফুটবলপ্রেমী। ফাইনাল দেখতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন আসেন। কিন্তু স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা মাথায় রেখে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
স্টেডিয়াম পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ম্যাচ শুরুর আধা ঘণ্টা আগে গেট ভেঙে কয়েক হাজার দর্শক মাঠে ঢুকে পড়েন। এতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় এবং ম্যাচটি আর আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি ও বেশি দামে টিকিট বিক্রির বিষয়টি তদন্ত করা হবে। নতুন তারিখ পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টে জেলার বিভিন্ন উপজেলা একাদশ অংশ নেয়।