শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ১১:৪৬ পিএম

নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী  সুশীলা কার্কির শপথ গ্রহণ 

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ১১:৪৬ পিএম

নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী  সুশীলা কার্কির শপথ গ্রহণ 

নেপালের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে গতকাল শুক্রবার রাতে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি শপথ নিয়েছেন। দিনভর টানাপোড়েন ও আলোচনা শেষে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছার পর সুশীলা কার্কির শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশটির রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অচলাবস্থার অবসান হলো। নেপালের সংবাদমাধ্যম খবর হাব এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকেই পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছিল। এটি ছিল জেন-জি বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবি। একই সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক দলও পার্লামেন্ট ভাঙার দাবি তুলেছিল। অবশেষে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওডেল এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে সম্মত হন।

সূত্র জানিয়েছে, প্রথমদিকে প্রেসিডেন্ট পাওডেল শর্ত দিয়েছিলেন, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পরেই সুশীলা কার্কিকে নিয়োগ দেওয়া হবে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান জনচাপ ও আন্দোলনকারীদের শীতল নিবাস ঘেরাওয়ের হুমকির মুখে তিনি অবস্থান পরিবর্তন করেন।

একটি সূত্রের মতে, প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিচ্ছেন এবং সুশীলা কার্কিকে সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পাঠ করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরপর শীতল নিবাসে দুটি গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রস্তুত করা হয়। একটি হলো পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার জন্য, অপরটি সুশীলা কার্কিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের জন্য।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলোÑ সুশীলা কার্কি নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি ছিলেন। এবার তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে এলেন এমন এক প্রেক্ষাপটে, যখন দেশজুড়ে তরুণদের আন্দোলন রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনার চাপ সৃষ্টি করেছে।

প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলির পদত্যাগের চার দিন পর গতকাল রাত পৌনে ৯টায় প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওডেলের কাছে নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সুশীলা কার্কি। 

জানা যায়, জেন-জির প্রথম পছন্দ সুশীলা কার্কির নামে সমর্থন রয়েছে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহেরও। যদিও এরই মধ্যে আরও একটি নাম সামনে আসে। নেপালের বিদ্যুৎ বোর্ডের প্রাক্তন প্রধান কুল মান ঘিসিং। জামশেদপুরের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক তিনি। নেপালে ভয়ংকর লোডশেডিং সমস্যা ঘোচানোর সুবাদেই তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। কিন্তু ২০২৫ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র চার মাস আগে, ‘ম্যানেজিং ডিরেক্টর’ পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয় কেপি ওলি সরকার। যা নিয়ে দেশের নানা জায়গায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। এহেন কুল মান ঘিসিং নাকি দুর্নীতির সঙ্গে আপোসহীন সুশীলা কার্কি কাকে বেছে নেবেÑ এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় সুশীলা কার্কিই হচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান। 

অন্যদিকে, নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু, ললিতপুর এবং ভক্তপুরে কারফিউ কিছুটা শিথিল করেছে সেনা। সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত জরুরি কাজের জন্য বাইরে বেরোতে পারবেন সাধারণ মানুষ। বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্তও এই ছাড় দেওয়া হবে। সেনাবাহিনীর তরফে এই ঘোষণার পরেই গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নেপালের দোকান-বাজারগুলোতে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে বলেন্দ্র লিখেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমি দেশের প্রধান হিসেবে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে সমর্থন করছি।’ একই সঙ্গে তিনি দেশের ভাবী নেতাদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন। বলেন্দ্র লেখেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নতুন নির্বাচন করাবে। ওই সরকারই নতুন করে দেশের জনগণের মতামত নেবে।’ প্রসঙ্গত, নেপালে র‌্যাপার এবং সুরকার হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন বলেন্দ্র। সেই জনপ্রিয়তায় ভর করেই ২০০২ সালে কাঠমান্ডুর মেয়র নির্বাচনে নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন তিনি। নেপালের ছাত্র-যুব আন্দোলনে শামিল না-হলেও দূর থেকেই তাকে সমর্থন করেছিলেন বলেন্দ্র।

এদিকে নেপালে বিক্ষোভ থেকে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ৫১-তে পৌঁছেছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম খবরহাবের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

দেশটির পুলিশ বাহিনীর মুখপাত্র ডিআইজি বিনোদ ঘিমিরে বলেছেন, নিহতদের মধ্যে কাঠমান্ডু উপত্যকাসহ অন্যান্য জেলার মানুষও রয়েছেন। এ ছাড়া, সহিংসতায় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ভারতীয় নারী ও পুলিশের তিন সদস্যও রয়েছেন।

নেপালে সরকারি মদদে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও কর্মসংস্থানের অভাব নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন চলছিল। তবে ভুয়া খবর ছড়ানোর কারণে সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের ঘোষণা দিলে সেই আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। পরে সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও সহিংসতা রোধ করা যায়নি। অবশেষে মঙ্গলবার পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি।

বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত এক হাজার ৩০০ জন মানুষের আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স। এ ছাড়া, লুটপাট, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কয়েকশ কোটি রুপি। তবে এরপর কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে সেনাবাহিনী।

গতকাল শুক্রবার রাজধানী কাঠমান্ডুতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে। দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে এবং সড়কে কিছু গাড়ি চলতেও দেখা গেছে। সেনা টহল অবশ্য এখনো জারি আছে এবং কিছু সড়কে এখনো প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, তার পরিমাণ কমতে শুরু করেছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!