তিনটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-হাব। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।
হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সরকারের দুদিন পর তারা তিনটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করলেন। হারাম শরিফের কাছাকাছি সেটি ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া নির্দিষ্ট দূরত্বে ৫ লাখ ৫০ ও ৫ লাখ ১০ হাজার টাকায় আগামী বছর পালন করা সম্ভব হবে। সরকারি প্যাকেজে খাবার খরচ ব্যক্তির নিজে বহন করার ঘোষণা থাকলেও বেসরকারি পর্যায়ে খাবার খরচ প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২০২৬ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় নতুন একটি প্যাকেজ করা করা হয়েছে; যেখানে ন্যূনতম খরচ ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী বছরের জন্য উড়োজাহাজ ভাড়া ১২ হাজার ৯৯০ টাকা কমছে। তিনি বলেন, গত বছর বিমান ভাড়া ছিল ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা। এ বছর বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ টাকা।
আগামী বছর হজ পালনের জন্য আগ্রহীদের প্রাথমিক নিবন্ধন শুরু হয় গত ২৭ জুলাই। আগামী ১২ অক্টোবর প্রাথমিক নিবন্ধন শেষ হচ্ছে। সাড়ে ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করা যাবে। আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন।
এ বছর সরকারি মাধ্যমে ‘হজ প্যাকেজ-১ (বিশেষ)’, ‘হজ প্যাকেজ-২’ ও ‘হজ প্যাকেজ-৩’ শিরোনামে মোট তিনটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্যাকেজ-১-এর আওতায় হজযাত্রীদের মক্কায় হারাম শরিফের বহিরাঙ্গন থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ মিটারের মধ্যে এবং মদিনায় মার কাজিয়া বা সেন্ট্রাল এরিয়ায় আবাসন সুবিধা দেওয়া হবে। এ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকা।
আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্যাকেজ মূল্যের পুরো অর্থ আবশ্যিকভাবে জমা দিতে হবে। ৯ নভেম্বর হজ চুক্তি; আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাড়িভাড়া ও পরিবহন চুক্তি করতে হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে হজ ভিসা ইস্যুর কার্যক্রম শুরু হবে।
ধর্ম উপদেষ্টা খালিদ হোসেন বলেন, হজ প্যাকেজ-২ কিছুটা সুলভ। এ প্যাকেজের হজযাত্রীদের মক্কায় হারাম শরিফের বহিরাঙ্গন থেকে ১ দশমিক ২ কিলোমিটার থেকে ১ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে এবং মার কাজিয়া বা সেন্ট্রাল এরিয়ায় আবাসন সুবিধা দেওয়া হবে। এ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮১ টাকা।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হজ প্যাকেজ-৩ একটি সাশ্রয়ী প্যাকেজ। এ প্যাকেজের হজযাত্রীদের আবাসন হবে মক্কায় আজিজিয়া এলাকায় এবং মদিনায় মার কাজিয়া এলাকার বাইরে। এ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা। উপদেষ্টা বলেন, হজ প্যাকেজ-৩ সরকারি মাধ্যমে হজযাত্রীদের জন্য নতুন সংযোজন। এর আগে কখনো সরকারি মাধ্যমের হাজিদের আজিজিয়া এলাকায় আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে সর্বোচ্চ হজযাত্রী প্রেরণকারী তিনটি দেশ ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়ার হজযাত্রীদের অনেক আগ থেকে আজিজিয়া এলাকাতেই রাখা হয়। আগামী বছর হজে সৌদি সরকার স্বাস্থ্যবিমার পরিমাণ বাড়িয়েছে ১৩০ সৌদি রিয়াল বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ হাজার ২৭০ টাকা।