কম খরচে, নিরাপদে মুহূর্তের মধ্যে দেশে থাকা প্রিয়জনের কাছে রেমিট্যান্স পাঠানোই প্রবাসীদের প্রধান চাহিদা। এই চাহিদা পূরণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং রেমিট্যান্স ইকোসিস্টেমের সব পক্ষের সমন্বিত সেবা নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করেন খাত বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের পরিবর্তিত চিত্র ও উদীয়মান সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এমন মন্তব্য করেন এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাদের মতে, প্রেরকদের আরও সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহের হার আরও বাড়বে। তাই, পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মেলাতে দ্রুত নীতিগত উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে এই কর্মশালায়।
এই কর্মশালায় অংশ নেন জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটর (এমটিও) ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম, টেরাপে, এনইসি করপোরেশন, মাস্টারকার্ড, ইন্সট্যান্ট ক্যাশ, ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ কোম্পানি, সিমপায়সা, হোমটাউন, ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড, ইজিরেমিটের কর্মকর্তারাও অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স খাতের বিকাশ, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিকাশের হেড অব রেমিট্যান্স জাহিদুল আহসান। বিকাশের চিফ কর্মাশিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদ বলেন, রেমিট্যান্স প্ল্যাটফর্মকে দ্রুততর, ব্যয় সাশ্রয়ী ও ইন্টারঅপারেবল করতে রেমিট্যান্স ইকোসিস্টেমের সব প্রতিষ্ঠানের সমন্বিতভাবে কাজ করা জরুরি। রেমিট্যান্স পাঠানোর অভিজ্ঞতাকে বদলে দিতে প্রযুক্তিভিত্তিক অবকাঠামোতে এখনই বিনিয়োগ করলে সামগ্রিকভাবেই এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানি ট্রান্সফার অপারেটরের প্রতিনিধিরা বলেন, অ্যাপ-ভিত্তিক রেমিট্যান্স-সেবার কারণে এই খাত আরও বেশি প্রতিযোগিতাপূর্ণ হচ্ছে। বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাহকের অভিজ্ঞতা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই মুহূর্তের মধ্যে রেমিট্যান্স পাঠানোর সেবা সম্প্রসারণে ডেটা-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রবাসীরা ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ, আবাসন নির্মাণ, সন্তানের ভবিষ্যৎসহ নানা কারণে রেমিট্যান্স পাঠান। তারা নিরাপদে টাকা জমানোর সুবিধা চান, আবার তাদের ঋণেরও প্রয়োজন পড়ে। টাকা পাঠানোর নিরাপদ, সহজ ও দ্রুততম প্রযুক্তি পদ্ধতির মাধ্যমে লেনদেন নিশ্চিত করতে হবে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলোর রেমিট্যান্স বিষয়ক প্রতিনিধিরা বলেন, আগে রেমিট্যান্স মানেই ছিল ‘ক্যাশ ওভার দ্য কাউন্টার’। রেমিট্যান্স আসতেও অনেক বেশি সময় লাগত। এখন বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে মুহূর্তের মধ্যে বিকাশের মতো এমএফএসে টাকা পাঠানোর সেবা চালু হয়েছে। তবে এর ব্যাপকতা নিয়ে আরও কাজ করার সুযোগ আছে। ইকোসিস্টেমের সব পক্ষের সমন্বিত পদক্ষেপে রেমিট্যান্স অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ, তাৎক্ষণিক এবং নিরাপদ করতে হবে।