রাজধানীর বাড্ডার নিমতলার মহাদেব আশ্রম ও কালীমন্দিরে দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মালামালসহ ৩০টি গুলি চুরির ঘটনায় ওসিসহ সাতজনকে সাময়িক বরখাস্তের পর নড়েচড়ে বসেছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের কর্তব্য অবহেলার বিষয়টি সামনে এসেছে। তবে এর সঙ্গে কোনো চক্র বা গোষ্ঠী জড়িত কি না, বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি কাজ করছে। যদিও মন্দিরসংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত জমি থেকে চুরি যাওয়া গুলি উদ্ধার হয়। গতকাল বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক সূত্র রূপালী বাংলাদেশকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে অনেকে মনে করছেন, ঘটনাটি নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। পুলিশের ব্যাগ থেকে গুলি চুরির ঘটনা নিরাপত্তার হুমকি বার্তাও দিচ্ছে এবং তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, যা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভেতরে দায়িত্বহীনতার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রমতে, স্থানীয় মহাদেব আশ্রম ও কালীমন্দিরের সংলগ্ন ভবনে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কক্ষ থেকে রাতের অন্ধকারে এ চুরির ঘটনাটি ঘটে। মন্দিরের নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয়তলায় চারজন পুলিশ সদস্য ও তিনজন আনসার সদস্য নিয়মিত রাত কাটাতেন। গত শুক্রবার গভীর রাতে তাদের ব্যবহৃত চারটি ব্যাগ, দুটি মানিব্যাগ ও তিনটি মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যাগগুলোর একটিতে পুলিশের রিজার্ভ শর্টগানের ৩০টি গুলি ছিল। ঘটনার পর সকালের দিকে মন্দিরসংলগ্ন একটি পরিত্যক্ষ জমির কাছে ব্যাগগুলো পাওয়া গেলেও গুলি তখনো অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার না হলের পরবর্তী সমযে তা উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভেতরে দায়িত্বহীনতার প্রশ্ন উঠে এসেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. তারেক মাহমুদ বলেন, এ ধরনের ঘটনা সরাসরি অবহেলার ফল। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করেননি।
এ ঘটনার জেরে বাড্ডা থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলামকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এক এসআই, এক সহকারী এএসআই এবং পাঁচজন কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে জানান, বাড্ডায় মন্দির থেকে পুলিশের গুলি চুরির ঘটনার রহস্য নিয়ে ডিএমপির তদন্ত টিম কাজ করছে। এসব বিষয় সামনে রেখে কোনো চক্র, ষড়যন্ত্র বা কোনো ধরনের ইস্যু তৈরি করতে না পারে, সে জন্য সতর্ক রয়েছে। যদি কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করে সে ক্ষেত্রে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে কাউকে ছাড় দেবে না।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন