ঢাকা বুধবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৫

কোয়ান্টামের নিয়ন্ত্রণ মুঠোয়  এনে নোবেল তিন বিজ্ঞানীর

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৫, ০৩:১৭ এএম

এ বছর পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন বিজ্ঞানী। রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক সার্কিটে ‘ম্যাক্রোস্কোপিক কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং’ এবং ‘এনার্জি কোয়ান্টাইজেশন’-এর যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য এ বছর তাদের এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। এই গবেষণা কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যা ভবিষ্যতে কোয়ান্টাম কম্পিউটারসহ আধুনিক প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোম থেকে এ বছরের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। বিজয়ীরা হলেনÑ জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ ডেভোরেট এবং জন এম মার্টিনিস।  

বিজ্ঞানী জন ক্লার্কের জন্ম ১৯৪২ সালে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজে। ১৯৬৮ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তিনি।

বিজ্ঞানী মিশেল এইচ ডেভোরেটের জন্ম ১৯৫৩ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে। ১৯৮২ সালে প্যারিস-সুদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।

পুরস্কার বিজয়ী তৃতীয় বিজ্ঞানী জন এম. মার্টিনিসের জন্ম ১৯৫৮ সালে। ১৯৮৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।

নোবেলজয়ী এই বিজ্ঞানীরা পাবেন একটি নোবেল মেডেল, একটি সনদপত্র এবং ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর অর্থমূল্য প্রায় ১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। এই অর্থ তিন বিজয়ীর মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে।

এর আগে সোমবার চিকিৎসাশাস্ত্রে বিজয়ীদের নাম ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুরু হয় নোবেল পুরস্কার ২০২৫-এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা। এ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে যুগান্তকারী অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মেরি ই. ব্রুনকো, ফ্রেড র‌্যামসডেল এবং শিমন সাকাগুচি যৌথভাবে পেয়েছেন নোবেল পুরস্কার।

১৯০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পদার্থবিদ্যায় ১১৮ বার নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, বিজয়ী হয়েছেন পাঁচজন নারীসহ ২২৭ জন। গত বছরের পদার্থবিদ্যার পুরস্কারটি পদার্থবিজ্ঞানী জন হপফিল্ড এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানী জিওফ্রে হিন্টনকে দেওয়া হয়। হিন্টনকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অন্যতম গডফাদার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বরাবরের মতো এবারও ঘোষণার আগে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান বা সংক্ষিপ্ত তালিকা সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। পুরো প্রক্রিয়া অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে নোবেল কমিটি। 

প্রতিবছর অক্টোবরের প্রথম সোমবার শুরু হয় নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা। নোবেল প্রাইজ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ৬ অক্টোবর চিকিৎসাশাস্ত্র, ৭ অক্টোবর পদার্থবিদ্যা, ৮ অক্টোবর রসায়ন, ৯ অক্টোবর সাহিত্য, ১০ অক্টোবর সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরস্কার শান্তিতে নোবেল জয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। এ ছাড়া ১৩ অক্টোবর অর্থনীতিতে পুরস্কারজয়ীর নাম প্রকাশের মাধ্যমে শেষ হবে এ বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা। ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।