নড়াইলের লোহাগড়ায় জান্নাতি খানম অন্তু (২২) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে ওই গৃহবধূর স্বামী সাজ্জাদ মোল্যা (৩২) ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন। গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে ওই গৃহবধূর শ^শুরবাড়ি লোহাগড়া উপজেলার চর-শালনগর গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে লোহাগড়া থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগড়া থানা ওসি শরিফুল ইসলাম। নিহত জান্নাতি খানম অন্তু উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের চর-শালগর গ্রামের দাউদ মোল্যার ছেলে সাজ্জাদ মোল্যার স্ত্রী এবং একই ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মিটুল মোল্যার মেয়ে।
নিহতের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার মাস আগে চর-শালনগর গ্রামের সাজ্জাদ মোল্যার সঙ্গে রঘুনাথপুর গ্রামের জান্নাতি খানম অন্তুর বিবাহ হয়। তবে সাজ্জাদের আগে বিবাহ ছিল এবং তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়, যা গোপন করে সাজ্জাদ ও তার পরিবার। পরে গত বৃহস্পতিবার দুর্গাপূজা উপলক্ষে শালনগর ইউনিয়নের শিয়েরবর মধুমতি নদীতে নৌকাবাইচ ও নদী পাড়ে মেলা দেখার জন্য ওই গৃহবধূর শ^শুরবাড়ি চর-শালনগর থেকে বাবার বাড়ি রঘুনাথপুর আসেন। এরপর গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সাজ্জাদ মোল্যা ও তার পরিবার নিহত অন্তুকে তার বাবার বাড়ি থেকে অটোভ্যানযোগে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে বেলা দেড়টার দিকে সাজ্জাদের ছোট ভাই অন্তুর ভাই সাব্বিরকে ফোন দিয়ে জানায়, অন্তু স্ট্রোক করেছে আপনারা লোহাগড়া হাসপাতালে আসেন।
এরপরে অন্তুর বাবা লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে বিকেলের দিকে জামাই সাজ্জাদ মোল্যার বাড়িতে যান, সেখানে গিয়ে একটি ভ্যানের ওপর অন্তুকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দিলে সন্ধ্যার দিকে লোহাগড়া থানা পুলিশের একটি দল মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহত অন্তুর গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সোমবার রাতে লোহাগড়া থানায় নিহতের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, অন্তুকে শ্বাসরোধে হত্যা করে সাজ্জাদ ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় তাদের শাস্তির দাবি জানান তারা। এদিকে ঘটনার পর অভিযুক্ত সাজ্জাদ মোল্যা ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, মরদেহটি ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।