শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ১২:৩১ এএম

দেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্ত

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ১২:৩১ এএম

দেশে চিকেন  অ্যানিমিয়া ভাইরাসের  নতুন ধরন শনাক্ত

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘জেনোটাই আইআইআইবি’ টাইপের চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাস শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক। দীর্ঘদিন ধরে দেশে এ ভাইরাসের উল্লেখযোগ্য প্রাদুর্ভাব না থাকলেও সম্প্রতি নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যা দেশের পোলট্রি খাতের জন্য নতুন এক উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। গতকাল শুক্রবার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেন।

তার তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণাটি সম্পন্ন করেন স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মারজানা আকতার। ‘বাংলাদেশে মুরগির চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের আণবিক অনুসন্ধান ও জিনগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি সম্পন্ন হয়। গবেষণাটির অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।  গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজি থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য জার্নাল মাইক্রোবায়োলজি স্পেকট্রামে প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ড. গোলজার।

অধ্যাপক ড. গোলজার হোসেন বলেন, সম্ভবত ব্রিডার ফ্লকে নিয়মিত ভ্যাকসিনেশন করার ফলে বিগত সময়ে বাংলাদেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের তেমন প্রাদুর্ভাব ছিল না। ২০২৩ সালে নরসিংদী জেলার একটি বাণিজ্যিক ব্রয়লার খামারে হঠাৎ করে এ রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া যায় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাদুর্ভাবের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাই এটি নিয়ে আমরা গভীরভাবে গবেষণা শুরু করি।

গবেষণা সম্পর্কে মারজানা আকতার বলেন, আক্রান্ত মুরগিগুলোর মধ্যে অ্যানিমিয়া, ফ্যাকাসে ঝুঁটি ও নীলচে ডানার মতো ক্লিনিক্যাল উপসর্গ দেখা দেয়। পরীক্ষাগারে সংগৃহীত নমুনার ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং করে জানা যায়, ভাইরাসটি নতুন প্রজাতির, যা আগে কখনো বাংলাদেশে শনাক্ত হয়নি। তিনি আরও বলেন, এই গবেষণার ফলাফল খামারিদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

অধ্যাপক ড. গোলজার এবং মারজানা আকতার বলেন, বিশ্লেষণে দেখা গেছেÑ এই ভাইরাসটির জিনগত গঠন চীনের একটি স্ট্রেইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা পোলট্রি আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভাইরাসটির বিভিন্ন প্রোটিনে, বিশেষ করে ভিপি৩ প্রোটিনে নতুন কিছু মিউটেশন শনাক্ত হয়েছে, যা রোগের তীব্রতা ও ইমিউনোসাপ্রেশন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে গবেষকরা ধারণা করছেন।

অধ্যাপক ড. গোলজার বলেন, আমাদের দেশে সারকুলেটিং চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাস সম্পর্কে তথ্যের ঘাটতি পূরণ ও ভাইরাসটির জিনোমিক বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করাই ছিল এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। কারণ, এই ভাইরাসে মুরগি আক্রান্ত হলে অন্যান্য রোগের প্রতি তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং খামারিদের অর্থনৈতিক ক্ষতি ঘটে। তাই আমরা বাংলাদেশের স্থানীয় ভাইরাস প্রজাতির জিনোম বিশ্লেষণের মাধ্যমে এমন একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তৈরি করতে চেয়েছি, যা ভবিষ্যতে টিকা উন্নয়ন, রোগ নির্ণয়ের নির্ভুলতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে সহায়ক হবে।

গবেষক দল মনে করে, বাংলাদেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের নতুন এই জেনোটাইপের বিস্তার রোধে জাতীয় পর্যায়ে ভাইরোলজিক্যাল মনিটরিং, ব্রিডার ফ্লক ভ্যাকসিন আপডেট এবং খামার পর্যায়ে বায়োসিকিউরিটি জোরদার করা এখন সময়ের দাবি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!