ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫

মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে জুতার মালা পরিয়ে নির্যাতন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৫, ০১:০৩ এএম

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকায় কিশোরীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ৭৬ বছর বয়সি বৃদ্ধ আব্দুল করিমকে গাছের সঙ্গে বেঁধে জুতার মালা পরিয়ে নির্যাতন করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার পাগলা থানাধীন মশাখালী ইউনিয়ের মুখী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আব্দুল করিম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে কিশোরী বাদী হয়ে পাগলা থানায় মামলা দায়ের করেছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে জুতার মালা পরিয়ে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় গফরগাঁওয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ২৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পাঞ্জাবি পরা এক বৃদ্ধের দুই হাত পেছন দিকে নিয়ে গাছের সঙ্গে বাঁধা। কয়েকজন ব্যক্তি তাকে ঘিরে আছেন। একজন একটি জুতার মালা পরিয়ে দেন বৃদ্ধের গলায়। এ সময় বৃদ্ধকে নিশ্চুপ দেখা যায়।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী কিশোরী ও অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা প্রতিবেশী। মেয়েটি এবার একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা ওই কিশোরীকে বাড়িতে একা পেয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। এ সময় মেয়েটি চিৎকার শুরু করে। তখন বাড়িতে এক ভিক্ষুক এসে ঘটনা দেখে চিৎকার শুরু করেন। পরে আশপাশের লোকজন গিয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। আগেও তিনি হাসি-তামাশার অজুহাতে ওই কিশোরীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

কিশোরীর বাবা বলেন, তার মাদ্রাসাপড়–য়া মেয়েকে বাড়িতে একা পেয়ে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম। এ সময় মেয়ের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাকে আটক করেন। তিনি আরও বলেন, পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমকে নিয়ে আসার সময় গলায় জুতার মালা ছিল না।

পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফেরদৌস আলম জানান, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে। আসামি আব্দুল করিমকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ময়মনসিংহ সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘একজন বৃদ্ধকে এভাবে গাছে বেঁধে গলায় জুতার মালা পরানো সামাজিক অবক্ষয় ছাড়া আর কিছু নয়। কেউ যদি অপরাধ করে আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে। মানুষ হিসেবে মানুষকে মূল্যায়ন না করলে সমাজে অবিচার-অনাচার রোধ করা যাবে না।’