বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। সারা বছর কোনো না কোনো কৃষি এলাকায় ফসল ফলানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে এখনো পুরোনো চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করে যাচ্ছেন কৃষকেরা। ফলে উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা খুব কম কিন্তু চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এ জন্য আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিয়মিত গবেষণা করে নিত্যনতুন কৃষিপণ্য ও উন্নত চাষ পদ্ধতি খুঁজে বের করছে।
এই আধুনিক কৃষি চাষের মধ্যে রয়েছে হাইব্রিড বীজ ব্যবহার, ড্রিপ সেচ ও জলবায়ুবান্ধব চাষ, প্রিসিশন ফার্মিং, ভার্টিক্যাল ফার্মিং, হাইড্রোপনিক্স ও অ্যাকোয়াপনিক্স পদ্ধতির ব্যবহার। এ পদ্ধতিগুলো ফসলের ফলন বৃদ্ধি, অপচয় কমিয়ে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং কৃষি উৎপাদনে ফলন বৃদ্ধিতে সহায়ক। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন জয়পুরহাটের কৃষি উদ্যোক্তা মামুনুর রশিদ।
আধুনিক কৃষি চাষ পদ্ধতির সুবিধা
আধুনিক কৃষি চাষ পদ্ধতির অনেক ধরনের সুযোগ রয়েছে, যেমন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করে। জ্বালানি ও পানির সাশ্রয় হয়। জমির সঠিক ব্যবহার ও অপচয় হ্রাস। কৃষকদের নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে উৎসাহিত করে। কৃষিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়।
আধুনিক কৃষি পদ্ধতির উদাহরণ - এখন পর্যন্ত অনেক পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে। বিদেশে এখনো অনেক গবেষণা চলছে কৃষিতে আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগের। বাংলাদেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কৃষি নিয়ে এখন গবেষণা চলমান রয়েছে। বাংলাদেশও কৃষি ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে, তা নিচে বর্ণনা করা হলো-
- হাইব্রিড বীজ ও উচ্চ ফলনশীল জাত
- উচ্চ ফলনশীল ও রোগ-প্রতিরোধী হাইব্রিড
- বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন
- বৃদ্ধি করা হয়।
- ড্রিপ সেচ (ফোঁটা ফোঁটা সেচ)
এ পদ্ধতিতে শুধু গাছের শিকড় অঞ্চলে পানি দেওয়া হয়, ফলে পানির অপচয় কমে এবং আগাছা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
প্রিসিশন ফার্মিং
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্দিষ্ট পরিমাণ সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়, যা খরচ কমায় এবং পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস করে।
ভার্টিক্যাল ফার্মিং
খোলাভাবে স্তরে স্তরে চাষ করার এ পদ্ধতিতে কম জমিতে বেশি ফসল উৎপাদন করা যায়, বিশেষ করে শহরের আবাসন ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রে এটি কার্যকর।
হাইড্রোপনিক্স ও অ্যাকোয়াপনিক্স
মাটি ছাড়াই হাইড্রোপনিক্সে পানিতে পুষ্টি উপাদান মিশিয়ে এবং অ্যাকোয়াপনিক্সে মাছ চাষের সঙ্গে সমন্বয় করে (মাছ ও উদ্ভিদের সহাবস্থান) ফসল ফলানো হয়।
ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার
কৃষকদের জন্য ‘কৃষকের জানালা’, ‘কৃষি আবহাওয়ার বাতায়ন’ এবং ‘অ্যাগভাইলসি’ অ্যাপের মাধ্যমে কৃষি তথ্য সেবা প্রদান, সার সুপারিশ ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয়।
সর্জন পদ্ধতি
এটি একটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি, যেখানে বেড ও নালা তৈরি করে ফল ও সবজি চাষ করা হয়, যা জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে।
ট্রেতে চারা উৎপাদন
প্লাস্টিকের ট্রে বা ফ্রেমে বীজ রোপণ করে চারা তৈরি করা হয়, যা দ্রুত এবং একই সময়ে চারা রোপণের জন্য প্রস্তুত হয়।
কৃষি যন্ত্রপাতি ও ডিজিটাল প্রযুক্তি
কৃষি উৎপাদনে আধুনিক যন্ত্রপাতি, যেমন রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া ড্রোন ও সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়।