ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫

হাসপাতালে হাসপাতালে রক্তের জন্য হাহাকার

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ০১:৪১ এএম

প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে কেউ দাঁড়িয়ে আছেন ও নেগেটিভ রক্ত চাই। কেউ আবার পরিচিত স্বজনদের ফোন করে জানতে চাইছেন রক্তের গ্রুপ কী। কেউ বা হাসপাতালে স্বপ্রণোদিত হয়ে আসা রক্তদাতাদের মধ্য থেকে চাহিদা মোতাবেক রক্ত খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রিয় সন্তানকে বাঁচানোর জন্য। গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনার পরপরই উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ, মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে আহতদের ভর্তি করা হয়। যাদের অধিকাংশের জীবন বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন রক্ত। আর সেই রক্তের জন্য দুর্ঘটনার পরপরই হাসপাতালে হাসপাতালে শুরু হয় হাহাকার। 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের বেশির ভাগই দগ্ধ এবং তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, অর্ধশতাধিক আহত ব্যক্তিকে তাদের হাসপাতালে আনা হয়। যার মধ্যে একজন ছিল মৃত। দগ্ধদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী এবং তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সরেজমিনে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালের সামনে দেখা যায় এক হৃদয়বিদারক চিত্র। শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন এবং রক্তের জন্য আকুতি জানাচ্ছেন। একজন স্বেচ্ছাসেবক নাজমুল হুদা বলেন, আমাদের এখানে (উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে) ও নেগেটিভ ব্লাড লাগবে। অন্যান্য গ্রুপের ব্লাড পাওয়া গেছে। ও নেগেটিভ পাওয়া যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ‘ও নেগেটিভ’ রক্তের, যা জোগাড় করতে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে।

বিমানবাহিনীর ‘এফ-৭ বিজেআই’ প্রশিক্ষণ বিমানটি সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই এতে আগুন ধরে যায়। অনেক দূর থেকেও ধোঁয়ার কু-লী দেখা গেছে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ করে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, তাদের কর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে ২০ জনের লাশ উদ্ধার করেছে এবং অর্ধশতাধিক আহত ও দগ্ধকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এ ধরনের আকস্মিক দুর্ঘটনায় প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে বিরল রক্তের গ্রুপগুলোর সংকট প্রায়শই দেখা যায়। রক্তদাতাদের এগিয়ে আসার জন্য জোর আহ্বান জানানো হয়। এদিকে বিভিন্ন হাসপাতালে রক্তদাতাদের পাঠাতে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের জন্য বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর রেকর্ড অফিসে একটি জরুরি সেল খোলা হয়েছে।