পুলিশের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন ও তার স্ত্রী নূরজাহান আক্তার হীরার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে গতকাল বুধবার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক মিনু আক্তার সুমি তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন বলে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম। আবেদনে বলা হয়, বাতেনের বিরুদ্ধে ঘুষসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত চলছে। এ অবস্থায় তিনি দেশত্যাগ করার চেষ্টা করছেন। ফলে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার বিদেশ গমন ঠেকানো আবশ্যক।
অন্যদিকে বাতেনের স্ত্রী হীরার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে স্বামীর অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের কাজে সহায়তা করার অভিযোগের তদন্ত চলছে। তিনিও দেশত্যাগ করার চেষ্টা করছেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বিদেশ গমন আটকানো প্রয়োজন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের এলাকা রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন আব্দুল বাতেন। চব্বিশের অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৩ অগাস্ট তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। ১৭তম বিসিএসের কর্মকর্তা বাতেন রাজশাহী রেঞ্জ, ঢাকা মহানগর পুলিশসহ বিভিন্ন স্থানে দায়িত্বে ছিলেন।
সরকার পরিবর্তনের পর বাতেন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি মামলা করে দুদক। বাতেনের বিরুদ্ধে ২ কোটি ২৯ লাখ ২৪ হাজার ৭৪৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ৭টি ব্যাংক হিসাবে ১৩ কোটি ২২ লাখ ২৭ হাজার ৫১১ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর বাতেনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় ৮৫ লাখ ৪১ হাজার ৮০৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ ছাড়া তার চারটি ব্যাংক হিসাবে ৮ কোটি ৭৪ লাখ ৩২ হাজার ৭০২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি বাতেনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। ২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।