ব্যাংকিং নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ডেল্টা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম ফারুক আহমেদ ও তার স্ত্রী ফেরদৌস আরা বেগমসহ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, সাউথইস্ট ব্যাংকের মতিঝিল করপোরেট শাখার কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ঋণের নামে প্রায় ৬৮ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার ৬৩৪ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আসামিরা।
এজাহারে বলা হয়, দি ডেল্টা এক্সেসরিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ ও পরিচালক ফেরদৌস আরা বেগম ব্যাংকিং নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে অসৎ উদ্দেশ্যে ৯টি ভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে ৫৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার বেশি ঋণ উত্তোলন করেন। পরে সুদ ও অন্যান্য চার্জ মিলিয়ে ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের মোট পাওনা দাঁড়ায় ১৫৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বেশি। এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে তারা প্রায় ৯১ কোটি টাকা পরিশোধ করলেও অবশিষ্ট ৬৮ কোটি টাকার বেশি আর শোধ করেননি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, যাদের মধ্যে শাখাপ্রধান, ক্রেডিট ইনচার্জ, ফরেন ট্রেড ইনচার্জসহ মোট ১৩ জন কর্মকর্তা রয়েছেনÑ যারা ক্ষমতার অপব্যবহার ও যোগসাজশ করে ঋণ বিতরণে সহযোগিতা করেছেন। ফলে ঋণের শর্ত যথাযথভাবে পূরণ না হলেও ঋণ মঞ্জুর হয় এবং এর বড় অংশ আত্মসাৎ করা সম্ভব হয়।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ডেল্টা গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফারুক আহমেদকে। তার স্ত্রী ফেরদৌস আরা বেগমকে করা হয়েছে দ্বিতীয় আসামি।
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেনÑ সাউথইস্ট ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ অফিসার ইমাম বোখারী, এভিপি ও ফরেন ট্রেড ইনচার্জ মোজাম্মেল হক, এভিপি ও ফরেন ট্রেড ইনচার্জ মোর্শেদ আলম মামুন, ভাইস প্রেসিডেন্ট আনোয়ারুল কবীর, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল বাতেন চৌধুরী, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আব্দুস সবুর, এসইভিপি নাসিম সিকান্দার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন, ভাইস প্রেসিডেন্ট সরদার হাজ্জাজ, ইভিপি আব্দুর রহমান চৌধুরী, এফএভিপি শিল্পী রাণী দাস, এভিপি শ্যামল কুমার চৌধুরী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী আবু তাহের।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, যা আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আসামিদের নামে ১৮৬০ সালের দ-বিধির ৪০৬, ৪০৯ ও ১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন