ভালোবাসা ও দ্রোহের নায়ক ছিলেন তিনি। অনবদ্য ছিলেন গ্রামীণ প্রতিবাদী যুবকে। আবির্ভূত হয়েছেন কখনো সুজন সখী হয়ে, কখনো বা লাঠিয়াল হয়ে। সারেং বউয়ের ওরে নীল দরিয়ায় ঝড় উঠে এখনো! বলছি ঢাকাই চলচ্চিত্রের ‘মিয়া ভাই’ খ্যাত প্রয়াত অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের কথা। বাংলা চলচ্চিত্রের সাদাকালো যুগের অন্যতম সফল ও জনপ্রিয় নায়ক ছিলেন তিনি। চলচ্চিত্রের মানুষের কাছে ফারুক ‘মিয়া ভাই’ নামেও পরিচিত। চার দশকের বেশি সময় তিনি চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ফারুকবিহীন আজ তৃতীয় জন্মদিন। আজ এই নায়ক অনতিক্রম দূরত্বে। জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানানোর সুযোগ আর নেই। ১৯৪৮ সালের আজকের দিনে জন্ম নেওয়া ফারুক ২০২৩ সালের ১৫ মে মারা যান। দীর্ঘ আট বছর সিঙ্গাপুর চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় জীবন যুদ্ধে হেরে যান তিনি। আজ ফারুক নেই, তবুও আছেন স্মৃতির দেয়াল; অশ্রুর গল্পে।
জন্মদিন উপলক্ষে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে কথা হয় অভিনেতার স্ত্রী ফারহানা পাঠানের সঙ্গে। অশ্রুভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, তাকে কতটা মিস করি তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। জন্মদিন শুধু একটি দিন কিন্তু প্রতিটি ক্ষণে, মুহূর্তে ফারুককে মিস করি। ফারুক পাশে নেই এখনো মানতে খুব কষ্ট হয়। তার স্মৃতি আগলে বাকিটা জীবন কাটিয়ে দেব। আজ পরিবারের সবাই কবর জিয়ারত করব। দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
জন্মদিনে কেক কাটতে পছন্দ করতেন না ফারুক। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি কেক কাটা থেকে বিরত ছিলেন। ফারুক শুধু একজন অভিনেতাই নন, প্রযোজক ও ব্যবসায়ী হিসেবেও তার খ্যাতি রয়েছে। ফারুক ছিলেন পুরোদস্তুর একজন রাজনীতিবিদ। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে থেকেছেন আমৃত্যু। ছাত্রজীবন থেকে দলটির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
চলচ্চিত্রে তার পাঁচ দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ার। এই সময়ে তিনি অভিনয় করেন বহু দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্রে। ফারুকের অভিনীত ‘মিয়া ভাই’ চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে ‘মিয়া ভাই’ হিসেবে খ্যাতি পান। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হন নন্দিত এই চিত্রনায়ক।
এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রজগতে ফারুকের অভিষেক ঘটে। এর পরের গল্প কারোই অজানা নয়। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন। উপহার দিয়েছেন কালজয়ী অনেক সিনেমা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন