হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে আবারও ফিরেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। আর দায়িত্ব শেষ করে নিজ নিজ বাহিনীতে ফিরে যাবেন বিমানবাহিনীর সদস্যরা।
সরকারি সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ঠিক করা হয়েছে এপিবিএন বিমানবন্দরের ভেতরে নিরাপত্তার দায়িত্বে ফিরবে এবং বিমানবাহিনীর সদস্যরা তাদের দায়িত্ব শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজ নিজ বাহিনীতে ফিরে যাবেন।
২০২৪ সালের আগস্টে ‘আনসার বিদ্রোহে’ আনসার সদস্যরা দায়িত্ব ছেড়ে চলে গেলে সেখানে অস্থায়ীভাবে বিমানবাহিনী মোতায়েন করা হয়। একই সময়ে এপিবিএনকেও টার্মিনালের ভেতরে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হয়।
আরও জানা যায়, এপিবিএন অভিযোগ তোলে যে, তাদের এয়ার সাইডে থাকা অফিসকক্ষ থেকে মালামাল সরিয়ে দিয়েছে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি (অ্যাভসেক)। এ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও হয়। এদিকে যাত্রী হয়রানি ও ভিডিও গণমাধ্যমে সরবরাহের মতো অভিযোগ পাল্টাপাল্টি উত্থাপিত হতে থাকে। সর্বশেষ বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমোডর আসিফ ইকবালের চিঠিতে এপিবিএন অধিনায়কের শিষ্টাচার ভঙ্গের অভিযোগ বিষয়টিকে আরও জটিল করে তোলে।
সরকারি সূত্রে জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম, প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সচিব এম সাইফুল্লাহ পান্না, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান, বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমোডর আসিফ ইকবালসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘সরকারি সংস্থাগুলো একই লক্ষ্যে কাজ করছে। আমাদের কথায় ও কাজে পেশাদারিত্ব এবং পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখতে হবে।’
আরও জানা যায়, সভায় ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তগুলো বিমানবন্দরের একক কমান্ড, রেগুলেশন এবং নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিতের জন্য এখানে কার্যকর সব সংস্থাই বেবিচকের একক কর্তৃত্বে কাজ করবে এপিবিএন ও অ্যাভসেক তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। যত দ্রুত সম্ভব এপিবিএন বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের ভেতরে কাজ শুরু করবে; আইজিপি ও বেবিচক চেয়ারম্যান অপারেশনাল চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সভা করবেন; বিমানবাহিনীর টাস্কফোর্স তাদের দায়িত্ব শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাতৃ সংস্থায় ফিরে যাবে; সব বিমানবন্দরে প্রতি সপ্তাহে নিরাপত্তা সভা হতে হবে; সুদূরপ্রসারী কাঠামোগত পরিবর্তনে অংশ হিসেবে বেবিচককে অপারেটর ও রেগুলেটরের পৃথক ভূমিকায় পুনর্গঠনের বিষয়ে সুপারিশ জানাতে পারে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়।