ঢাকা সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিতে দুই মাস সময় পেল দুদক

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫, ১১:৫৯ পিএম

শেয়ারবাজার থেকে অর্থ লোপাট, প্রতারণা ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে ক্রিকেটার ও মাগুরা-১ সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান, তার মা শিরিন আক্তারসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে দুই মাসের বেশি সময় পেয়েছে দুদক। 

গতকাল রোববার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন থাকলেও দিতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। এ কারণে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ প্রতিবেদন দাখিলের দিন ২৬ নভেম্বর ধার্য করেছেন। দুদকের আদালত প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য দিয়েছেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেনÑ সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক আবুল খায়ের, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, জাভেদ এ মতিন, জাহেদ কামাল, হুমায়ূন কবির ও তানভীর নিজাম।

বাংলাদেশের সফলতম ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাগুরা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অগাস্টে তিনি যখন কানাডায়, সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর তার আর দেশে ফেরা হয়নি।

অগাস্টেই সাকিবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয় আদাবর থানায়। পরে ‘শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, নিষিদ্ধ জুয়ার ব্যবসা, জুয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, স্বর্ণ চোরাচালানে সম্পৃক্ততা, প্রতারণার মাধ্যমে কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের অর্থ আত্মসাৎ, ক্রিকেট খেলায় দুর্নীতি ও নির্বাচনি হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের’ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক।

গত ১৭ মে দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে শেয়ারবাজারে অর্থ লোপাটের মামলাটি দায়ের করেন। ১৬ জুন আদালত তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘তারা নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টসমূহে অসাধু, অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে ফাটকা ব্যবসার মতো ধারাবাহিক লেনদেন, প্রতারণামূলক সক্রিয় লেনদেন, ফাটকা ও অনুমাননির্ভর লেনদেনের মাধ্যমে বাজারে কারসাজি করত।

‘তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র গঠন করে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারে ধারাবাহিকভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সেই শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করত। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির শিকার হন এবং চক্রটি ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকারও বেশি আত্মসাৎ করে, যা অস্বাভাবিক মূলধন লাভ হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও প্রকৃতপক্ষে ছিল অপরাধলব্ধ অর্থ।’

দুদক বলছে, মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরু শেয়ারবাজার থেকে তোলা অর্থ থেকে ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকা তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানের সহায়তায় বিভিন্ন খাতে স্থানান্তরের মাধ্যমে ‘মানিলন্ডারিং’ করেন। হিরুর নামে থাকা ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকার ‘অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক ও সন্দেহজনক’ লেনদেন হওয়ার কথাও বলা হয়েছে মামলার এজাহারে। সেখানে বলা হয়েছে, হিরুর কারসাজি করা প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এবং সোনালী পেপারস লিমিটেডের শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করেন।